আল আরাফ

২০৬ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
১৯১ ) কি ধরনের নির্বোধ লোক এরা! আল্লাহর শরীক গণ্য করে তাদেরকে, যা কোন জিনিস সৃষ্টি করেনি বরং নিজেরাই সৃষ্ট।
أَيُشْرِكُونَ مَا لَا يَخْلُقُ شَيْـًٔا وَهُمْ يُخْلَقُونَ ١٩١
১৯২ ) যারা তাদেরকে সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেরাও নিজেদেরকে সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না।
وَلَا يَسْتَطِيعُونَ لَهُمْ نَصْرًا وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ ١٩٢
১৯৩ ) যদি তোমরা তাদেরকে সত্য-সরল পথে আসার দাওয়াত দাও, তাহলে তারা তোমাদের পেছনে আসবে না, তোমরা তাদেরকে ডাকো বা চুপ করে থাকো উভয় অবস্থায়ই ফল তোমাদের জন্য সমানই থাকবে। ১৪৭
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَتَّبِعُوكُمْ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ أَدَعَوْتُمُوهُمْ أَمْ أَنتُمْ صَٰمِتُونَ ١٩٣
১৯৪ ) তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকো তারা তো তোমাদের মতই বান্দা। তাদের কাছে দোয়া চেয়ে দেখো, তাদের সম্পর্কে তোমাদের ধারণা যদি সত্য হয়ে থাকে, তবে তারা তোমাদের দোয়ায় সাড়া দিক। তাদের কি পা আছে, যা দিয়ে তারা চলতে পারে?
إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ عِبَادٌ أَمْثَالُكُمْ فَٱدْعُوهُمْ فَلْيَسْتَجِيبُوا۟ لَكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ١٩٤
১৯৫ ) তাদের কি হাত আছে, যা দিয়ে তারা ধরতে পারে? তাদের কি চোখ আছে, যার সাহায্যে তারা দেখতে পারে? তাদের কি কান আছে, যা দিয়ে তারা শুনতে পারে? ১৪৮ হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, “তোমাদের বানানো শরীকদেরকে ডেকে নাও, তারপর তোমরা সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করো এবং আমাকে একদম অবকাশ দিয়ো না।
أَلَهُمْ أَرْجُلٌ يَمْشُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ أَيْدٍ يَبْطِشُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ أَعْيُنٌ يُبْصِرُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ ءَاذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا قُلِ ٱدْعُوا۟ شُرَكَآءَكُمْ ثُمَّ كِيدُونِ فَلَا تُنظِرُونِ ١٩٥
১৯৬ ) আমার সহায় ও সাহায্যকারী সেই আল্লাহ, যিনি কিতাব নাযিল করেছেন এবং তিনি সৎ লোকদের সহায়তা দান করে থাকেন। ১৪৯
إِنَّ وَلِۦِّىَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى نَزَّلَ ٱلْكِتَٰبَ وَهُوَ يَتَوَلَّى ٱلصَّٰلِحِينَ ١٩٦
১৯৭ ) অন্যদিকে তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডেকে থাকো, তারা তোমাদেরও সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেরাও নিজেদের সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না।
وَٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَكُمْ وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ ١٩٧
১৯৮ ) বরং তোমরা যদি তাদেরকে সত্য-সঠিক পথে আসতে বলো, তাহলে তারা তোমাদের কথা শুনতেও পাবে না। বাহ্যত তোমরা দেখছো, তারা তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু আসলে তারা কিছুই দেখছে না।
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَسْمَعُوا۟ وَتَرَىٰهُمْ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ وَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ ١٩٨
১৯৯ ) হে নবী! কোমলতা ও ক্ষমার পথ অবলম্বন করো। সৎকাজের উপদেশ দিতে থাকো এবং মূর্খদের সাথে বিতর্কে জড়িও না।
خُذِ ٱلْعَفْوَ وَأْمُرْ بِٱلْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ ٱلْجَٰهِلِينَ ١٩٩
২০০ ) যদি কখনো শয়তান তোমাকে উত্তেজিত করে, তাহলে আল্লাহর আশ্রয় চাও। তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন।
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ نَزْغٌ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ إِنَّهُۥ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ٢٠٠
১৪৭.
অর্থাৎ মুশরিকদের বাতিল মাবুদদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তাদের পক্ষে কাউকে সঠিক পথ দেখানো এবং নিজেদের অনুগামী ও পূজারীদেরকে পথের সন্ধান দেয়া তো দূরের কথা, তারা তো কোন পথপ্রদর্শকের অনুসরণ করারও যোগ্যতা রাখে না। এমনকি কোন আহ্বানকারীর আহবানের জবাব দেবার ক্ষমতাও তাদের নেই।
১৪৮.
এখানে একটি কথা পরিষ্কারভাবে বুঝে নিতে হবে। শিরক আশ্রিত ধর্মগুলোয় তিনটি জিনিস আলাদা আলাদা পাওয়া যায়, এক, যেসব মূর্তি, ছবি বা নিদর্শনকে পূজা করা হয় এবং যেগুলোকে কেন্দ্র করে সমগ্র পূজা কর্মটি অনুষ্ঠিত হয়। দুই, যেসব ব্যক্তি, আত্মা বা ভাবদেবীকে আসল মাবুদ গণ্য করা হয় এবং মূর্তি, ছবি ইত্যাদির মাধ্যমে যেগুলোর প্রতিনিধিত্ব করা হয়। তিন, এসব মুশরিকী পূজা অনুষ্ঠানাদির গভীরে যেসব আকীদা বিশ্বাস কার্যকর থাকে। কুরআন বিভিন্ন পদ্ধতিতে এ তিনটি জিনিসের ওপর আঘাত হেনেছে। তবে এখানে তার সমালোচনার লক্ষ্য হচ্ছে প্রথম জিনিসটি। অর্থাৎ মুশরিকরা যেসব মূর্তির সামনে পূজার অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করে এবং যাদের সামনে নিজেদের আবেদন-নিবেদন ও নজরানা পেশ করে, তাদেরকেই এখানে সমালোচনার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
১৪৯.
মুশরিকরা নবী (সা.) কে যে হুমকি দিয়ে আসছিল এটা হচ্ছে তার জবাব। তারা বলতো, যদি তুমি আমাদের এসব মাবুদের বিরোধিতা করা থেকে বিরত না হও এবং তাদের বিরুদ্ধে লোকদের বিশ্বাস এভাবে নষ্ট করে যেতে থাকো, তাহলে তুমি তাদের গযবের শিকার হবে এবং তারা তোমাকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে দেবে।
অনুবাদ: