আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
আমরা দু’টি কারণে কারো প্রশংসা করে থাকি। প্রথমত তিনি প্রকৃতিগতভাবে কোন বিশেষ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তাঁর ঐ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ –বৈশিষ্ট আমাদের ওপর কি প্রভাব ফেলে সেটা বড় কথা নয়। দ্বিতীয়ত তিনি আমাদের প্রতি অনুগ্রহকারী এবং আমরা তাঁর অনুগ্রহের স্বীকৃতির আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়েই তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করি। মহান আল্লাহর প্রশংসা এই উভয় কারণে ও উভয় দিক দিয়েই করতে হয়। আমরা হামেসা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হব, এটি তাঁর অপরিসীম মর্যাদা ও আমাদের প্রতি তাঁর অশেষ অনুগ্রহের দাবী।
আর প্রশংসা আল্লাহর জন্য, কেবল এখানেই কথা শেষ নয় বরং সঠিকভাবে বলা যায়, “প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই” জন্য। একথাটি বলে একটি বিরাট সত্যের ওপর থেকে আবরণ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আর এটি এমন একটি সত্য যার প্রথম আঘাতেই “সৃষ্টি পূজা’র মূলে কুঠারাঘাত হয়। দুনিয়ায় যেখানে যে বস্তুর মধ্যে যে আকৃতিতেই কোন সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব বিরাজিত আছে আল্লাহর সত্তাই মূলত তার উৎস। কোন মানুষ ফেরেশতা, দেবতা, গ্রহ-নক্ষত্র তথা কোন সৃষ্টির নিজস্ব কোন গুণ-বৈশিষ্ট্য শ্রেষ্ঠত্ব নেই। বরং এসবই আল্লাহ প্রদত্ত। কাজেই যদি কেউ এ অধিকার দাবী করেন যে, আমরা তাঁর প্রশংসা কীর্তন করব, তাঁকে পূজা করব, তাঁর অনুগ্রহ স্বীকার করব ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব এবং তাঁর খেদমতগার ও সেবক হব, তাহলে তিনি হবেন সেই শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশেষ্ট্যের স্রষ্টা ঐ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী মানব-সত্তা নয়।
এর একটা সরল অর্থ এভাবে করা যায় “নিঃসন্দেহে এটা আল্লাহর কিতাব।” কিন্তু এর একটা অর্থ এও হতে পারে যে, এটা এমন একটা কিতাব যাতে সন্দেহের কোন লেশ নেই। দুনিয়ায় যতগুলো গ্রন্থে অতি প্রাকৃত এবং মানুষের বুদ্ধি-জ্ঞান বহির্ভূত বিষয়াবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সবই কল্পনা, ধারণা ও আন্দাজ–অনুমানের ভিত্তিতে লিখিত হয়েছে। তাই এ গ্রন্থগুলোর লেখকরাও নিজেদের রচনাবলীর নির্ভুলতা সম্পর্কে যতই প্রত্যয় প্রকাশ করুক না কেন, তাদের নির্ভুলতা সন্দেহ মুক্ত হতে পারেনা। কিন্তু এ কুরআন মজীদ এমন একটি গ্রন্থ যা আগাগোড়া নির্ভুল সত্য জ্ঞানে সমৃদ্ধ। এর রচয়িতা হচ্ছেন এমন এক মহান সত্তা, যিনি সমস্ত তত্ত্ব ও সত্যের জ্ঞান রাখেন। কাজেই এর মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশই নেই। মানুষ নিজের অজ্ঞতার কারণে এর মধ্যে সন্দেহ পোষণ করলে সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কথা এবং সেজন্য এ কিতাব দায়ী নয়।
অর্থাৎ এটি একেবারে একটি হিদায়াত ও পথ নির্দেশনার গ্রন্থ। কিন্তু এর থেকে লাভবান হতে চাইলে মানুষের মধ্যে কয়েকটি মৌলিক গুণ থাকতে হবে। এর মধ্যে সর্বপ্রথম যে গুণটির প্রয়োজন সেটি হচ্ছে, তাকে “মুত্তাকী” হতে হবে। ভালো ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা তার মধ্যে থাকতে হবে। তার মধ্যে মন্দ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ও ভালোকে গ্রহণ করার আকাঙ্খা এবং এ আকাঙ্খাকে বাস্তবায়িত করার ইচ্ছা থাকতে হবে। তবে যারা দুনিয়ায় পশুর মতো জীবন-যাপন করে, নিজেদের কৃতকর্ম সঠিক কি না সে ব্যাপারে কখনো চিন্তা করে না, যেদিকে সবাই চলছে বা যেদিকে প্রবৃত্তি তাকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে অথবা যেদিকে মন চায় সেদিকে চলতে যারা অভ্যস্ত, তাদের জন্য কুরআন মজীদে কোন পথ নির্দেশনা নেই।
ইকামাতে সালাত বা নামায কায়েম করা একটি ব্যাপক ও পূর্ণ অর্থবোধক পরিভাষা একথাটি অবশ্যি জেনে রাখা প্রয়োজন। এর অর্থ কেবল নিয়মিত নামায পড়া নয় বরং সামষ্টিকভাবে নামাযের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত করাও এর অর্থের অন্তর্ভুক্ত। যদি কোন লোকালয়ে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি নিয়মিতভাবে নামায পড়ে থাকে কিন্তু জামায়াতের সাথে এ ফরযটি আদায় করার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সেখানে নামায কায়েম আছে, একথা বলা যাবে না।