৯২ ) (সে কিতাবের মতো) এটি একটা কিতাব, যা আমি নাযিল করেছি, বড়ই কল্যাণ ও বরকতপূর্ণ, এর পূর্বে যা এসেছিল তার সত্যতা প্রমাণকারী এবং এর সাহায্যে তুমি জনপদসমূহের এ কেন্দ্র (অর্থাৎ মক্কা) ও তার চারপাশের অধিবাসীদেরকে সতর্ক করবে। যারা আখেরাত বিশ্বাস করে তারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনে এবং নিজেদের নামাযগুলো নিয়মিত যথাযথভাবে হেফাজত করে। ৬১
وَهَـٰذَا كِتَـٰبٌ أَنزَلْنَـٰهُ مُبَارَكٌۭ مُّصَدِّقُ ٱلَّذِى بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ ٱلْقُرَىٰ وَمَنْ حَوْلَهَا ۚ وَٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱلْـَٔاخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۖ وَهُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ ٩٢
৯৩ ) আর সে ব্যক্তির চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ রটায় অথবা বলে আমার কাছে অহী এসেছে অথচ তার ওপর কোন অহী নাযিল করা হয়নি অথবা যে আল্লাহর নাযিল করা জিনিসের মোকাবিলায় বলে, আমিও এমন জিনিস নাযিল করে দেখিয়ে দেবো? হায়! তুমি যদি জালেমদেরকে সে অবস্থায় দেখতে পেতে যখন তারা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকবে এবং ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলতে থাকবে। “নাও, তোমাদের প্রাণ বের করে দাও।” তোমরা আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে যেসব অন্যায় ও অসত্য কথা বলতে এবং তাঁর আয়াতের বিরুদ্ধে যে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে তারই শাস্তি স্বরূপ আজ তোমাদের অবমাননাকর শাস্তি দেয়া হবে।
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا أَوْ قَالَ أُوحِىَ إِلَىَّ وَلَمْ يُوحَ إِلَيْهِ شَىْءٌۭ وَمَن قَالَ سَأُنزِلُ مِثْلَ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ ۗ وَلَوْ تَرَىٰٓ إِذِ ٱلظَّـٰلِمُونَ فِى غَمَرَٰتِ ٱلْمَوْتِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ بَاسِطُوٓا۟ أَيْدِيهِمْ أَخْرِجُوٓا۟ أَنفُسَكُمُ ۖ ٱلْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ ٱلْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ غَيْرَ ٱلْحَقِّ وَكُنتُمْ عَنْ ءَايَـٰتِهِۦ تَسْتَكْبِرُونَ ٩٣
৯৪ ) (আর আল্লাহ বলবেনঃ) “দেখো এবার তোমরা ঠিক তেমনি নিঃসঙ্গ ও একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে গেছো যেমনটি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, যা কিছু তোমাদের দুনিয়ায় দিয়েছিলাম তা সব তোমরা পেছনে রেখে এসেছো এবং এখন তোমাদের সাথে তোমাদের সেসব সুপারিশকারীদেরকেও দেখছি না যাদের সম্পর্কে তোমরা মনে করতে তোমাদের কার্য সম্পাদন করার ব্যাপারে তাদেরও কিছুটা অবদান আছে। তোমাদের মধ্যকার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমরা যেসব ধারণা করতে তা সবই তোমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।”
وَلَقَدْ جِئْتُمُونَا فُرَٰدَىٰ كَمَا خَلَقْنَـٰكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍۢ وَتَرَكْتُم مَّا خَوَّلْنَـٰكُمْ وَرَآءَ ظُهُورِكُمْ ۖ وَمَا نَرَىٰ مَعَكُمْ شُفَعَآءَكُمُ ٱلَّذِينَ زَعَمْتُمْ أَنَّهُمْ فِيكُمْ شُرَكَـٰٓؤُا۟ ۚ لَقَد تَّقَطَّعَ بَيْنَكُمْ وَضَلَّ عَنكُم مَّا كُنتُمْ تَزْعُمُونَ ٩٤
৯৫ ) আল্লাহই শস্যবীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী। ৬২ তিনিই জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন এবং তিনিই বের করেন মৃতকে জীবিত থেকে। ৬৩ এ সমস্ত কাজ তো আল্লাহই করেন, তাহলে তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন্ দিকে ছুটে চলছো?
۞ إِنَّ ٱللَّهَ فَالِقُ ٱلْحَبِّ وَٱلنَّوَىٰ ۖ يُخْرِجُ ٱلْحَىَّ مِنَ ٱلْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ ٱلْمَيِّتِ مِنَ ٱلْحَىِّ ۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ تُؤْفَكُونَ ٩٥
৯৬ ) রাতের আবরণ দীর্ণ করে তিনিই ফোটান উষার আলো। তিনিই রাতকে করেছেন প্রশান্তিকাল। চন্দ্র ও সূর্যের উদয়াস্তের হিসেব তিনিই নির্দিষ্ট করেছেন। এসব কিছুই সেই জবরদস্ত ক্ষমতা ও জ্ঞানের অধিকারীর নির্ধারিত পরিমাপ।
فَالِقُ ٱلْإِصْبَاحِ وَجَعَلَ ٱلَّيْلَ سَكَنًۭا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ حُسْبَانًۭا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ ٩٦
৯৭ ) আর তিনিই তারকাগুলোকে বানিয়েছেন তোমাদের জন্য পৃথিবী ও সমুদ্রের গভীর অন্ধকারে পথের দিশা জানার মাধ্যম। দেখো, আমি নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্য যারা জ্ঞান রাখে। ৬৪
وَهُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلنُّجُومَ لِتَهْتَدُوا۟ بِهَا فِى ظُلُمَـٰتِ ٱلْبَرِّ وَٱلْبَحْرِ ۗ قَدْ فَصَّلْنَا ٱلْـَٔايَـٰتِ لِقَوْمٍۢ يَعْلَمُونَ ٩٧
৯৮ ) আর তিনিই একটি মাত্র প্রাণসত্তা থেকে তোমাদের সকলকে সৃষ্টি করেছেন। ৬৫ তারপর প্রত্যেকের জন্য রয়েছে একটি অবস্থান স্থল এবং তাকে সোপর্দ করার একটি জায়গা। এ নিদর্শনগুলো সুস্পষ্ট করে দিয়েছি তাদের জন্য যারা জ্ঞান বুদ্ধি রাখে। ৬৬
وَهُوَ ٱلَّذِىٓ أَنشَأَكُم مِّن نَّفْسٍۢ وَٰحِدَةٍۢ فَمُسْتَقَرٌّۭ وَمُسْتَوْدَعٌۭ ۗ قَدْ فَصَّلْنَا ٱلْـَٔايَـٰتِ لِقَوْمٍۢ يَفْقَهُونَ ٩٨
৯৯ ) আর তিনিই আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। তারপর তার সাহায্যে সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপাদন করেছেন। এরপর তা থেকে সবুজ শ্যামল ক্ষেত ও বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। তারপর তা থেকে ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা উৎপাদন করেছেন। আর খেজুর গাছের মাথি থেকে খেজুরের কাঁদির পর কাঁদি সৃষ্টি করেছেন, যা বোঝার ভারে নুয়ে পড়ে। আর সজ্জিত করেছেন আংগুর, যয়তুন ও ডালিমের বাগান। এসবের ফলগুলো পরস্পরের সাথে সাদৃশ্যও রাখে আবার প্রত্যেকে পৃথক বৈশিষ্ট্যেরও অধিকারী। এ গাছ যখন ফলবান হয় তখন এর ফল ধরা ও ফল পাকার অবস্থাটি একটু গভীর দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করো এসব জিনিসের মধ্যে ঈমানদারদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
وَهُوَ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءًۭ فَأَخْرَجْنَا بِهِۦ نَبَاتَ كُلِّ شَىْءٍۢ فَأَخْرَجْنَا مِنْهُ خَضِرًۭا نُّخْرِجُ مِنْهُ حَبًّۭا مُّتَرَاكِبًۭا وَمِنَ ٱلنَّخْلِ مِن طَلْعِهَا قِنْوَانٌۭ دَانِيَةٌۭ وَجَنَّـٰتٍۢ مِّنْ أَعْنَابٍۢ وَٱلزَّيْتُونَ وَٱلرُّمَّانَ مُشْتَبِهًۭا وَغَيْرَ مُتَشَـٰبِهٍ ۗ ٱنظُرُوٓا۟ إِلَىٰ ثَمَرِهِۦٓ إِذَآ أَثْمَرَ وَيَنْعِهِۦٓ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكُمْ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّقَوْمٍۢ يُؤْمِنُونَ ٩٩
১০০ ) এসব সত্ত্বেও লোকেরা জ্বিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করলো, ৬৭ অথচ তিনি তাদের সৃষ্টিকর্তা। আর তারা না জেনে বুঝে তাঁর জন্য পুত্র ও কন্যা তৈরী করে ফেললো, ৬৮ অথচ এরা যেসব কথা বলে তা থেকে তিনি পবিত্র এবং তার উর্ধ্বে।
وَجَعَلُوا۟ لِلَّهِ شُرَكَآءَ ٱلْجِنَّ وَخَلَقَهُمْ ۖ وَخَرَقُوا۟ لَهُۥ بَنِينَ وَبَنَـٰتٍۭ بِغَيْرِ عِلْمٍۢ ۚ سُبْحَـٰنَهُۥ وَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا يَصِفُونَ ١٠٠
১০১ ) তিনি তো আসমান ও যমীনের উদ্ভাবক। তাঁর কোন সন্তান হতে পারে কেমন করে, যখন তাঁর কোন জীবন সঙ্গিনী নেই? তিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সবকিছুর জ্ঞান রাখেন।
بَدِيعُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُۥ وَلَدٌۭ وَلَمْ تَكُن لَّهُۥ صَـٰحِبَةٌۭ ۖ وَخَلَقَ كُلَّ شَىْءٍۢ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ١٠١