আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
এ আয়াত থেকে দু’টি বিষয় জানা যায়ঃ এক, জিনেরা, নিছক আত্মিক সত্তা নয়, বরং তাদেরও এক ধরনের জড় দেহ আছে। তবে তা যেহেতু নিরেট আগুনের উপাদানে গঠিত তাই তারা মাটির উপাদানে গঠিত মানুষের দৃষ্টিতে ধরা পড়ে না। নীচে বর্ণিত এ আয়াতটি এ বিষয়ের প্রতিই ইঙ্গিত করেঃ
إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ
“শয়তান ও তার দলবল এমন অবস্থান থেকে তোমাদের দেখছে যেখানে তোমরা তাদের দেখতে পাও না” (আল আ’রাফ-২৭)।
অনুরূপভাবে জিনদের দ্রুত গতিসম্পন্ন হওয়া, অতি সহজেই বিভিন্ন আকার-আকৃতি গ্রহণ করা এবং যেখানে মাটির উপাদানে গঠিত বস্তুসমূহ প্রবেশ করতে পারে না, কিংবা প্রবেশ করলেও তা অনুভূত হয় বা দৃষ্টি গোচর হয়, সেখানে তাদের প্রবেশ অনুভূত বা দৃষ্টিগোচর না হওয়া-এসবই এ কারণে সম্ভব ও বোধগম্য যে, প্রকৃতই তারা আগুনের সৃষ্টি।
এ থেকে দ্বিতীয় যে বিষয়টি জানা যায় তা হচ্ছে, জিনরা মানুষ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র সৃষ্টিই শুধু নয়, বরং তাদের সৃষ্টি উপাদানই মানুষ, জীবজন্তু, উদ্ভিদরাজি এবং চেতনা পদার্থসমূহ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যারা জিনদেরকে মানুষেরই একটি শ্রেনী বলে মনে করে এ আয়াত স্পষ্ট ভাষায় তাদের ভ্রান্তি প্রমাণ করছে। তারা এর ব্যাখ্যা করে বলেন, মাটি থেকে মানুষকে এবং আগুন থেকে জিনকে সৃষ্টি করার অর্থ প্রকৃত পক্ষে দুই শ্রেণীর মানুষের মেজাজের পার্থক্য বর্ণনা করা। এক প্রকারের মানুষ নম্র মেজাজের হয়ে থাকেন। সত্যিকার অর্থে তারাই মানুষ। আরেক প্রকারের মানুষের মেজাজ হয় অগ্নিষ্ফুলিঙ্গের মত গরম। তাদের মানুষ না বলে শয়তান বলাটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। তবে এ ধরনের ব্যাখ্যা প্রকৃতপক্ষে কুরআনের তাফসীর নয়, কুরআনের বিকৃতি সাধন করা। উপরে ১৪ নম্বর টীকায় আমরা দেখিয়েছি যে, কুরআন নিজেই মাটি দ্বারা মানুষের সৃষ্টির অর্থ কতটা স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে। বিস্তারিত এসব বিবরণ পড়ার পর কোন বিবেকবান ব্যক্তি কি এর এ অর্থ গ্রহণ করতে পারে যে, এসব কথার উদ্দেশ্য শুধু উত্তম মানুষের নম্র মেজাজ হওয়ার প্রশংসা করা? তার পরেও সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষের মগজে একথা কি করে আসতে পারে যে, মানুষকে পঁচা আঠাল মাটির শুকনো ঢিলা থেকে সৃষ্টি করা এবং জিনদেরকে নিরেট অগ্নি শিখা থেকে সৃষ্টি করার অর্থ একই মানব জাতির দু’টি ভিন্ন ভিন্ন মেজাজের ব্যক্তিদের বা গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র নৈতিক গুণাবলীর পার্থ্যক্য বর্ণনা করা? (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা যারিয়াতের তাফসীর, টীকা-৫৩)।