আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
এ কাহিনীর মাধ্যমে কুরাইশ বংশোদ্ভুত কাফেরদেরকে একথা বুঝাবার চেষ্টা করা হয়েছে যে, সত্যের দাওয়াতের প্রাথমিক স্তরে সত্য ও মিথ্যার শক্তির যে অনুপাত ব্যাহ্যত দেখা যায় তাতে প্রতারিত না হওয়া উচিত। সত্যের সমগ্র ইতিহাসই সাক্ষ্য দেয় যে, সূচনা বিন্দুতে তার সংখ্যা এত কম থাকে যে, শুরুতে সারা দুনিয়ার মোকাবিলায় মাত্র এক ব্যক্তি সত্যের অনুসারী এবং কোন প্রকার সাজ-সরঞ্জাম ছাড়াই সে মিথ্যার বিরুদ্ধে একাকী যুদ্ধ শুরু করে দেয়। এমন এক মিথ্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে দেয় যার পেছনে রয়েছে বড় বড় জাতি ও রাষ্ট্রের বিপুল শক্তি। তারপরও শেষ পর্যন্ত সত্যই বিজয় লাভ করে। এছাড়াও এ কাহিনীতে তাদের একথাও জানানো হয়েছে যে, সত্যের আহবায়কের মোকাবেলায় যেসব কৌশল অবলম্বন করা হয় এবং যেসব পন্থায় তার দাওয়াতকে দাবিয়ে দেবার চেষ্টা করা হয় তা কিভাবে বুমোরাং হয়ে যায়। এ সঙ্গে তাদেরকে একথাও জানানো হয় যে, সত্যের দাওয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের ধ্বংসের শেষ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাদের সংশোধিত হবার ও সঠিক পথ অবলম্বন করার জন্য কত দীর্ঘ সময় দিয়ে থাকেন এবং এরপরও যখন কোন প্রকার সতর্ক বাণী, কোন শিক্ষণীয় ঘটনা এবং কোন উজ্জ্বল নিদর্শন থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে না ও প্রভাবিত হয় না তখন তিনি তাদেরকে কেমন দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দান করেন।
যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান এনেছিল এ কাহিনীর মাধ্যমে তাদেরকে দ্বিবিধ শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এক, নিজেদের সংখ্যাল্পতা ও দুর্বলতা এবং সত্য বিরোধীদের বিপুল সংখ্যা ও শক্তি যেন তাদেরকে হিম্মতহারা না করে এবং আল্লাহর সাহায্য বিলম্বিত হতে দেখে যেন তাদের মনোবল ভেঙ্গে না পড়ে। দুই, ঈমান আনার পর যে দলই ইহুদিদের মত আচরণ করে, তারা অবশ্যি ইহুদিদের মতই আল্লাহর লানতের শিকার হয়।
বনী ইসরাঈলের সামনে তাদের শিক্ষণীয় ইতিহাস পেশ করে তাদেরকে মিথ্যার পূজারী সাজার ক্ষতিকর পরিণাম থেকে সাবধান করা হয়েছে। তাদেরকে এমন এক নবীর প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত দেয়া হয়েছে। যিনি পূর্বের নবীগণের প্রচলিত দ্বীনকে নব রকমের মিশ্রণ মুক্ত করে আবার তার আসল আকৃতিতে পেশ করেছিলেন।
এখানেও একথাটিও মনে রাখতে হবে যে, কুরআন মজীদে হযরত মূসার ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে দুজন ফেরাউনের কথা বলা হয়েছে। একজন ফেরাউনের আমলে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন এবং তার গৃহে প্রতিপালিত হন। আর দ্বিতীয় জনের কাছে তিনি ইসলামের দাওয়াত ও বনী ইসরাঈলের মুক্তির দাবী নিয়ে উপস্থিত হন এবং এ দ্বিতীয় ফেরাউনই অবশেষে জলমগ্ন হয়। বর্তমান যুগের গবেষকদের অধিকাংশের মতে, প্রথম ফেরাউন ছিল দ্বিতীয় রামেসাস। তার শাসনকাল ছিল ১২৯২ থেকে ১২২৫ খৃষ্টপূর্বাব্দে। আর এখানে উল্লেখিত দ্বিতীয় ফেরাউন ছিল “মিনফাতা” বা “মিনফাতাহ।” পিতা দ্বিতীয় রামেসাসের জীবনকালেই সে শাসন কর্তৃত্বে অংশগ্রহণ করে এবং পিতার মৃত্যুর পর পুরোপুরি রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী হয়। এ ধারণা বাহ্যত সন্দেহযুক্ত মনে হচ্ছে। কারণ ইসরাঈলী ইতিহাসের হিসেব অনুযায়ী হযরত মূসা (আ) ইন্তিকাল করেন ১২৭২ খৃস্টপূর্বাব্দে। তবুও যা হোক আমাদের মনে রাখতে হবে, এগুলো নেহাত ঐতিহাসিক ধারণা ও আন্দাজ-অনুমান আর মিসরীয়, ইসরাঈলী ও খৃস্টীয় পঞ্জিকার সাহায্যে একেবারে নির্ভুল সময়কালের হিসেব করা কঠিন।