আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
قَالَ فَالْحَقُّ وَالْحَقَّ أَقُولُ - لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنْكَ وَمِمَّنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ
“কাজেই এ হচ্ছে সত্য এবং আমি সত্যই বলি যে, আমি জাহান্নাম ভরে দেবো তোমার এবং মানুষদের মধ্য থেকে যারা তোমার অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা।”
أَجْمَعِينَ শব্দটি এখানে এ অর্থে ব্যবহার করা হয়নি যে, সকল জ্বীন ও সমস্ত মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, শয়তানরা এবং শয়তানদের অনুসারী মানুষরা সবাই এক সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
বিছানা থেকে পিঠ আলাদা রাখার মানে এ নয় যে, তারা রাতে শয়ন করে না। বরং এর অর্থ হচ্ছে, তারা রাতের একটি অংশ কাটায় আল্লাহর ইবাদাতের মধ্য দিয়ে।
قُال اللَّهُ تعالى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِىَ الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ
“আল্লাহ বলেন, আমার সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য আমি এমনসব জিনিস সংগ্রহ করে রেখেছি যা কখনো কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষ কোনদিন তা কল্পনাও করতে পারে না।”
এ বিষয়বস্তু সামান্য শাব্দিক হেরফের করে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.), হযরত মুগীরাহ ইবনে শু’বা (রা.) এবং হযরত সাহল ইবনে সা’আদ সায়েদী নবী করীম ﷺ থেকে রেওয়াযাত করেছেন এবং মুসলিম, আহমাদ, ইবনে জারীর ও তিরমিযী সহীহ সনদ সহকারে তা উদ্ধৃত করেছেন।
এদিক দিয়ে বিচার করলে এ বিপদ নিছক বিপদ নয় বরং আল্লাহর সতর্ক সংকেত। মানুষকে সত্য জানাবার এবং তার বিভ্রান্তি দূর করার জন্য একে পাঠানো হয়। এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে যদি মানুষ দুনিয়াতেই নিজের বিশ্বাস ও কর্ম শুধরে নেয় তাহলে আখেরাতে আল্লাহর বড় শাস্তির মুখোমুখি হবার তার কোন প্রয়োজনই দেখা দেবে না।
একঃ যে নিদর্শনাবলী পৃথিবী থেকে নিয়ে আকাশ পর্যন্ত প্রত্যেকটি জিনিসের এবং বিশ্ব-জাহানের সামগ্রিক ব্যবস্থার মধ্যে পাওয়া যায়।
দুইঃ যে নিদর্শনগুলো মানুষের নিজের জন্ম এবং তার গঠনাকৃতি ও অস্তিত্বের মধ্যে পাওয়া যায়।
তিনঃ যে নিদর্শনাবলী মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অনুভূতিতে, তার অচেতন ও অবচেতন মনে এবং তার নৈতিক চিন্তাধারায় পাওয়া যায়।
চারঃ যে নিদর্শনাবলী পাওয়া যায় মানুষের ইতিহাসের ধারাবাহিক অভিজ্ঞতায়।
পাঁচঃ যে নিদর্শনাবলী মানুষের প্রতি অবতীর্ণ পার্থিব আপদ-বিপদ ও আসমানী বালা-মুসিবতের মধ্যে পাওয়া যায়।
ছয়ঃ আর এসবের পরে আল্লাহ তাঁর নবীগণের মাধ্যমে যেসব আয়াত পাঠান ওপরে বর্ণিত নিদর্শনগুলো যেসব সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছে এ আয়াতগুলোর সাহায্যে যুক্তি-সঙ্গত পদ্ধতিতে মানুষকে সেসব সত্যের জ্ঞান দান করাই কাম্য।
এ সমস্ত নিদর্শন পূর্ণ একাত্মতা সহকারে সোচ্চার কণ্ঠে মানুষকে একথা বলে যাচ্ছে যে, তুমি আল্লাহ নও এবং বহু সংখ্যক আল্লাহর বান্দা নও বরং তোমার আল্লাহ মাত্র একজন। তার ইবাদাত ও আনুগত্য ছাড়া তোমার দ্বিতীয় কোন পথ নেই। তোমাকে এ জগতে স্বাধীন, স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বহীন করে পাঠানো হয়নি। বরং নিজের জীবনের সমস্ত কাজ শেষ করার পর তোমাকে তোমার আল্লাহর সামনে হাজির হয়ে জবাবদিহি করতে এবং নিজের কাজের প্রেক্ষিতে পুরস্কার ও শাস্তি পেতে হবে। কাজেই তোমার আল্লাহ তোমাকে সঠিক পথ দেখাবার জন্য নিজের নবী ও কিতাবসমূহের মাধ্যমে যে পথ-নির্দেশনা পাঠিয়েছেন তা মেনে চলো এবং স্বেচ্ছাচারী নীতি অবলম্বন করা থেকে বিরত থাকো। এখন একথা সুস্পষ্ট, যে মানুষকে এত বিভিন্নভাবে বুঝানো হয়েছে, যাকে উপদেশ দেবার ও পরিচালনা করার জন্য এমন অগণিত নিদর্শনাবলীর সমাবেশ ঘটানো হয়েছে এবং যাকে দেখার জন্য চোখ, শোনার জন্য কান এবং চিন্তা করার জন্য অন্তরের নিয়ামত দান করা হয়েছে, সে যদি সমস্ত নিদর্শনাবলীর দিক থেকে চোখ বন্ধ করে নেয়, যারা বুঝাচ্ছে তাদের কথা ও উপদেশের জন্যও নিজের কানের ছিদ্র বন্ধ করে নেয় এবং নিজের মন-মস্তিষ্ক দিয়েও উল্টা দর্শনই তৈরি করার কাজে আত্ননিয়োগ করে, তাহলে তার চেয়ে বড় জালেম আর কেউ হতে পারে না। এরপর সে দুনিয়ায় নিজের পরীক্ষার মেয়াদ খতম করার পর যখন তার আল্লাহর সামনে গিয়ে দাঁড়াবে তখন বিদ্রোহের পূর্ণ শাস্তি লাভ করার যোগ্যই হবে।