পারা ১

আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১

পারা ২

আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২

পারা ৩

আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২

পারা ৪

আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

পারা ৬

আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১

পারা ৭

আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০

পারা ৮

আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭

পারা ৯

আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০

পারা ১০

আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২

পারা ১১

আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫

পারা ১২

হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

পারা ১৪

আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮

পারা ১৫

বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

পারা ১৭

আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮

পারা ১৮

আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০

পারা ১৯

আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫

পারা ২০

আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫

পারা ২১

আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০

পারা ২২

আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭

পারা ২৩

ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১

পারা ২৪

আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬

পারা ২৫

ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭

পারা ২৬

আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

পারা ২৮

আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২

পারা ২৯

আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

২৬৯ আয়াত

৮৫ ) সে (প্রথমে পশ্চিমে এক অভিযানের) সাজ-সরঞ্জাম করলো।
فَأَتْبَعَ سَبَبًا ٨٥
৮৬ ) এমন কি যখন সে সূর্যাস্তের সীমানায় পৌঁছে গেলো ৬৩ তখন সূর্যকে ডুবতে দেখলো একটি কালো জলাশয়ে ৬৪ এবং সেখানে সে একটি জাতির দেখা পেলো। আমি বললাম, “হে যুলকারনাইন! তোমার এ শক্তি আছে, তুমি এদেরকে কষ্ট দিতে পারো অথবা এদের সাথে সদাচার করতে পারো।” ৬৫
حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ ٱلشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِى عَيْنٍ حَمِئَةٍۢ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًۭا ۗ قُلْنَا يَـٰذَا ٱلْقَرْنَيْنِ إِمَّآ أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّآ أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًۭا ٨٦
৮৭ ) সে বললো, “তাদের মধ্য থেকে যে জুলুম করবে আমরা তাকে শাস্তি দেবো তারপর তাকে তার রবের দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে এবং তিনি তাকে অধিক কঠিন শাস্তি দেবেন।
قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُۥ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَىٰ رَبِّهِۦ فَيُعَذِّبُهُۥ عَذَابًۭا نُّكْرًۭا ٨٧
৮৮ ) আর তাদের মধ্য থেকে যে ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তার জন্য আছে ভাল প্রতিদান এবং আমরা তাকে সহজ বিধান দেবো।”
وَأَمَّا مَنْ ءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحًۭا فَلَهُۥ جَزَآءً ٱلْحُسْنَىٰ ۖ وَسَنَقُولُ لَهُۥ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًۭا ٨٨
৮৯ ) তারপর সে (আর একটি অভিযানের) প্রস্তুতি নিল।
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا ٨٩
৯০ ) এমন কি সে সূর্যোদয়ের সীমানায় গিয়ে পৌঁছলো। সেখানে সে দেখলো, সূর্য এমন এক জাতির ওপর উদিত হচ্ছে যার জন্য রোদ থেকে বাঁচার কোন ব্যবস্থা আমি করিনি। ৬৬
حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ ٱلشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍۢ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًۭا ٩٠
৯১ ) এ ছিল তাদের অবস্থা এবং যুলকারনাইনের কাছে যা ছিল তা আমি জানতাম।
كَذَٰلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًۭا ٩١
৯২ ) আবার সে (আর একটি অভিযানের) আয়োজন করলো।
ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا ٩٢
৯৩ ) এমনকি যখন দু’পাহাড়ের মধ্যখানে পৌঁছলো ৬৭ তখন সেখানে এক জাতির সাক্ষাত পেলো। যারা খুব কমই কোন কথা বুঝতে পারতো। ৬৮
حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ بَيْنَ ٱلسَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًۭا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًۭا ٩٣
৯৪ ) তারা বললো, “হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ ৬৯ এ দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। আমরা কি তোমাকে এ কাজের জন্য কোন কর দেবো, তুমি আমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবে?”
قَالُوا۟ يَـٰذَا ٱلْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِى ٱلْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَىٰٓ أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّۭا ٩٤
.
৬৩.
ইবনে কাসীরের মতে সূর্যাস্তের সীমানা বলতে বুঝাচ্ছে (আরবী---------------) অর্থাৎ তিনি পশ্চিম দিকে দেশের পর দেশ জয় করতে করতে স্থলভাগের শেষ সীমানায় পৌঁছে যান, এরপর ছিল সমুদ্র। এটিই হচ্ছে সূর্যাস্তের সীমানার অর্থ। সূর্য যেখানে অস্ত যায় সেই জায়গার কথা এখানে বলা হয়নি।
৬৪.
অর্থাৎ সেখানে সূর্যাস্তের সময় মনে হতো যেন সূর্য সমুদ্রের কালো বর্ণের পংকিল পানির মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। যুলকারনাইন বলতে যদি সত্যিই খুরসকেই বুঝানো হয়ে থাকে তাহলে এটি হবে এশিয়া মাইনরের পশ্চিম সমুদ্রতট, যেখানে ঈজিয়ান সাগর বিভিন্ন ছোট ছোট উপসাগরের রূপ নিয়েছে। কুরআন এখানে ‘বাহর’ (সমুদ্র) শব্দের পরিবর্তে “আয়েন” শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা সমুদ্রের পরিবর্তে হ্রদ বা উপসাগর অর্থে অধিক নির্ভুলতার সাথে বলা যেতে পারে একথাটি আমাদের উপরোক্ত অনুমানকে সঠিক প্রমাণ করে।
৬৫.
আল্লাহ যে একথাটি সরাসরি অহী বা ইলহামের মাধ্যমে যুলকারনাইনকে সম্বোধন করে বলে থাকবেন এমন হওয়া জরুরী নয়। তেমনটি হলে তাঁর নবী বা এমন ব্যক্তি হওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন। এটি এভাবে হয়ে থাকতে পারে যে, আল্লাহ সমগ্র পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে তার নিয়ন্ত্রণে দিয়ে দিয়েছেন।। এটিই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়। যুলকারনাইন সে সময় বিজয় লাভ করে এ এলাকাটি দখল করে নিয়েছিলেন। বিজিত জাতি তার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। এহেন অবস্থায় আল্লাহ তার বিবেকের সামনে এ প্রশ্ন রেখে দেন যে, এটা তোমার পরীক্ষার সময়, এ জাতিটি তোমার সামনে ক্ষমতাহীন ও অসহায়। তুমি জুলুম করতে চাইলে তার প্রতি জুলুম করতে পারো এবং সদাচার করতে চাইলে তাও তোমার আয়ত্বাধীন রয়েছে।
.
.
.
৬৬.
অর্থাৎ তিনি দেশ জয় করতে করতে পূর্ব দিকে এমন এলাকায় পৌঁছে গেলেন যেখানে সভ্য জগতের সীমানা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং সামনের দিকে এমন একটি অসভ্য জাতির এলাকা ছিল, যারা ইমরাত নির্মাণ তো দূরের কথা তাঁবু তৈরী করতেও পারতো না।
.
.
৬৭.
যেহেতু সামনের দিকে বলা হচ্ছে যে, এ দু’পাহাড়ের বিপরীত পাশে ইয়াজুজক মাজুজের এলাকা ছিল তাই ধরে নিতে হয় যে, এ পাহাড় বলতে কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের মধ্যবর্তী সুবিস্তীর্ণ ককেসীয় পবর্তমালাকে বুঝানো হয়েছে।
৬৮.
অর্থাৎ যুলকারনাইন ও তার সাথীদের জন্য তাদের ভাষা ছিল প্রায়ই অপরিচিত ও দুর্বোধ্য। ভীষণভাবে সভ্যতার আলো বিবর্জিত ও বন্য হওয়ার কারণে তাদের ভাষা কেউ জানতো না এবং তারাও কারোর ভাষা জানতো না।
৬৯.
ইয়াজুজ মা’জুজ বলতে বুঝায়, যেমন ওপরে ৬২ টীকায় ইশারা করা হয়েছে যে, এশিয়ার উত্তর পূর্ব এলাকার এমন সব জাতি যারা প্রাচীন যুগে সুসভ্য দেশগুলোর ওপর ধ্বংসাত্মক হামলা চালাতে অভ্যস্ত ছিল এবং মাঝে মধ্যে এশিয়া ও ইউরোপ উভয় দিকে সয়লাবের আকারে ধ্বংসের থাবা বিস্তার করতো। বাইবেলের আদি পুস্তক (১০ অধ্যায়) তাদেরকে হযরত নূহের (আ) পুত্র ইয়াফেসের বংশধর বলা হয়েছে। মুসলিম ঐতিহাসিকগণও এ একই কথা বলেছেন। হিযকিয়েল (যিহিষ্কেল) পুস্তিকায় (৩৮ ও ৩৯ অধ্যায়) তাদের এলাকা বলা হয়েছে রোশ (রুশ) তূবল (বর্তমান তোবলস্ক) ও মিস্ক (বর্তমান মস্কো) কে। ইসরাঈলী ঐতিহাসিক ইউসীফুস তাদেরকে সিথীন জাতি মনে করেন এবং তার ধারণা তাদের এলাকা কৃষ্ণসাগরের উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থিত ছিল। জিরোম এর বর্ণনা মতে মাজুজ জাতির বসতি ছিল ককেশিয়ার উত্তরে কাস্পিয়ান সাগরের সন্নিকটে।
.
অনুবাদ: