পারা ১

আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১

পারা ২

আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২

পারা ৩

আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২

পারা ৪

আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

পারা ৬

আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১

পারা ৭

আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০

পারা ৮

আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭

পারা ৯

আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০

পারা ১০

আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২

পারা ১১

আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫

পারা ১২

হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

পারা ১৪

আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮

পারা ১৫

বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

পারা ১৭

আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮

পারা ১৮

আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০

পারা ১৯

আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫

পারা ২০

আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫

পারা ২১

আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০

পারা ২২

আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭

পারা ২৩

ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১

পারা ২৪

আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬

পারা ২৫

ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭

পারা ২৬

আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

পারা ২৮

আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২

পারা ২৯

আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

৫৬৪ আয়াত

৬ ) তারপর যার পাল্লা ভারী হবে
فَأَمَّا مَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ ٦
৭ ) সে মনের মতো সুখী জীবন লাভ করবে
فَهُوَ فِى عِيشَةٍۢ رَّاضِيَةٍۢ ٧
৮ ) আর যার পাল্লা হালকা হবে
وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ ٨
৯ ) তার আবাস হবে গভীর খাদ।
فَأُمُّهُۥ هَاوِيَةٌۭ ٩
১০ ) আর তুমি কি জানো সেটি কি?
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا هِيَهْ ١٠
১১ ) (সেটি) জ্বলন্ত আগুন।
نَارٌ حَامِيَةٌۢ ١١
১ ) বেশী বেশী এবং একে অপরের থেকে বেশী দুনিয়ার স্বার্থ লাভ করার মোহ তোমাদের গাফলতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
أَلْهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ ١
২ ) এমনকি (এই চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে) তোমরা কবর পর্যন্ত পৌঁছে যাও।
حَتَّىٰ زُرْتُمُ ٱلْمَقَابِرَ ٢
৩ ) কখ্খনো না, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।
كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ ٣
৪ ) আবার (শুনে নাও) কখ্খনো না শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।
ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ ٤
৩.
এখান থেকে কেয়ামতের দ্বিতীয় পর্যায় আলোচনা শুরু হয়েছে। লোকেরা পুনর্বার জীবিত হয়ে আল্লাহর আদালতে হাযির হবার পর থেকে এই পর্যায়টি শুরু।
.
.
৪.
মূলে মাওয়াযীন (مَوَازِيۡن) ব্যবহার করা হয়েছে। এ শব্দটি মাওযূন (مَوْزُوْنَ ) এর বহুবচন হতে পারে। আবার মীযান (مِيْزَانَ) এরও বহুবচন হতে পারে। যদি এটি মাওযুনের বহুবচন হয় তাহলে “মাওয়াযীন” অর্থ হবে এমন ধরনের কর্মকাণ্ড, আল্লাহর দৃষ্টিতে যার কোন ওজন আছে এবং যা তাঁর কাছে কোন ধরনের মর্যাদা লাভের যোগ্যতা রাখে। আর যদি একে মীযানের বহুবচন গণ্য করা হয় তাহলে মাওয়াযীন অর্থ হবে দাঁড়িপাল্লার পাল্লা। প্রথম অবস্থায় মাওয়াযীনের ভারী বা হালকা হবার মানে হবে অসৎকর্মের মোকাবিলায় সৎকর্মের ভারী বা হালকা হওয়া। কারণ আল্লাহর দৃষ্টিতে কেবলমাত্র সৎকাজই ভারী ও মূল্যবান। দ্বিতীয় অবস্থায় মাওয়াযীনের ভারী হবার মানে হয় মহান আল্লাহর আদালতে নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার তুলনায় বেশী ভারী হওয়া। আর এর হালকা হবার মানে হয় নেকীর পাল্লা পাপের পাল্লার তুলনায় হালকা হওয়া। এছাড়া আরবী ভাষায় মীযান শব্দ ওজন অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আর এই অর্থের দৃষ্টিতে ওজনের ভারী ও হালকা হবার মানে হয় নেকীর ওজন ভারী বা হালকা হওয়া। যাহোক মাওয়াযীন শব্দটি মাওযূন, মীযান বা ওজন যে কোন অর্থেই ব্যবহার করা হোক না কেন সব অবস্থায় প্রতিপাদ্য একই থাকে এবং সেটি হচ্ছেঃ মানুষ আমলের যে পুঁজি নিয়ে আল্লাহর আদালতে আসবে তা ভারী না হালকা অথবা মানুষের নেকী তার পাপের চেয়ে ওজনে বেশী না কম এরই ভিত্তিতে সেখানে ফায়সালা অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়টি কুরআনের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখিত হয়েছে। সেগুলো সব সামনে রাখলে এর অর্থ পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব হবে। সূরা আ’রাফে বলা হয়েছেঃ “আর ওজন হবে সেদিন সত্য। তারপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।” (৮-৯ আয়াত) সূরা কাহাফে বলা হয়েছেঃ “হে নবী! এই লোকদেরকে বলে দাও, আমি কি তোমাদের জানাবো নিজেদের আমলের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী ব্যর্থ কারা? তারাই ব্যর্থ যাদের দুনিয়ার জীবনে সমস্ত কর্মকাণ্ড সত্য সঠিক পথ থেকে বিচ্যূত থেকেছে এবং যারা মনে করতে থেকেছে, তারা সবকিছু ঠিক করে যাচ্ছে। এই লোকেরাই তাদের রবের আয়াত মানতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে হাযির হওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। তাই তাদের সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে গেছে। কিয়ামতের দিন আমি তাদের কোন ওজন দেবো না।” (১০৪-১০৫ আয়াত) সূরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছেঃ “কিয়ামতের দিন আমি যথাযথ ওজন করার দাঁড়িপাল্লা রেখে দেবো। তারপর কারো ওপর অণু পরিমাণও জুলুম হবে না। যার সরিষার দানার পরিমাণও কোন কাজ থাকবে তাও আমি সামনে আনবো এবং হিসেব করার জন্য আমি যথেষ্ট।” (৪৭ আয়াত) এই আয়াতগুলো থেকে জানা যায়, কুফরী করা এবং সত্যকে অস্বীকার করা বৃহত্তম অসৎকাজের অন্তর্ভুক্ত। গুনাহের পাল্লা তাতে অনিবার্যভাবে ভারী হয়ে যায়। আর কাফেরের এমন কোন নেকী হবে না নেকীর পাল্লায় যার কোন ওজন ধরা পড়ে এবং তার ফলে পাল্লা ঝুঁকে পড়তে পারে। তবে মু’মিনের পাল্লায় ঈমানের ওজনও হবে এবং এই সঙ্গে সে দুনিয়ায় যেসব নেকী করেছে সেগুলোর ওজনও হবে। অন্যদিকে তার সমস্ত গোনাহ গোনাহর পাল্লায় রেখে দেয়া হবে। তারপর নেকীর পাল্লা ঝুঁকে আছে না গোনাহর পাল্লা ঝুঁকে আছে, তা দেখা হবে।
৫.
মূল শব্দ হচ্ছে (اُمُّهٗ هَاوِيَةٌؕ‏ ) “তার মা হবে হাবিয়া।” হাবিয়া (اويَةٌؕ ‏) শব্দটি এসেছে হাওয়া (هَاوىْ) থেকে। এর অর্থ হচ্ছে উঁচু জায়গা থেকে নীচুতে পড়ে যাওয়া। আর যে গভীর গর্তে কোন জিনিস পড়ে যায় তাকে হাবিয়া বলে। জাহান্নামকে হাবিয়া বলার কারণ হচ্ছে এই যে, জাহান্নাম হবে অত্যন্ত গভীর এবং জাহান্নামবাসীদেরকে তার মধ্যে ওপর থেকে নিক্ষেপ করা হবে। আর তার মা হবে জাহান্নাম একথা বলার অর্থ হচ্ছে এই যে, মায়ের কোল যেমন শিশুর অবস্থান হয় তেমনি জাহান্নামবাসীদের জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কোন অবস্থান হবে না।
.
৬.
অর্থাৎ সেটি শুধুমাত্র একটি গভীর খাদ হবে না বরং জ্বলন্ত আগুনেও পরিপূর্ণ হবে।
১.
মূলে বলা হয়েছে (اَلۡهٰٮكُمُ التَّكَاثُرُۙ) এখানে মাত্র দু’টি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এই দু’টি শব্দের মধ্যে এত বেশী ব্যাপকতা রয়েছে যা মাত্র একটি বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

‘আলহাকুম’ (اَلۡهٰٮكُمْ) শব্দটির মূলে রয়েছে লাহউন। (لهو) এর আসল অর্থ গাফলতি। কিন্তু যেসব কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আকর্ষণ এত বেশী বেড়ে যায় যে সে তার মধ্যে মগ্ন হয়ে অন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থেকে গাফেল হয়ে পড়ে সেই ধরনের প্রত্যেকটি কাজের জন্য আরবী ভাষায় এ শব্দটি বলা হয়ে থাকে। আলহাকুম শব্দটিকে যখন এর মূল অর্থে বলা হবে তখন এর অর্থ হবে কোন ‘লাহওয়া’ তোমাকে তার মধ্যে এমনভাবে মশগুল করে রেখেছে যে, তার চাইতে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ কোন জিনিসের প্রতি আর তোমার আকর্ষণ ও আগ্রহ থাকেনি। তার মোহ তোমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তারই চিন্তায় তুমি নিমগ্ন। আর এই মোহ ও নিমগ্নতা তোমাকে একেবারে গাফেল করে দিয়েছে।

তাকাসুর (تَكَاثُرُۙ) এর মূল কাসরাত (كَثرَتْ)। এর তিনটি অর্থ হয়। এক, মানুষের বেশী বেশী প্রাচুর্য লাভ করার চেষ্টা করা। দুই, প্রাচুর্য লাভ করার জন্য মানুষের পরস্পরের অগ্রবর্তী হওয়ার চেষ্টা করা। তিন, লোকদের অন্যের তুলনায় বেশী প্রাচুর্য লাভ করার কথা নিয়ে পরস্পরের মোকাবেলায় বড়াই করে বেড়ানো।

কাজেই “আলহাকুমুত তাকাসুরের” অর্থ দাঁড়ায় তাকাসুর বা প্রাচুর্য তোমাদেরকে তার নিজের মধ্যে এমনভাবে মশগুল করে নিয়েছে, যার ফলে তার প্রতি মোহাচ্ছন্নতা তোমাদের তার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থেকে গাফেল করে দিয়েছে। ‘তাকাসুরের মধ্যে কোন জিনিসের প্রাচুর্য রয়েছে, ‘আলহাকুম’---এ কোন্ জিনিস থেকে গাফেল হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং আলহাকুম---এ কাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে---এ বাক্যে সে কথা সুস্পষ্ট করে বলা হয়নি। অর্থের এই অস্পষ্টতার কারণে এই শব্দগুলো ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহারের দুয়ার খুলে গেছে। এক্ষেত্রে ‘তাকাসুর’ বা প্রাচুর্যের অর্থ সীমাবদ্ধ হয়ে থাকেনি। বরং দুনিয়ার সমস্ত সুবিধা ও লাভ, বিলাস দ্রব্য, ভোগের সামগ্রী, শক্তি ও কর্তৃত্বের উপকরণ বেশী বেশী অর্জন করার প্রচেষ্টা চালানো, এগুলো অর্জন করার জন্য একে অন্যের থেকে অগ্রবর্তী হবার চেষ্টা করা এবং এগুলোর প্রাচুর্যের কারণে পরস্পরের মোকাবেলায় বড়াই করা এর অর্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে ‘আলহাকুম’---এ যাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে তারাও সীমাবদ্ধ হয়ে থাকেনি। বরং প্রত্যেক যুগের লোকেরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও সামগ্রিকভাবে এর সম্বোধনের আওতাভুক্ত হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায়, বেশী বেশী বৈষয়িক স্বার্থ অর্জন করা, তার মধ্যে একে অন্যের অগ্রবর্তী হওয়া এবং অন্যের মোকাবেলায় তা নিয়ে গর্ব করার মোহ যেমন ব্যক্তিকে আচ্ছন্ন করে তেমনি আচ্ছন্ন করে গোত্র ও জাতিকেও। অনুরূপভাবে ‘আলহাকুমুত তাকাসুর’---এ যেহেতু একথা সুস্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, প্রাচুর্য লোকদেরকে নিজের মধ্যে নিমগ্ন করে কোন জিনিস থেকে গাফেল করে দিয়েছে, তাই এর অর্থের মধ্যেও ব্যাপকতা সৃষ্টি হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, এই প্রাচুর্যের মোহ লোকদেরকে এর চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি জিনিস থেকে গাফেল করে দিয়েছে। তারা আল্লাহ থেকে গাফেল হয়ে গেছে। আখেরাত থেকে গাফেল হয়ে গেছে। নৈতিকতার সীমা ও নৈতিক দায়িত্ব থেকে গাফেল হয়ে গেছে। অধিকারীর অধিকার এবং তা আদায় করার ব্যাপারে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে গাফেল হয়ে গেছে। তারা নিজেদের জীবন যাপনের মান উন্নয়নের চিন্তায় ব্যাকুল। মানবতার মান কত নেমে যাচ্ছে সে চিন্তা তাদেরকে একটুও ব্যতিব্যস্ত করে না। তাদের চাই বেশী বেশী অর্থ। কোন্ পথে এ অর্থ অর্জিত হচ্ছে তার কোন পরোয়াই তাদের নেই। তারা বিলাস দ্রব্য ও ভোগের সামগ্রী বেশী বেশী চায়। এই প্রবৃত্তি পূজায় লিপ্ত হয়ে তারা এহেন আচরণের পরিণাম থেকে সম্পূর্ণ গাফেল হয়ে গেছে। তারা বেশী বেশী শক্তি, সেনাবাহিনী ও অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহের চিন্তায় মশগুল। এ প্রশ্নে তারা একে অপরকে ডিঙ্গিয়ে যাবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এ চিন্তা করছে না যে, এগুলো আল্লাহর দুনিয়াকে জুলুমে পরিপূর্ণ করার এবং মানবতাকে ধ্বংস ও বরবাদ করার সরঞ্জাম মাত্র। মোটকথা, এভাবে অসংখ্য ধরনের ‘তাকাসুর’ ব্যক্তি ও জাতিদেরকে তার মধ্যে এমনভাবে মশগুল করে রেখেছে যে, দুনিয়া এবং বৈষয়িক স্বার্থ ও ভোগের চাইতে বড় কোন জিনিসের কথা তারা মুহূর্তকালের জন্য চিন্তা করে না।

২.
অর্থাৎ সারাটা জীবন তোমরা এই প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছো। মরার এক মুহূর্ত আগেও এ চিন্তা থেকে তোমাদের রেহাই নেই।
৩.
অর্থাৎ তোমরা ভুল ধারণার শিকার হয়েছো। বৈষয়িক সম্পদের এ প্রাচুর্য এবং এর মধ্যে পরস্পর থেকে অগ্রবর্তী হয়ে যাওয়াকেই তোমরা উন্নতি ও সাফল্য মনে করে নিয়েছো। অথচ এটা মোটেই উন্নতি ও সাফল্য নয়। শীঘ্রই তোমরা এর অশুভ পরিণতি জানতে পারবে। সারাটা জীবন যে ভুলের মধ্যে তোমরা লিপ্ত ছিলে সেটা যে কত বড় ভুল ছিল তা তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে। শীঘ্রই অর্থ আখেরাতও হতে পারে। কারণ আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সমগ্রকাল ব্যাপী যে সত্তার দৃষ্টি প্রসারিত তাঁর কাছে কয়েক হাজার বা কয়েক লাখ বছরও কালের সামান্য একটি অংশ মাত্র। কিন্তু এর অর্থ মৃত্যুও হতে পারে। কারণ কোন মানুষ থেকে তার অবস্থান বেশী দূরে নয়। আর মানুষ তার সারা জীবন যে সব কাজের মধ্যে কাটিয়ে এসেছে সে মরে যাবার সাথে সাথেই সেগুলো তার জন্য সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য ও অশুভ পরিণামের বাহন ছিল কিনা তা তার কাছে একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।
.
অনুবাদ: