পারা ১

আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১

পারা ২

আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২

পারা ৩

আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২

পারা ৪

আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

পারা ৬

আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১

পারা ৭

আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০

পারা ৮

আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭

পারা ৯

আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০

পারা ১০

আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২

পারা ১১

আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫

পারা ১২

হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২

পারা ১৩

ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২

পারা ১৪

আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮

পারা ১৫

বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪

পারা ১৬

আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫

পারা ১৭

আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮

পারা ১৮

আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০

পারা ১৯

আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫

পারা ২০

আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫

পারা ২১

আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০

পারা ২২

আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭

পারা ২৩

ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১

পারা ২৪

আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬

পারা ২৫

ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭

পারা ২৬

আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০

পারা ২৭

আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯

পারা ২৮

আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২

পারা ২৯

আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০

পারা ৩০

আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬

পারা ৫

আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭

১২৪ আয়াত

৬৪ ) (তাদেরকে জানিয়ে দাও) আমি যে কোন রসূলই পাঠিয়েছি, এ উদ্দেশ্যেই পাঠিয়েছি যে, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তাঁর আনুগত্য করা হবে। ৯৪ আর যদি তারা এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতো যার ফলে যখন তারা নিজেদের ওপর জুলুম করতো তখন তোমার কাছে এসে যেতো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতো আর রসূলও তাদের জন্য ক্ষমার আবেদন করতো, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও অনুগ্রহশীল হিসেবে পেতো।
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۚ وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذ ظَّلَمُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ جَآءُوكَ فَٱسْتَغْفَرُوا۟ ٱللَّهَ وَٱسْتَغْفَرَ لَهُمُ ٱلرَّسُولُ لَوَجَدُوا۟ ٱللَّهَ تَوَّابًۭا رَّحِيمًۭا ٦٤
৬৫ ) না, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু’মিন হতে পারে না যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য যে কোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে। ৯৫
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا۟ فِىٓ أَنفُسِهِمْ حَرَجًۭا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًۭا ٦٥
৬৬ ) যদি আমি হুকুম দিতাম, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো অথবা নিজেদের ঘর থেকে বের হয়ে যাও, তাহলে তাদের খুব কম লোকই এটাকে কার্যকর করতো। ৯৬ অথচ তাদেরকে যে নসীহত করা হয় তাকে যদি তারা কার্যকর করতো তাহলে এটি হতো তাদের জন্য অধিকতর ভালো ও অধিকতর দৃঢ়তা ও অবিচলতার প্রমাণ। ৯৭
وَلَوْ أَنَّا كَتَبْنَا عَلَيْهِمْ أَنِ ٱقْتُلُوٓا۟ أَنفُسَكُمْ أَوِ ٱخْرُجُوا۟ مِن دِيَـٰرِكُم مَّا فَعَلُوهُ إِلَّا قَلِيلٌۭ مِّنْهُمْ ۖ وَلَوْ أَنَّهُمْ فَعَلُوا۟ مَا يُوعَظُونَ بِهِۦ لَكَانَ خَيْرًۭا لَّهُمْ وَأَشَدَّ تَثْبِيتًۭا ٦٦
৬৭ ) আর এমনটি করলে আমি নিজের পক্ষ থেকে তাদেরকে অনেকে বড় পুরস্কার দিতাম
وَإِذًۭا لَّـَٔاتَيْنَـٰهُم مِّن لَّدُنَّآ أَجْرًا عَظِيمًۭا ٦٧
৬৮ ) এবং তাদেরকে সত্য সরল পথ দেখাতাম। ৯৮
وَلَهَدَيْنَـٰهُمْ صِرَٰطًۭا مُّسْتَقِيمًۭا ٦٨
৬৯ ) যে ব্যক্তি আল্লাহ‌ ও রসূলের আনুগত্য করবে সে তাদের সহযোগী হবে, যাদেরকে আল্লাহ‌ পুরস্কৃত করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে। ৯৯ মানুষ যাদের সঙ্গ লাভ করতে পারে তাদের মধ্যে এরা কতই না চমৎকার সঙ্গী। ১০০
وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّـٰلِحِينَ ۚ وَحَسُنَ أُو۟لَـٰٓئِكَ رَفِيقًۭا ٦٩
৭০ ) আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া এই হচ্ছে প্রকৃত অনুগ্রহ এবং যথার্থ সত্য জানার জন্য একমাত্র আল্লাহর জ্ঞানই যথেষ্ট।
ذَٰلِكَ ٱلْفَضْلُ مِنَ ٱللَّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ عَلِيمًۭا ٧٠
৭১ ) হে ঈমানদারগণ! মোকাবিলা করার জন্য সর্বক্ষণ প্রস্তুত থাকো। ১০১ তারপর সুযোগ পেলে পৃথক পৃথক বাহিনীতে বিভক্ত হয়ে বের হয়ে পড়ো অথবা এক সাথে।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ خُذُوا۟ حِذْرَكُمْ فَٱنفِرُوا۟ ثُبَاتٍ أَوِ ٱنفِرُوا۟ جَمِيعًۭا ٧١
৭২ ) হ্যাঁ, তোমাদের কেউ কেউ এমনও আছে যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে গড়িমসি করে। ১০২ যদি তোমাদের ওপর কোন মুসিবত এসে পড়ে তাহলে সে বলে আল্লাহ‌ আমার প্রতি বড়ই অনুগ্রহ করেছেন, আমি তাদের সাথে যাইনি।
وَإِنَّ مِنكُمْ لَمَن لَّيُبَطِّئَنَّ فَإِنْ أَصَـٰبَتْكُم مُّصِيبَةٌۭ قَالَ قَدْ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَىَّ إِذْ لَمْ أَكُن مَّعَهُمْ شَهِيدًۭا ٧٢
৭৩ ) আর যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়, তাহলে সে বলে—এবং এমনভাবে বলে যেন তোমাদের ও তার মধ্যে কোন প্রীতির সম্পর্ক ছিলই না,-হায়! যদি আমিও তাদের সাথে হতাম তাহলে বিরাট সাফল্য লাভ করতাম।
وَلَئِنْ أَصَـٰبَكُمْ فَضْلٌۭ مِّنَ ٱللَّهِ لَيَقُولَنَّ كَأَن لَّمْ تَكُنۢ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُۥ مَوَدَّةٌۭ يَـٰلَيْتَنِى كُنتُ مَعَهُمْ فَأَفُوزَ فَوْزًا عَظِيمًۭا ٧٣
৯৪.
অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে রসূল এ জন্য আসেন না যে, কেবল তাঁর রিসালাতের প্রতি ঈমান আনতে হবে তারপর ইচ্ছেমতো যে কারো আনুগত্য করা যাবে। বরং রসূলের আগমনের উদ্দেশ্যই এই হয় যে, জীবন যাপনের জন্য যে আইন কানুন তিনি আনেন দুনিয়ার সমস্ত আইন কানুন বাদ দিয়ে কেবল মাত্র তারই অনুসরণ করতে হবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তিনি যে বিধান দেন সমস্ত বিধান ত্যাগ করে একমাত্র তাকেই কার্যকর করতে হবে। যদি কেউ এ কাজে ব্রতী না হয়, তাহলে তার নিছক রসূলকে রসূল মেনে নেয়া অর্থহীন হয়ে পড়ে।
.
৯৫.
এই আয়াতে দেয়া নির্দেশটি কেবল মাত্র রসূলের জীবন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয় বরং কিয়ামত পর্যন্ত এটি কার্যকর হবে। নবী ﷺ আল্লাহর কাছ থেকে যা কিছু এনেছেন এবং আল্লাহর হেদায়াত ও পথপ্রদর্শনের ভিত্তিতে যে পদ্ধতিতে তিনি কাজ করেছেন, তা চিরস্থায়ীভাবে মুসলমানদের জন্য চূড়ান্ত ফায়সালাকারী সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সনদটি মানা ও না মানার ওপরইকোন ব্যক্তির মু’মিন হওয়া ও না হওয়া নির্ভর করে। নবী ﷺ হাদীসে একথাটিই এভাবে ব্যক্ত করেছেনঃ

لا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يَكُونَ هَوَاءٌ تَبعًا لِمَا جِئتُ بٍه

“তোমাদেরকোন ব্যক্তি মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তার প্রবৃত্তি আমি যে পদ্ধতির প্রবর্তন করেছি তার অধীনতা স্বীকার করে নেবে।”

৯৬.
অর্থাৎ যখন তারা শরীয়াত মেনে চলতে গিয়ে সামান্যতম ক্ষতি বা কষ্ট বরদাশত করতে পারে না তখন তাদের কাছ থেকে কোন বড় রকমের ত্যাগ ও কুরবানীর আশা কোনক্রমেই করা যেতে পারে না। তাদের কাছে যদি প্রাণদান বা ঘর বাড়ি পরিত্যাগ করার দাবী করা হয় তাহলে তারা সঙ্গে সঙ্গেই সটকে পড়বে এবং ঈমান ও আনুগত্যের পরিবর্তে কুফরী ও নাফরমানির পথ অবলম্বন করবে।
৯৭.
অর্থাৎ যদি এরা সন্দেহ সংশয় ও দ্বিধার পথ পরিহার করে নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে রসূলের আনুগত্যের পথে এগিয়ে চলতো এবং কোন অবস্থায় দোদুল্যমান না হতো, তাহলে এদের জীবন অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা মুক্ত হতো। এদের চিন্তা-ভাবনা, নীতি নৈতিকতা, লেনদেন সবকিছুই একটি স্থায়ী ও সুদৃঢ় বুনিয়াদের ওপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারতো। একটি সত্য সরল রাজপথে দৃঢ়তা ও অবিচলতার সাথে এগিয়ে চলার ফলে যে সাফল্য ও সমৃদ্ধি অর্জিত হয় তা তারা অর্জন করতে সক্ষম হতো। যে ব্যক্তি দ্বিধা ও দোদুল্যমান অবস্থার শিকার হয়, কখনো এ পথে কখনো ওপথে চলে এবং কোন একটি পথের নির্ভুলতা সম্পর্কে তার মনে আস্থারভাব জাগে না, তার সারাটা জীবন কাটে কচু পাতায় রাখা পানির মতো অবস্থায় এবং তার সারা জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
.
৯৮.
অর্থাৎ যখন তারা সংশয় পরিহার করে ঈমান ও নিশ্চিত বিশ্বাস সহকারে রসূলের আনুগত্য করার ফয়সালা করে তখন আল্লাহর অনুগ্রহে তাদের সামনে প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের সরল-সোজা পথ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তখন নিজেদের শক্তি ও মেহনত যে পথে ব্যবহার করলে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ আসল মনযিলে মাকসূদের দিকে এগিয়ে যাবে সে পথটি তারা পরিষ্কার দেখতে পায়।
৯৯.
সিদ্দীক বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায় যে পরম সত্যনিষ্ঠ ও সত্যবাদী। তার মধ্যে সততা ও সত্যপ্রিয়তা পূর্ণমাত্রায় বিরাজিত থাকে। নিজের আচার-আচরণ ও লেনদেনে সে হামেশা সুস্পষ্ট ও সরল সোজা পথ অবলম্বন করে। সে সবসময় সাচ্চা দিলে হক ও ইনসাফের সহযোগী হয়। সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী যে কোন বিষয়ের বিরুদ্ধে সে পর্বত সমান অটল অস্তিত্ব নিয়ে রুখে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে সামান্যতম দুর্বলতাও দেখায় না। সে এমনই পবিত্র ও নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী হয় যে, তার আত্মীয়-অনাত্মীয়, বন্ধু-শত্রু, আপন-পর কেউই তার কাছ থেকে নির্লজ্জ ও নিখাদ সত্যপ্রীতি, সত্য-সমর্থন ও সত্য-সহযোগীতা ছাড়া আর কিছুরইআশঙ্কা করে না।

শহীদ শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে সাক্ষী। শহীদ বলতে এমন ব্যক্তি বুঝায় যে নিজের জীবনের সমগ্র কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তার ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করে। আল্লাহর পথে লড়াই করে প্রাণ উৎসর্গকারীকেও এ কারণেই শহীদ বলা হয় যে, সে প্রাণ উৎসর্গ করে একথা প্রমাণ করে দেয় যে, সে যে জিনিসের ওপর ঈমান এনেছিল তাকে যথার্থই সাচ্চা দিলে সত্য মনে করতো এবং তা তার কাছে এত বেশী প্রিয় ছিল যে, তার জন্য নিজের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি। আবার এমন ধরনের সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকেও শহীদ বলা হয় যারা এতই নির্ভরযোগ্য হয় যে, তারা কোন বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তাকে নির্দ্বিধায় সত্য ও সঠিক বলে স্বীকার করে নেয়া হয়।

সালেহ বা সৎকর্মশীল বলতে এমন ব্যক্তি বুঝায় যে তার নিজের চিন্তাধারা, আকীদা-বিশ্বাস, ইচ্ছা, সংকল্প, কথা ও কর্মের মাধ্যমে সত্য-সরল পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং এই সঙ্গে নিজের জীবনে সৎ ও সুনীতি অবলম্বন করে।

১০০.
অর্থাৎ দুনিয়ায় যারা এ ধরনের লোকদের সঙ্গ লাভ করে এবং আখেরাতেও এদের সাথী হয় তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। অবশ্যিকোন ব্যক্তির অনুভূতি মরে গেলে ভিন্ন কথা, নয়তো অসৎ ও দুশ্চরিত্র লোকদের সাথে দুনিয়ায় জীবন যাপন করা আসলে একটি ভয়াবহ শাস্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। আর আখেরাতে তারা যে পরিণামের সম্মুখীন হবে সেই একই পরিণামের ভাগী হয়ে আখেরাতে তাদের সাথী হওয়ার শাস্তি তো তুলনাবিহীন। তাই তো আল্লাহর নেক্‌কার বান্দারা হামেশা এই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে যে, তারা যেন নেক লোকদের সমাজে বসবাস করতে পারে এবং মৃত্যুর পরও যেন তাদেরই সাথে থাকে।
.
১০১.
উল্লেখ্য এ ভাষণটি এমন এক সময় নাযিল হয়েছিল যখন ওহোদ যুদ্ধের পরাজয়ের পর মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার গোত্রগুলোর সাহস বেড়ে গিয়েছিল এবং বিপদ আপদ চতুর্দিক থেকে মুসলমানদেরকে ঘিরে ফেলেছিল। সে সময় প্রায় প্রতিদিনই নানান ধরনের দুঃসংবাদ আসতো। উমুক গোত্র বিরূপ হয়ে গেছে। মুসলমানদের সাথে এক নাগাড়ে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছিল। তাদের প্রচারকদেরকে দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে দাওয়াত দিয়ে ধোঁকা দিয়ে হত্যা করা হতো। মদীনার বাইরে তাদের জানমালের কোন নিরাপত্তা ছিল না। এ অবস্থায় এসব বিপদের ঢেউয়ের আঘাতে যাতে ইসলামের তরী ডুবে না যায় সেজন্য মুসলমানদের পক্ষ থেকে একটি জোরদার প্রচেষ্টা ও জীবন উৎসর্গকারী সংগ্রাম পরিচালনার প্রয়োজন ছিল।
.
১০২.
এর এক অর্থ এও হতে পারে যে, নিজে তো গড়িমসি করেই, এমন কি অন্যদেরকেও হিম্মতহারা করে দেয়, তাদের বুকে ভয় ঢুকিয়ে দেয় এবং জিহাদ বন্ধ করার জন্য এমন ধরনের কথা বলতে থাকে যার ফলে তারা নিজেদের জায়গায় চুপচাপ বসে থাকে।
.
.
অনুবাদ: