পারা ১

আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১

পারা ২

আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২

পারা ৩

আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২

পারা ৪

আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

পারা ৬

আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১

পারা ৭

আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০

পারা ৮

আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭

পারা ৯

আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০

পারা ১০

আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২

পারা ১১

আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫

পারা ১২

হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

পারা ১৪

আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮

পারা ১৫

বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

পারা ১৭

আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮

পারা ১৮

আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০

পারা ১৯

আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫

পারা ২০

আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫

পারা ২১

আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০

পারা ২২

আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭

পারা ২৩

ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১

পারা ২৪

আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬

পারা ২৫

ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭

পারা ২৬

আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

পারা ২৮

আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২

পারা ২৯

আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

১৫৪ আয়াত

৭৩ ) এ ভাইয়েরা বললো, “আল্লাহর কসম! তোমরা খুব ভালোভাবেই জানো, আমরা এ দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে আসিনি এবং চুরি করার মতো লোক আমরা নই।”
قَالُوا۟ تَٱللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُم مَّا جِئْنَا لِنُفْسِدَ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا كُنَّا سَـٰرِقِينَ ٧٣
৭৪ ) তারা বললো, “আচ্ছা, যদি তোমাদের কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলে চোরের কি শাস্তি হবে?”
قَالُوا۟ فَمَا جَزَٰٓؤُهُۥٓ إِن كُنتُمْ كَـٰذِبِينَ ٧٤
৭৫ ) তারা জবাব দিল, “তার শাস্তি” যার মালপত্রের মধ্যে ঐ জিনিস পাওয়া যাবে তার শাস্তি হিসেবে তাকেই রেখে দেয়া হবে। আমাদের এখানে তো এটাই এ ধরনের জালেমদের শাস্তির পদ্ধতি।” ৫৮
قَالُوا۟ جَزَٰٓؤُهُۥ مَن وُجِدَ فِى رَحْلِهِۦ فَهُوَ جَزَٰٓؤُهُۥ ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّـٰلِمِينَ ٧٥
৭৬ ) তখন ইউসুফ নিজের ভাইয়ের আগে তাদের থলের তল্লাশী শুরু করে দিল। তারপর নিজের ভাইয়ের থলের মধ্য থেকে হারানো জিনিস বের করে ফেললো। ---এভাবে আমি নিজের কৌশলের মাধ্যমে ইউসুফকে সহায়তা করলাম। ৫৯ বাদশাহর দ্বীন (অর্থাৎ মিসরের বাদশাহর আইন) অনুযায়ী নিজের ভাইকে পাকড়াও করা তার পক্ষে সঙ্গত ছিল না, তবে যদি আল্লাহই এমনটি চান। ৬০ যাকে চাই তার মর্তবা আমি বুলন্দ করে দেই আর একজন জ্ঞানবান এমন আছে যে প্রত্যেক জ্ঞানবানের চেয়ে জ্ঞানী।
فَبَدَأَ بِأَوْعِيَتِهِمْ قَبْلَ وِعَآءِ أَخِيهِ ثُمَّ ٱسْتَخْرَجَهَا مِن وِعَآءِ أَخِيهِ ۚ كَذَٰلِكَ كِدْنَا لِيُوسُفَ ۖ مَا كَانَ لِيَأْخُذَ أَخَاهُ فِى دِينِ ٱلْمَلِكِ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ ۚ نَرْفَعُ دَرَجَـٰتٍۢ مَّن نَّشَآءُ ۗ وَفَوْقَ كُلِّ ذِى عِلْمٍ عَلِيمٌۭ ٧٦
৭৭ ) এ ভাইয়েরা বললো, “এ যদি চুরি করে থাকে তাহলে অবাক হবার কিছু নেই, কারণ এর আগে এর ভাইও (ইউসুফ) চুরি করেছিল।” ৬১ ইউসুফ তাদের একথা শুনে আত্মস্থ করে ফেললো, সত্য তাদের কাছে প্রকাশ করলো না, শুধুমাত্র (মনে মনে) এতটুকু বলে থেমে গেলো, “বড়ই বদ তোমরা (আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার ওপর) এই যে দোষারোপ তোমরা করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ প্রকৃত সত্য ভালোভাবে অবগত।”
۞ قَالُوٓا۟ إِن يَسْرِقْ فَقَدْ سَرَقَ أَخٌۭ لَّهُۥ مِن قَبْلُ ۚ فَأَسَرَّهَا يُوسُفُ فِى نَفْسِهِۦ وَلَمْ يُبْدِهَا لَهُمْ ۚ قَالَ أَنتُمْ شَرٌّۭ مَّكَانًۭا ۖ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَصِفُونَ ٧٧
৭৮ ) তারা বললো, “হে ক্ষমতাসীন সরদার (আযীয)! ৬২ এর বাপ অত্যন্ত বৃদ্ধ, এর জায়গায় আপনি আমাদের কাউকে রেখে দিন। আমরা আপনাকে বড়ই সদাচারী ব্যক্তি হিসেবে পেয়েছি।”
قَالُوا۟ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْعَزِيزُ إِنَّ لَهُۥٓ أَبًۭا شَيْخًۭا كَبِيرًۭا فَخُذْ أَحَدَنَا مَكَانَهُۥٓ ۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ ٧٨
৭৯ ) ইউসুফ বললেন, “আল্লাহর পানাহ! অন্য কাউকে আমরা কেমন করে রাখতে পারি? যার কাছে আমরা নিজেদের জিনিস পেয়েছি ৬৩ তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কাউকে রাখলে আমরা জালেম হয়ে যাবো।”
قَالَ مَعَاذَ ٱللَّهِ أَن نَّأْخُذَ إِلَّا مَن وَجَدْنَا مَتَـٰعَنَا عِندَهُۥٓ إِنَّآ إِذًۭا لَّظَـٰلِمُونَ ٧٩
৮০ ) যখন তারা ইউসুফের কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেলো তখন একান্তে পরামর্শ করতে লাগলো। তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বয়সে বড় ছিল সে বললোঃ “তোমরা কি জান না, তোমাদের বাপ তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহর নামে কি অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং ইতিপূর্বে ইউসুফের ব্যাপারে তোমরা যেসব বাড়াবাড়ি করেছো তাও তোমরা জানো। এখন আমি তো এখান থেকে কখনোই যাবো না যে পর্যন্ত না আমার বাপ আমাকে অনুমতি দেন অথবা আল্লাহ আমার ব্যাপারে কোন ফায়সালা করে দেন, কেননা তিনি সবচেয়ে ভালো ফায়সালাকারী।
فَلَمَّا ٱسْتَيْـَٔسُوا۟ مِنْهُ خَلَصُوا۟ نَجِيًّۭا ۖ قَالَ كَبِيرُهُمْ أَلَمْ تَعْلَمُوٓا۟ أَنَّ أَبَاكُمْ قَدْ أَخَذَ عَلَيْكُم مَّوْثِقًۭا مِّنَ ٱللَّهِ وَمِن قَبْلُ مَا فَرَّطتُمْ فِى يُوسُفَ ۖ فَلَنْ أَبْرَحَ ٱلْأَرْضَ حَتَّىٰ يَأْذَنَ لِىٓ أَبِىٓ أَوْ يَحْكُمَ ٱللَّهُ لِى ۖ وَهُوَ خَيْرُ ٱلْحَـٰكِمِينَ ٨٠
৮১ ) তোমরা তোমাদের বাপের কাছে ফিরে গিয়ে বলো, “আব্বাজান, আপনার ছেলে চুরি করেছে, আমরা তাকে চুরি করতে দেখিনি, যতটুকু আমরা জেনেছি শুধু ততটুকুই বর্ণনা করছি এবং অদৃশ্যেরই রক্ষণাবেক্ষণ করা তো আমাদের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না।
ٱرْجِعُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَبِيكُمْ فَقُولُوا۟ يَـٰٓأَبَانَآ إِنَّ ٱبْنَكَ سَرَقَ وَمَا شَهِدْنَآ إِلَّا بِمَا عَلِمْنَا وَمَا كُنَّا لِلْغَيْبِ حَـٰفِظِينَ ٨١
৮২ ) আমরা যে পল্লীতে ছিলাম সেখানকার লোকজনদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন এবং যে কাফেলার সাথে আমরা ছিলাম তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, আমরা যা বলছি সত্য বলছি।”
وَسْـَٔلِ ٱلْقَرْيَةَ ٱلَّتِى كُنَّا فِيهَا وَٱلْعِيرَ ٱلَّتِىٓ أَقْبَلْنَا فِيهَا ۖ وَإِنَّا لَصَـٰدِقُونَ ٨٢
.
.
৫৮.
উল্লেখ্য, এ ভাইয়েরা ছিল ইবরাহিমী পরিবারের সন্তান। কাজেই চুরির ব্যাপারে তারা যে আইনের কথা বলে তা ছিল ইবরাহিমী শরীয়াতের আইন। এ আইন অনুযায়ী চোরের শাস্তি ছিল, যে ব্যক্তির সম্পদ সে চুরি করেছে তাকে তার দাসত্ব করতে হবে।
৫৯.
এ সমগ্র ধারাবাহিক ঘটনাবলীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত ইউসুফের সমর্থনে সরাসরি কোন্ কৌশলটি অবলম্বন করা হয়েছিল তা অবশ্যি এখানে ভেবে দেখার মতো বিষয়। একথা সুস্পষ্ট যে, পেয়ালা রাখার কৌশলটি হযরত ইউসুফ নিজেই করেছিলেন। এটাও সুস্পষ্ট, সরকারী কর্মচারীদের চুরির সন্দেহে কাফেলাকে আটকানোও একটি নিয়ম মাফিক কাজ ছিল, যা এ ধরনের অবস্থায় সব সরকারী কর্মচারীই করে থাকে। তাহলে আল্লাহর সেই কৌশল কোনটি? ওপরের আয়াতের মধ্যে অনুসন্ধান চালালে এছাড়া আর দ্বিতীয় কোন জিনিসই এর ক্ষেত্র হিসেবে পাওয়া যেতে পারে না যে, সরকারী কর্মচারীরা নিয়ম বিরোধীভাবে নিজেরাই সন্দেহপূর্ণ অপরাধীদের কাছে চুরির শাস্তি জিজ্ঞেস করলো এবং জবাবে তারাও এমন শাস্তির কথা বললো যা ইবরাহিমী শরীয়াতের দৃষ্টিতে চোরকে দেয়া হতো। এর ফলে দু’টি লাভ হলো। প্রথমত, হযরত ইউসুফ ইবরাহিমী শরীয়াতকে কার্যকর করার সুযোগ পেলেন এবং দ্বিতীয়ত, নিজের ভাইকে হাজতে পাঠাবার পরিবর্তে তিনি নিজের কাছে রাখতে পারলেন।
৬০.
অর্থাৎ হযরত ইউসুফ (আ) নিজের একটি ব্যক্তিগত ব্যাপারে মিসরের বাদশাহর আইন কার্যকর করবেন, এটা তাঁর নবুওয়াতের মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যশীল ছিল না। ভাইকে আটকে রাখার জন্য তিনি নিজে যে কৌশল অবলম্বন করেছিলেন তার মধ্যে তাঁর জন্য একটি বাধা থেকে গিয়েছিল। অর্থাৎ তিনি ভাইকে আটক করতে পারতেন ঠিকই কিন্তু এজন্য তাঁকে মিসরের বাদশাহর অপরাধ দণ্ডবিধির আশ্রয় নিতে হতো। আর এটি ছিল তাঁর পয়গম্বরীর মর্যাদা বিরোধী। কারণ তিনি ইসলাম বিরোধী আইনের জায়গায় ইসলামী শরীয়াতের আইন প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যেই দেশের শাসন ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন। আল্লাহ চাইলে তাঁর নবীকে এ ধরনের একটি বেমানান ভুলের অবতারণা করতে দিতে পারতেন। কিন্তু এ কলঙ্ক কালিমা তাঁর গায়ে লেগে থাকুক এটা তিনি চাননি। তাই তিনি সরাসরি নিজ ব্যবস্থাপনায় একটি পথ বের করে দিলেন। ঘটনাক্রমে ইউসুফের ভাইদের কাছে চোরের শাস্তি কি হতে পারে তা জিজ্ঞেস করা হলো এবং তারা এজন্য ইবরাহিমী শরীয়াতের আইন বর্ণনা করলো। ইউসুফের ভাইয়েরা মিসরের নাগরিক না হওয়ার কারণে এ জিনিসটি এদিক দিয়ে একেবারেই যথাযথ ছিল। তারা এসেছিল একটি স্বাধীন এলাকা থেকে। কাজেই তারা যদি তাদের এলাকায় প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নিজেদের লোককে এমন এক ব্যক্তির দাসত্ব শৃংখলে আবদ্ধ করতে রাযী থাকে যার সম্পদ সে চুরি করেছে তাহলে এক্ষেত্রে আর মিসরীয় দণ্ডবিধির সাহায্য নেবার প্রয়োজনই থাকে না। পরবর্তী দু’টি আয়াতে আল্লাহ এ জিনিসটিকেই নিজের অনুগ্রহ ও তাত্বিক শ্রেষ্ঠত্ব হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এক ব্যক্তি যখন তার মানবিক দুর্বলতার কারণে নিজে কোন পদঙ্খলনের শিকার হয় তখন আল্লাহ অদৃশ্য থেকে তাকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করেন, তার জন্য এর চেয়ে বড় মর্যাদা আর কি হতে পারে! এ ধরনের উন্নত মর্যাদা একমাত্র তারাই লাভ করতে পারেন যারা নিজেদের প্রচেষ্টা ও কর্মের মাধ্যমে বড় বড় পরীক্ষায় নিজেদের ‘মুহসিন’ তথা সৎকর্মশীল হওয়া প্রমাণ করে দিয়েছেন। যদিও হযরত ইউসুফ (আ) তাত্বিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন, নিজে প্রখর প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা সহকারে কাজ করতেন, তবুও এ সময় তাঁর জ্ঞানের মধ্যে একটি ফাঁক থেকে গিয়েছিল এবং এমন এক সত্তা এ ফাঁক পূরণ করেছিলেন যিনি সবার চেয়ে বড় জ্ঞানী।

এখানে আরো কয়েকটি বিষয় ব্যাখ্যা সাপেক্ষ থেকে যায়। সেগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবো।

একঃ সাধারণভাবে এ আয়াতটির অনুবাদ এভাবে করা হয়ে থাকেঃ “বাদশাহর আইন মোতাবেক ইউসুফ নিজের ভাইকে পাকড়াও করতে পারতো না।” অর্থাৎ مَا كَانَ لِيَأْخُذَ কে অনুবাদক ও ব্যাখ্যাতাগণ অক্ষমতা অর্থে নিয়েছেন, অন্যায় বা অসঙ্গত অর্থে নেননি। কিন্তু প্রথমত এ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা আরবী বাকধারা ও কুরআনিক ব্যবহার উভয় দিক দিয়েই ঠিক নয়। কেননা আরবীতে সাধারণত مَا كَانَ له শব্দ ব্যবহৃত হয় مَا يَنْبَغِي لَهُ , ما صح له , ما استقام له ইত্যাদি অর্থে। আর কুরআনেও এটি বেশীর ভাগ এ অর্থেই এসেছে। যেমন---

مَا كَانَ لِلَّهِ أَنْ يَتَّخِذَ مِنْ وَلَدٍ- مَا كَانَ لَنَا أَنْ نُشْرِكَ بِاللَّهِ مِنْ شَيْءٍ- مَا كَانَ اللَّهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلَى الْغَيْبِ- مَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ- فَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ- مَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَقْتُلَ مُؤْمِنًا- مَا كَانَ اللَّهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ-

দ্বিতীয়ত, অনুবাদক ও ব্যাখ্যাতাগণ সাধারণভাবে যে অর্থ বর্ণনা করেন যদি এর সে অর্থ গ্রহণ করা হয় তাহলে ব্যাপারটি অর্থহীন হয়ে পড়ে। বাদশাহর আইনে চোরকে পাকড়াও করতে না পারার কি কারণ হতে পারে? দুনিয়ায় কি কখনো এমন পর্যায়েরও কোন রাষ্ট্র ছিল যার আইন চোরকে গ্রেফতার করার অনুমতি দিত না?

দুইঃ রাজকীয় আইনের জন্য আল্লাহ عَلَيْهِ- (বাদশাহর আইন) শব্দ ব্যবহার করে নিজেই دِينِ الْمَلِكِ থেকে যে অর্থ গ্রহণ করা উচিত সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন। একথা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহর নবীকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছিল مَا كَانَ لِيَأْخُذَ(আল্লাহর আইন) জারী করার জন্য, دِينِ اللَّهِ(বাদশাহর আইন) জারী করার জন্য নয়। পরিবেশ ও পরিস্থিতির অনিবার্যতার কারণে যদি সেই রাষ্ট্রে সেই সময় পর্যন্ত বাদশাহর আইনের পরিবর্তে আল্লাহর আইন পুরোপুরি জারি করা সম্ভব না হয়ে থাকে তাহলে অন্ততপক্ষে নিজের একটি ব্যক্তিগত বিষয়ে বাদশাহর আইন কার্যকর করাতো নবীর পক্ষে সমীচীন ছিল না। কাজেই হযরত ইউসুফ (আ) বাদশাহর আইন অনুযায়ী নিজের ভাইকে গ্রেফতার না করার কারণ এটা ছিল না যে, বাদশাহর আইনে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের অবকাশ ছিল না বরং এর কারণ শুধু এটিই ছিল যে, নবী হিসেবে অন্ততপক্ষে নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে আল্লাহর আইন কার্যকর করা তাঁর জন্য ফরয ছিল। এক্ষেত্রে বাদশাহর আইন অনুযায়ী কাজ করা তাঁর জন্য কোনক্রমেই সঙ্গত ছিল না।

তিনঃ দেশীয় আইনের (Law of the land) জন্য “দ্বীন” শব্দ ব্যবহার করে আল্লাহর দ্বীনের অর্থের ব্যাপকতা পুরোপুরি প্রকাশ করে দিয়েছেন। এ থেকে দ্বীন সম্পর্কে এক ধরনের লোকদের ধারণার মূল উৎপাটিত হয়ে গেছে। তারা ধারণা করেন, নবীগণের দাওয়াত শুধুমাত্র সাধারণ ধর্মীয় অর্থে এক আল্লাহর পূজা উপাসনা-আরাধনা করা এবং নিছক কতিপয় ধর্মীয় আকীদা-বিশ্বাস ও রসম-রেওয়াজ মেনে চলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তারা এও মনে করেন, মানুষের সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন-আদালত এবং এ ধরনের অন্যান্য পার্থিব বিষয়াদির সাথে দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই। অথবা যদি সম্পর্ক থাকে তাহলে উল্লেখিত বিষয়াদি সম্পর্কে দ্বীনের নির্দেশাবলী নিছক ঐচ্ছিক সুপারিশের পর্যায়ভুক্ত। এগুলো কার্যকর করতে পারলে ভালো, অন্যথায় মানুষের নিজের হাতে গড়া বিধান মেনে চলায় কোন ক্ষতি নেই। এটি পুরোপুরি দ্বীন সম্পর্কে একটি বিভ্রান্ত চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। দীর্ঘদিন থেকে মুসলমানদের মধ্যে এর অনুশীলন চলছে। মুসলমানদেরকে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম থেকে গাফেল করে দেবার ক্ষেত্রে এটিই বেশীরভাগ দায়ী। এরই বদৌলতে মুসলমানরা কুফরী ও জাহেলী জীবন ব্যবস্থায় কেবল সন্তুষ্টই হয়নি বরং একজন নবীর সুন্নাত মনে করে এ ব্যবস্থার কল-কব্জায় পরিণত হতে এবং নিজেরাই তাকে পরিচালিত করতেও উদ্যোগী হয়েছে। এ আয়াতের দৃষ্টিতে এ চিন্তা ও কর্মনীতি পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। এখানে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পরিষ্কার ভাষায় বলছেনঃ যেভাবে নামায, রোযা ও হজ্জ দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত ঠিক তেমনি যে আইনের ভিত্তিতে দেশ ও সমাজ ব্যবস্থা পরিচালনা করা হয় তাও দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ এবং وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ ইত্যাদি আয়াতগুলোতে যে দ্বীনের প্রতি আনুগত্যের দাবী জানানো হয়েছে তার অর্থ শুধু নামায-রোযাই নয় বরং ইসলামের সমগ্র সমাজ ব্যবস্থাও তার আওতায় এসে যায়। এক্ষেত্রে আল্লাহর মনোনীত এ ব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য পরিহার করে অন্য কোন ব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য করা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

চারঃ প্রশ্ন করা যেতে পারে, অন্ততপক্ষে এতটুকুন তো প্রমাণিত যে, এ সময় পর্যন্ত মিসরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে “বাদশাহর দ্বীন”-ই জারী ছিল। যদি এ সরকারের প্রধান শাসনকর্তা হযরত ইউসুফই হয়ে থাকেন যেমন এর আগে আপনি প্রমাণ করেছেন, তাহলে তো দেখা যায় আল্লাহর নবী হযরত ইউসুফ নিজেই নিজের হাতে বাদশাহর দ্বীন জারী করছিলেন। এরপর হযরত ইউসুফ যদি নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে “বাদশাহর দ্বীন” ---এর পরিবর্তে ইবরাহীমের শরীয়াতকে কার্যকর করেন তাহলে তাতেই বা কি পার্থক্য হয়? এর জবাব হচ্ছে, হযরত ইউসুফ তো আল্লাহর দ্বীন জারী করার জন্য নিযুক্ত হয়েছিলেন। এটিই ছিল তাঁর নবুওয়াতী মিশন এবং তাঁর শাসনের উদ্দেশ্য। কিন্তু একটি দেশের ব্যবস্থা কার্যত এক দিনেই বদলে দেয়া যায় না। আজ যদি কোন দেশ সম্পূর্ণভাবে আমাদের কর্তৃত্বাধীনে থাকে এবং আমরা সেখানে ইসলামী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার ঐকান্তিক সংকল্প সহকারে তার সামগ্রিক ব্যাবস্থাপনা নিজের হাতে নেই, তাহলেও তার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এবং আইন ও আদালত ব্যবস্থা বাস্তবে পরিবর্তিত করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। এ অবস্থায় কিছুকাল পর্যন্ত আমাদের ব্যবস্থাপনায়ও পূর্বের আইন বহাল রাখতে হবে। ইতিহাস কি একথার সাক্ষ্য দেয় না যে, আরবের জীবন ব্যবস্থায় পূর্ণ ইসলামী বিপ্লব সাধনের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নয়-দশ বছর সময় লেগেছিল? এ সময় শেষ নবীর নিজের রাষ্ট্রেই কয়েক বছর মদ পান চলতে থাকে। সূদের লেন দেন জারী থাকে। জাহেলী যুগের মীরাসী আইন জারী থাকে। পুরাতন বিয়ে তালাকের আইন চালু থাকে। অনেক ধরনের অবৈধ ব্যবসায় কার্যকর হতে থাকে। প্রথম দিনেই ইসলামের দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইন পুরোপুরি ও সর্বতোভাবে প্রবর্তিত হয়নি। কাজেই হযরত ইউসুফের রাষ্ট্রে যদি প্রথম আট-নয় বছর পর্যন্ত সাবেক মিসরীয় রাজতন্ত্রের কিছু আইন চালু থাকে তাহলে তাতে অবাক হবার কি আছে? আর এ থেকে আল্লাহর নবীকে মিসরে আল্লাহর দ্বীন প্রবর্তনের জন্য নয় বরং বাদশাহর দ্বীন প্রবর্তনের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল, এ যুক্তির উদ্ভব হয় কেমন করে? তবে দেশে যখন বাদশাহর দ্বীন জারী ছিলই তখন হযরত ইউসুফের নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে তাকে কার্যকর করা তাঁর মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যশীল ছিল না কেন, এ প্রশ্নের জবাবও নবী ﷺ এর পদ্ধতি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে সহজেই পাওয়া যায়। নবী ﷺ এর শাসনকালের প্রথম যুগে যতদিন ইসলামী আইন জারি হয়নি ততদিন লোকেরা পুরাতন পদ্ধতি অনুযায়ী শরাব পান করতে থাকে। কিন্তু নবী ﷺ নিজেও কি শরাব পান করেন? লোকেরা সুদী লেনদেন করতো। কিন্তু তিনি নিজেও কি সুদী লেনদেন করেন? লোকেরা মুতা বিয়ে করতে থাকে এবং দুই সহোদরা বোনকে একসাথে বিয়ে করতে থাকে। কিন্তু নবী ﷺও কি এমনটি করেন? এ থেকে জানা যায়, বাস্তব অক্ষমতার কারণে ইসলামের আহবায়কের ইসলামী বিধান জারি করার জন্য পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হওয়া একটি ভিন্ন ব্যাপার এবং এ পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হওয়ার যুগে তাঁর নিজের জাহেলী পদ্ধতিকে কার্যকর করা এর থেকে একটি সম্পূর্ণ ভিন্নতর ব্যাপার। পর্যায়ক্রমের কারণে যে ছুট দেয়া হয় তা অন্যদের জন্য। আহবায়ক নিজে এমন সব পদ্ধতির মধ্যে থেকে কোন একটিকে বাস্তবায়িত করবেন যেগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তাঁর নিযুক্ত করা হয়েছে, এটা আসলে তাঁর নিজের কাজ নয়।

.
৬১.
আসলে নিজেদের অপমান স্খলন করার জন্য তারা একথা বলে। প্রথমে তারা বলে এসেছে, আমরা চোর নই। আর এখন দেখছে, তাদের ভাইয়ের থলের মধ্যে থেকে হারানো জিনিসটি বের হচ্ছে। কাজেই এখন সঙ্গে সঙ্গেই একটি মিথ্যা কথা বলে সেই ভাই থেকে নিজেদেরকে আলাদা করে নিয়েছে এবং তার সাথে তার আগের ভাইকেও জড়িয়ে ফেলেছে। এ থেকে অনুমান করা যায়, হযরত ইউসুফের অবর্তমানে বিন ইয়ামিনের সাথে এ ভাইয়েরা কোন্ ধরনের ব্যবহার করে আসছে এবং কি কারণে তার ও হযরত ইউসুফের মনে এ আকাঙ্ক্ষা জেগেছে যে, সে তাদের সাথে ফিরে না গিয়ে ওখানে থেকে যাক।
.
৬২.
এখানে “আযীয” শব্দটি হযরত ইউসুফের জন্য ব্যবহার করার কারণে তাফসীরকারগণ ধারণা করে নিয়েছেন যে, যুলায়খার স্বামী ইতিপূর্বে যে পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন হযরত ইউসুফ সেই পদেই অধিষ্ঠিত হন। এরপর আরো ধারণা করা হয়েছে যে, পূর্ববর্তী আযীয মারা গিয়েছিল এবং হযরত ইউসুফ তার স্থলাভিষিক্ত হন। যুলায়খাকে নতুন করে অলৌকিকভাবে যুবতী বানিয়ে দেয়া হয় এবং মিসরের বাদশাহ হযরত ইউসুফের সাথে তার বিয়ে দেন। এমন কি বাসর রাতে হযরত ইউসুফের সাথে যুলায়খার যে কথাবার্তা হয় তাও পর্যন্ত আমাদের একশ্রেণীর তাফসীরকারগণের কাছে পৌঁছে যায়। অথচ একথাগুলো সবই কাল্পনিক। “আযীয” শব্দটি সম্পর্কে আমি আগেই একথা বলে এসেছি যে, মিসরে এটি কোন বিশেষ পদবী হিসেবে চিহ্নিত ছিল না বরং ছিক “কর্তৃত্বশালী” অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। সম্ভবত মিসরে বড় বড় লোকদের জন্য এ ধরনের কিছু শব্দ পারিভাষিক অর্থে প্রচলিত ছিল, যেমন আমাদের দেশে “সরকার” শব্দটির প্রচলন দেখা যায়। এরই অনুবাদ কুরআনে “আযীয” শব্দের মাধ্যমে করা হয়েছে। আর যুলায়খার সাথে হযরত ইউসুফের বিয়ের যে গল্প ফাঁদা হয়েছে এর ভিত্তি শুধু এতটুকুই যে, বাইবেল ও তালমূদে পোটিফেরের মেয়ে আস্নাত এর সাথে তার বিয়ের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। ওদিকে যুলায়খার স্বামীর নামও ছিল পোটিফর। এ ঘটনাগুলো ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্ধৃত হতে হতে মুফাস্সিরগণের কাছে পৌঁছে যায়। তারপর গুজব ও জনশ্রুতির বিস্তার লাভের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী। পোটিফের সহজেই পোটিফর হয়ে গেছে। মেয়ে হয়ে গেছে স্ত্রী। আর এ স্ত্রী নিশ্চিতভাবেই হয়ে গেছে যুলায়খা। কাজেই তার সাথে হযরত ইউসুফের বিয়ে দেবার জন্য পোটিফরকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবেই “ইউসুফ যুলায়খার” উপাখ্যান পূর্ণতা লাভ করেছে।
.
৬৩.
এখানে কতদূর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে একবার তলিয়ে দেখুন। এখানে “চোর” বলা হচ্ছে না বরং কেবল এতটুকু বলা হচ্ছে, “যার কাছে আমরা আমাদের জিনিস পেয়েছি।” শরীয়াতী পরিভায়ায় একেই বলা হয় “তাওরীয়া” অর্থাৎ “সত্যকে সুকৌশলে গোপন করা।” যখন কোন মজলুমকে জালেমের হাত থেকে বাঁচাবার অথবা কোন বড় আকারের জুলুমের প্রতিরোধ করার জন্য প্রকৃত ঘটনার বিপরীত কথা বলা বা সত্য বিরোধী বাহানাবাজী করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না তখন এ অবস্থায় একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি সুস্পষ্ট মিথ্যা এড়িয়ে এমন কথা বলবে বা এমন কৌশল অবলম্বন করার চেষ্টা করবে যার ফলে প্রকৃত সত্যকে গোপন করে দুষ্কৃতিকে রোধ করা যেতে পারে। এমনটি করা শরীয়াত ও নৈতিকতার দৃষ্টিতে বৈধ, তবে এখানে শর্ত থাকবে যে, নিছক কার্যোদ্ধার করার জন্য এমনটি করা যাবে না বরং কোন বড় আকারের দুষ্কৃতি দূর করাই হবে উদ্দেশ্য। এখন এ সমগ্র ব্যাপারটিতে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম কেমন ধরনের বৈধ তাওরীয়ার শর্ত পূরণ করেছেন দেখুনঃ ভাইয়ের সম্মতিক্রমে তার মালপত্রের মধ্যে নিজের পেয়ালাটি রেখে দিয়েছেন। কিন্তু কর্মচারীদেরকে একথা বলেননি যে, এর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের করো। তারপর সরকারী কর্মচারীরা যখন চুরির অভিযোগে তাদেরকে ধরে এনেছে তখন কোন প্রকার হৈ চৈ না করে নীরবে তাদের মালপত্র তল্লাশী করতে শুরু করেছেন। এরপর যখন এ ভাইয়েরা বললো, বিন ইয়ামীনের জায়গায় আমাদের কাউকে রাখুন তখন এর জবাবে তাদেরই কথা তাদের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এই বলে যে, তোমরাই তো ফতোয়া দিয়েছিলে, যার মালপত্রের মধ্য থেকে পেয়ালা বের হবে তাকেই রেখে দেয়া হবে। কাজেই এখন তোমাদের সামনে বিন ইয়ামীনের মালপত্রের মধ্য থেকে আমাদের জিনিস বের হয়েছে এবং তাকেই আমরা রেখে দিচ্ছি। অন্যকে তার জায়গায় আমরা কেমন করে রাখতে পারি? এ ধরনের তাওরীয়ার দৃষ্টান্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাসেও পাওয়া যাবে। কোন যুক্তি দিয়ে নৈতিক দৃষ্টিতে একে দোষণীয়ও বলা যেতে পারে না।
.
.
.
.
অনুবাদ: