আল-ফাতিহা ১ - আল-বাকারা ১৪১
আল-বাকারা ১৪২ - আল-বাকারা ২৫২
আল-বাকারা ২৫৩ - আল-ইমরান ৯২
আল-ইমরান ৯৩ - আন-নিসা ২৩
আন-নিসা ২৪ - আন-নিসা ১৪৭
আন-নিসা ১৪৮ - আল-মায়িদাহ ৮১
আল-মায়িদাহ ৮২ - আল-আন‘আম ১১০
আল-আন‘আম ১১১ - আল-আ‘রাফ ৮৭
আল-আ‘রাফ ৮৮ - আল-আনফাল ৪০
আল-আনফাল ৪১ - আত-তাওবাহ ৯২
আত-তাওবাহ ৯৩ - হুদ ৫
হুদ ৬ - ইউসুফ ৫২
ইউসুফ ৫৩ - ইবরাহীম ৫২
আল-হিজর ১ - আন-নাহল ১২৮
বনী ইসরাঈল ১ - আল-কাহফ ৭৪
আল-কাহফ ৭৫ - ত্ব-হা ১৩৫
আল-আম্বিয়া ১ - আল-হাজ্জ ৭৮
আল-মুমিনুন ১ - আল-ফুরকান ২০
আল-ফুরকান ২১ - আন-নামল ৫৫
আন-নামল ৫৬ - আল-‘আনকাবুত ৪৫
আল-‘আনকাবুত ৪৬ - আল-আহযাব ৩০
আল-আহযাব ৩১ - ইয়া-সীন ২৭
ইয়া-সীন ২৮ - আয-যুমার ৩১
আয-যুমার ৩২ - ফুসসিলাত ৪৬
ফুসসিলাত ৪৭ - আল-জাসিয়াহ ৩৭
আল-আহকাফ ১ - আয-যারিয়াত ৩০
আয-যারিয়াত ৩১ - আল-হাদীদ ২৯
আল-মুজাদালাহ ১ - আত-তাহরীম ১২
আল-মুলক ১ - আল-মুরসালাত ৫০
আন-নাবা ১ - আন-নাস ৬
তালমুদে এ জাতির যে অবস্থা লিখিত হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এখানে তুলে ধরছি। এ থেকে এ জাতিটি নৈতিক অধঃপতনের কোন্ প্রান্ত সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল তার কিছুটা বিস্তারিত সংবাদ জানা যাবে। তালমুদে বলা হয়েছেঃ একবার আইলাম এলাকার একজন মুসাফির এ জাতিটির এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। পথে রাত হয়ে গেল। ফলে তাকে বাধ্য হয়ে তাদের সাদুম নগরীতে অবস্থান করতে হলো। তার সাথে ছিল তার নিজের পাথেয়। কারোর কাছে সে অতিথি হবার আবেদন জানালো না। সে একটি গাছের নীচে বসে পড়লো। কিন্তু একজন সাদুমবাসী পীড়াপীড়ি করে তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেল। রাত্রে তাকে নিজের কাছে রাখলো এবং প্রভাত হবার আগেই তার গাধাটি তার জীন ও বাণিজ্যিক মালপত্রসহ লোপাট করে দিল। বিদেশী লোকটি শোরগোল করলো। কিন্তু কেউ তার ফরিয়াদ শুনলো না। বরং জনবসতির লোকেরা তার অন্যান্য মালপত্রও লুট করে নিয়ে তাকে বাইরে বের করে দিল।
একবার হযরত সারা হযরত লূতের পরিবারের খবরাখবর সংগ্রহের জন্য নিজের গোলাম ইলিয়াযিরকে সাদুমে পাঠালেন। ইলিয়াযির নগরীতে প্রবেশ করে দেখলেন, একজন সাদুমী একজন বিদেশীকে মারছে। ইলিয়াযির সাদুমীকে বললো, তোমার লজ্জা হয় না তুমি একজন অসহায় মুসাফিরের সাথে এ ব্যবহার করছো? কিন্তু জবাবে সর্বসমক্ষে ইলিয়াযিরের মাথা ফাটিয়ে দেয়া হলো।
একবার এক গরীব লোক কোথাও থেকে তাদের শহরে এলো। কেউ তাকে খাবার দাবারের জন্য কিছু দিল না। সে ক্ষুধায় অবসন্ন হয়ে এক জায়গায় মাটিতে পড়েছিল। এ অবস্থায় হযরত লুতের (আ) এর মেয়ে তাকে দেখতে পেলেন। তিনি তার কাছে খাবার পৌঁছে দিলেন। এজন্য হযরত লূত (আ) ও তাঁর মেয়েকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হলো এবং তাদেরকে এই বলে হুমকি দেয়া হলো যে, এ ধরনের কাজ করতে থাকলে তোমরা আমাদের জনবসতিতে থাকতে পারবে না।
এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা বর্ণনা করার পর তালমূদ রচয়িতা লিখছেন, নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে এ লোকেরা ছিল বড়ই জালেম, ধোঁকাবাজ এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে অসৎ। কোন মুসাফির তাদের এলাকা নিরাপদে অতিক্রম করতে পারতো না। তাদের লোকালয় থেকে কোন গরীব ব্যক্তি এক টুকরো রুটি সংগ্রহ করতে পারতো না। বহুবার এমন দেখা গেছে বাইরের কোন লোক তাদের এলাকায় প্রবেশ করে অনাহারে মারা গেছে এবং তারা তার গায়ের পোশাক খুলে নিয়ে গিয়ে তার লাশকে উলঙ্গ অবস্থায় দাফন করে দিয়েছে। বাইরের ব্যবসায়ীরা দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানে পৌঁছে গেলে সর্বসমক্ষে তাদের মালামাল লুট করে নেয়া হতো এবং তাদের ফরিয়াদের জবাবে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হতো। নিজেদের উপত্যকাকে তারা একটি উদ্যান বানিয়ে রেখেছিল। মাইলের পর মাইলব্যাপী ছিল এ উদ্যান। একমাত্র লূত আলাইহিস সালাম ছাড়া তাদের এসব কাজের প্রতিবাদ করার কেউ ছিল না। এ সমগ্র কাহিনীকে সংক্ষেপ করে কুরআন মজীদে শুধুমাত্র দু’টি বাক্যে প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ
وَمِنْ قَبْلُ كَانُوا يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ
“তারা আগে থেকেই অনেক খারাপ কাজ করে আসছিল।” (হূদঃ ৭৮)
أَئِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ وَتَقْطَعُونَ السَّبِيلَ وَتَأْتُونَ فِي نَادِيكُمُ الْمُنْكَرَ
“তোমরা পুরুষদের দ্বারা যৌন কামনা পূর্ণ করো, মুসাফিরদের মালপত্র লুটপাট করো এবং নিজেদের মজলিসমূহে প্রকাশ্যে দুষ্কর্ম করো।” (আনকাবুতঃ ২৯)