আয়াত
১১১ ) আজ তাদের সে সবের ফল আমি এই দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম। ৯৯
إِنِّى جَزَيْتُهُمُ ٱلْيَوْمَ بِمَا صَبَرُوٓا۟ أَنَّهُمْ هُمُ ٱلْفَآئِزُونَ ١١١
১১২ ) তারপর আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন, বলো, পৃথিবীতে তোমরা কত বছর থাকলে?
قَٰلَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِى ٱلْأَرْضِ عَدَدَ سِنِينَ ١١٢
১১৩ ) তারা বলবে, “এক দিন বা দিনেরও কিছু অংশে আমরা সেখানে অবস্থান করেছিলাম, ১০০ গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করে নিন।”
قَالُوا۟ لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَسْـَٔلِ ٱلْعَآدِّينَ ١١٣
১১৪ ) বলবেন, “অল্পক্ষণই অবস্থান করেছিলে, হায়! যদি তোমরা একথা সে সময় জানতে। ১০১
قَٰلَ إِن لَّبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا لَّوْ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ١١٤
১১৫ ) তোমরা কি মনে করেছিলে আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি ১০২ এবং তোমাদের কখনো আমার দিকে ফিরে আসতে হবে না?”
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَٰكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ ١١٥
১১৬ ) কাজেই প্রকৃত বাদশাহ আল্লাহ হচ্ছেন উচ্চতর ও উন্নততর, ১০৩ তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, সম্মানিত আরশের তিনিই মালিক
فَتَعَٰلَى ٱللَّهُ ٱلْمَلِكُ ٱلْحَقُّ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلْعَرْشِ ٱلْكَرِيمِ ١١٦
১১৭ ) এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কোন মাবুদকে ডাকে, যার পক্ষে তার কাছে কোন যুক্তি প্রমাণ নেই, ১০৪ তার হিসেব রয়েছে তার রবের কাছে। ১০৫ এ ধরনের কাফের কখনো সফলকাম হতে পারে না। ১০৬
وَمَن يَدْعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرْهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓ إِنَّهُۥ لَا يُفْلِحُ ٱلْكَٰفِرُونَ ١١٧
১১৮ ) হে মুহাম্মাদ (সাঃ) ! বলো, “হে আমার রব! ক্ষমা করো ও করুণা করো এবং তুমি সকল করুণাশীলের চাইতে বড় করুণাশীল।” ১০৭
وَقُل رَّبِّ ٱغْفِرْ وَٱرْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ ٱلرَّٰحِمِينَ ١١٨
৯৯ .
আবার একই বিষয়বস্তুর পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। অর্থাৎ কে হবে সাফল্যের অধিকারী এবং কে ক্ষতির অধিকারী।
১০০ .
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা ত্বা-হা, ৮০টীকা।
১০১.
অর্থাৎ দুনিয়ায় আমার নবী ক্রমাগতভাবে তোমাদের বলেছেন যে, দুনিয়ার জীবন নিছক হাতে গোনা কয়েকটি পরীক্ষার ঘণ্টা মাত্র। একেই আসল জীবন এবং একমাত্র জীবন মনে করেবসো না। আসল জীবন হচ্ছে আখেরাতের জীবন। সেখানে তোমাদের চিরকাল থাকতে হবে। এখানকার সাময়িকলাভ ও স্বাদ-আহলাদের লোভে এমন কাজ করো না যা আখেরাতের চিরন্তন জীবনে তোমাদের ভবিষ্যত ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু তখন তোমরা তাঁর কথায় কান দাওনি। তোমরা এ আখেরাতের জগত অস্বীকার করতে থেকেছো। তোমরা মৃত্যুপরের জীবনকে একটি মনগড়া কাহিনী মনে করেছো। তোমরা নিজেদের এ ধারণার ওপর জোর দিতে থেকেছো যে, জীবন-মৃত্যুর ব্যাপারটি নিছক এ দুনিয়ার সাথে সম্পর্কিত এবং এখানে চুটিয়ে মজা লুটে নিতে হবে। কাজেই এখন আর অনুশোচনা করে কী লাভ। তখনই ছিল সাবধান হবার সময় যখন তোমরা দুনিয়ার কয়েক দিনেরজীবনের ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে এখানকার চিরন্তন জীবনের লাভ বিসর্জন দিচ্ছিলে।
১০২.
মূলে-----শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, “খেলাচ্ছলে” এবং দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, “খেলার জন্য”। প্রথম অবস্থায় আয়াতের অর্থ হবে, “তোমরা কি মনে করেছিলে, তোমাদেরকে এমনিই খেলাচ্ছলেআমোদ-আহলাদ করতে করতে তৈরী করা হয়েছে, তোমাদের সৃষ্টির কোন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নেই, নিছক একটি উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি হিসেবে তৈরী করে তোমাদের চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন? ” দ্বিতীয় অবস্থায় এর অর্থ হবে, “তোমরা কি একথা মনে করতে যে, তোমাদেরকে নিছক খেলাধূলা, আমোদ-আহলাদ, ফূর্তি ও এমন সব আজেবাজে অর্থহীন কাজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে যেগুলোর কোনদিন কোন ফল হবে না? ”
১০৩.
অর্থাৎ তিনি কোন বাজে কাজ করার ঊর্ধ্বে অবস্থান করেন এবং তাঁর কোন বান্দা ও গোলাম তাঁর প্রভুত্বের কার্যক্রমে তাঁর সাথে শরীক হবে এরও অনেক ঊর্ধ্বে তাঁর অবস্থান।
১০৪ .
এর দ্বিতীয় অনুবাদ এই হতে পারেঃ “যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে মাবুদ হিসেবে ডাকে তার জন্য তার নিজের এ কাজের সপক্ষে কোন যুক্তি ও প্রমাণ নেই।
১০৫ .
অর্থাৎ সে জবাবদিহি ও হিসেব-নিকেশ থেকে রক্ষা পেতে পারে না।
১০৬ .
আবার সে একই বিষয়বস্তুর পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে অর্থাৎ আসলে কে সাফল্য লাভকারী এবং কে তা থেকে বঞ্চিত?
১০৭.
এখানে এ দোয়ার সূক্ষ্ম ও গভীর অর্থ দৃষ্টিসম্মুখে থাকা উচিত। এখনই কয়েক ছত্র ওপরে বলা হয়েছে, আখেরাতে আল্লাহ নবী ﷺ ও সাহাবায়ে কেরামের দুশমনদেরকে একথা বলে মাফ করে দিতে অস্বীকার করবেন যে, আমার যেসব বান্দা এ দোয়া করতো তোমরা তাদেরকে বিদ্রূপ করতে। এরপর এখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (ও আনুসঙ্গিকভাবে সাহাবায়ে কেরামকেও) এ হুকুম দেয়া হচ্ছে যে, ঠিক সে একই দোয়া করো যার কথা আমি এইমাত্র বলে এসেছি। আমার পরিষ্কার সতর্কবাণী সত্ত্বেও এখন যদি তারা তোমাকে বিদ্রূপ করতে থাকে তাহলে আখেরাতে যেন তারা নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী মোকদ্দমা তৈরী করে দেবে।