পারা ১

আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১

পারা ২

আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২

পারা ৩

আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২

পারা ৪

আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

পারা ৬

আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১

পারা ৭

আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০

পারা ৮

আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭

পারা ৯

আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০

পারা ১০

আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২

পারা ১১

আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫

পারা ১২

হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

পারা ১৪

আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮

পারা ১৫

বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

পারা ১৭

আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮

পারা ১৮

আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০

পারা ১৯

আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫

পারা ২০

আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫

পারা ২১

আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০

পারা ২২

আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭

পারা ২৩

ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১

পারা ২৪

আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬

পারা ২৫

ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭

পারা ২৬

আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

পারা ২৮

আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২

পারা ২৯

আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

৩৯৯ আয়াত

৭৫ ) তোমাদের রবের কোন কোন দান তোমরা অস্বীকার করবে।
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ٧٥
৭৬ ) ঐ সব জান্নাতবাসী সবুজ গালিচা ও সূক্ষ্ম পরিমার্জিত অনুপম ফরাশের ৫২ ওপর হেলান দিয়ে বসবে।
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ رَفْرَفٍ خُضْرٍۢ وَعَبْقَرِىٍّ حِسَانٍۢ ٧٦
৭৭ ) তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে?
فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ٧٧
৭৮ ) তোমার মহিমান্বিত ও দাতা রবের নাম অত্যন্ত কল্যাণময়।
تَبَـٰرَكَ ٱسْمُ رَبِّكَ ذِى ٱلْجَلَـٰلِ وَٱلْإِكْرَامِ ٧٨
১ ) যখন সেই মহা ঘটনা সংঘটিত হবে
إِذَا وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ ١
২ ) তখন তার সংঘটিত হওয়াকে কেউ-ই মিথ্যা বলতে পারবে না।
لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ ٢
৩ ) তা হবে উলট-পালটকারী মহা প্রলয়।
خَافِضَةٌۭ رَّافِعَةٌ ٣
৪ ) পৃথিবীকে সে সময় অকস্মাত ভীষণভাবে আলোড়িত করা হবে
إِذَا رُجَّتِ ٱلْأَرْضُ رَجًّۭا ٤
৫ ) এবং পাহাড়কে এমন টুকরো টুকরো করে দেয়া হবে
وَبُسَّتِ ٱلْجِبَالُ بَسًّۭا ٥
৬ ) যে, তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।
فَكَانَتْ هَبَآءًۭ مُّنۢبَثًّۭا ٦
.
৫২.
মূল আয়াতে عبقري শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। জাহেলী যুগের আরবীয় কিচ্ছা-কাহিনীতে জিনদের রাজধানীর নাম ছিল عبقر(আবকার)। বাংলা ভাষায় আমরা যাকে পরিস্থান বলে থাকি। এ কারণে আরবের লোকেরা প্রতিটি উৎকৃষ্ট ও দুষ্প্রাপ্য বস্তুকে عبقري (আবকারী) বলতো। অর্থাৎ তা যেন পরীস্থানের বস্তু, দুনিয়ার সাধারণ কোন বস্তু তার সমকক্ষ নয়। এমনকি যে ব্যক্তি অসাধারণ যোগ্যতার অধিকারী যার দ্বারা অদ্ভুত ও বিস্ময়কর কার্যাদি সম্পন্ন হয় তাদের পরিভাষায় তাকেও عبقري (আবকারী) বলতো। ইংরেজী (Genius) শব্দটিও এ অর্থেই বলা হয়ে থাকে এ শব্দটিও আবারGeni শব্দ থেকে গৃহীত যা জিন শব্দের সমার্থক। এ কারণে আরববাসীদেরকে জান্নাতের সাজ-সরঞ্জাম ও আসবাবপত্রের অস্বাভাবিক উৎকৃষ্ট ও সুন্দর হওয়ার ধারণা দেয়ার জন্য عبقري আবকারী শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
.
.
.
.
১.
এ আয়াতাংশ দ্বারা বক্তব্য শুরু করা স্বতসিদ্ধভাবেই প্রমাণ করে যে, সে সময় কাফেরদের মজলিসসমূহে কিয়ামতের বিরুদ্ধে যেসব কাহিনী ফাঁদা হতো এবং গালগপ্প করা হতো, এটা তার জবাব। যখন মক্কার লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ থেকে সবেমাত্র ইসলামের দাওয়াত শুনছে এটা ঠিক সেই সময়ের কথা। এর মধ্যে তাদের কাছে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশী অদ্ভূত, অযৌক্তিক ও অসম্ভব বলে মনে হতো তা হচ্ছে, এক দিন আসমান যমীনের এ ব্যবস্থাপনা ধ্বংস হয়ে যাবে এবং তারপর অন্য একটি জগত সৃষ্টি হবে যেখানে পূর্ববর্তী ও পরবর্তীকালের সমস্ত মৃত মানুষকে পুনরায় জীবিত করা হবে। একথা শুনে তাদের চোখ বিস্ময়ে বিস্ফোরিত হয়ে যেতো। তারা বলতোঃ এটা হওয়া একেবারেই অসম্ভব। তাহলে এ পৃথিবী, পাহাড়, পর্বত, সমুদ্র, চন্দ্র এবং সূর্য কোথায় যাবে। শত শত হাজার হাজার বছরের করবস্থ মৃতরা কিভাবে জীবিত হয়ে উঠবে? মৃত্যুর পরে পুনরায় জীবনলাভ, তারপর সেখানে থাকবে বেহেশতের বাগান ও দোযখের আগুন এসব স্বপ্নচারিতা ও আকাশ কুসুম কল্পনা মাত্র। বুদ্ধিবিবেক ও সুস্থ মস্তিষ্কে আমরা এসব কি করে মেনে নিতে পারি? মক্কার সর্বত্র তখন এই গালগপ্পকে কেন্দ্র করে আসর জমছিলো। এ পটভূমিতে বলা হয়েছে, যখন সে মহা ঘটনা সংঘটিত হবে তখন তা অস্বীকার করার মত কেউ থাকবে না।

এ বাণীর মধ্যে কিয়ামত বুঝাতে وَاقِعَةُ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে এর অর্থ যা অনিবার্য ও অবধারিত। অর্থাৎ তা এমন জিনিস যা অনিবার্যরূপেই সংঘটিত হতে হবে। এর সংঘটিত হওয়াকে আবার وقعة শব্দ দিয়ে বুঝানো হয়েছে। আরবী ভাষায় এ শব্দটি আকস্মিকভাবে কোন বড় দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়া বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ কথাটির দু’টি অর্থ হতে পারে। এক, এর সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা তিরোহিত হওয়া, আগমন থেমে যাওয়া কিংবা এর আগমন ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হবে না। অন্য কথায়, এ বাস্তব ঘটনাকে অবাস্তব ও অস্তিত্বহীন বানিয়ে দেয়ার মত কেউ থাকবে না। দুই, কোন জীবন্ত সত্তাই তখন এ মিথ্যা কথা বলবে না যে, এ ঘটনা আদৌ সংঘটিত হয়নি।

২.
মূল আয়াতে ব্যবহৃত শব্দ হচ্ছে خَافِضَةٌ رَافِعَةٌ “নীচুকারী ও উঁচুকারী” এর একটি অর্থ হতে পারে সেই মহা ঘটনা সব কিছু উলট-পালট করে দেবে। নীচের জিনিস উপরে উঠে যাবে এবং উপরের জিনিস নীচে নেমে যাবে। আরেকটি অর্থ এও হতে পারে যে, তা নীচে পতিত মানুষদেরকে উপরে উঠিয়ে দেবে এবং উপরের মানুষদেরকে নীচে নামিয়ে দেবে। অর্থাৎ তা আসার পর মানুষের মধ্যে মর্যাদা ও অমর্যাদার ফায়সালা হবে সম্পূর্ণ আলাদা ভিত্তি ও দৃষ্টিকোণ থেকে। যারা পৃথিবীতে নিজেদেরকে অতি সম্মানিত বলে দাবী করে বেড়াতো তারা লাঞ্ছিত হবে আর যাদের নীচ ও হীন মনে করা হতো তারা মর্যাদা লাভ করবে।
৩.
অর্থাৎ তা কোন আঞ্চলিক সীমিত মাত্রার ভূমিকম্প হবে না। বরং যুগপৎ সমগ্র পৃথিবীকে গভীর আলোড়নে প্রকম্পিত করবে। পৃথিবী হঠাৎ করে এমন বিরাট ঝাঁকুনি খাবে যার ফলে তা লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে।
.
.
অনুবাদ: