আয়াত
১০১ ) তারপর যখনই শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন তাদের মধ্যে আর কোন আত্মীয়তা বা সম্পর্কে থাকবে না এবং তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেসও করবে না। ৯৪
فَإِذَا نُفِخَ فِى ٱلصُّورِ فَلَآ أَنسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَآءَلُونَ ١٠١
১০২ ) সে সময় যাদের পাল্লা ভারী হবে ৯৫ তারাই সফলকাম হবে।
فَمَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ ١٠٢
১০৩ ) আর যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই হবে এমনসব লোক যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। ৯৬ তারা জাহান্নামে থাকবে চিরকাল।
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ فِى جَهَنَّمَ خَٰلِدُونَ ١٠٣
১০৪ ) আগুন তাদের মুখের চামড়া জ্বালিয়ে দেবে এবং তাদের চোয়াল বাইরে বের হয়ে আসবে। ৯৭
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَٰلِحُونَ ١٠٤
১০৫ ) ----“তোমরা কি সেসব লোক নও যাদের কাছে আমার আয়াত শুনানো হলেই বলতে এটা মিথ্যা?”
أَلَمْ تَكُنْ ءَايَٰتِى تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ فَكُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ ١٠٥
১০৬ ) তারা বলবে, “হে আমাদের রব! আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের ওপর ছেয়ে গিয়েছিল, আমরা সত্যিই ছিলাম বিভ্রান্ত সম্প্রদায়।
قَالُوا۟ رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَآلِّينَ ١٠٦
১০৭ ) হে পরওয়ারদিগার! এখন আমাদের এখান থেকে বের করে দাও, আমরা যদি আবার এ ধরনের অপরাধ করি তাহলে আমরা জালেম হবো।
رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَٰلِمُونَ ١٠٧
১০৮ ) আল্লাহ জবাব দেবেন, দূর হয়ে যাও আমার সামনে থেকে, পড়ে থাকো ওরি মধ্যে এবং কথা বলো না আমার সাথে। ৯৮
قَالَ ٱخْسَـُٔوا۟ فِيهَا وَلَا تُكَلِّمُونِ ١٠٨
১০৯ ) তোমরা হচ্ছো তারাই, যখন আমার কিছু বান্দা বলতো, হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের প্রতি করুণা করো, তুমি সকল করুণাশীলের চাইতে বড় করুণাশীল,
إِنَّهُۥ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْ عِبَادِى يَقُولُونَ رَبَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلرَّٰحِمِينَ ١٠٩
১১০ ) তখন তোমরা তাদেরকে বিদ্রূপ করতে, এমনকি তাদের প্রতি জিদ তোমাদের আমার কথাও ভুলিয়ে দেয় এবং তোমরা তাদেরকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে থাকতে।
فَٱتَّخَذْتُمُوهُمْ سِخْرِيًّا حَتَّىٰٓ أَنسَوْكُمْ ذِكْرِى وَكُنتُم مِّنْهُمْ تَضْحَكُونَ ١١٠
৯৪.
এর মানে এ নয় যে, বাপ আর বাপ থাকবে না এবং ছেলে ছেলে থাকবে না। বরং এর অর্থ হচ্ছে, সে সময় বাপ ছেলের কোন কাজে লাগবে না এবং ছেলে বাপের কোন কাজেলাগবে না। প্রত্যেকে এমনভাবে নিজের অবস্থার শিকার হবে যে, একজন অন্যজনের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা তো দূরের কথা কারোর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করার মতো চেতনাওথাকবে না। অন্যান্য স্থানে এ বিষয়টিকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছেঃ------------“কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু নিজের বন্ধুকে জিজ্ঞেস করবে না।” (আল মা’আরিজ, ১০ আয়াত)।
----------------------
“সেদিন অপরাধীর মন তার নিজের সন্তান, স্ত্রী, ভাই ও নিজের সহায়তাকারী নিকটতম আত্মীয় এবং সারা দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে এবং নিজেকে আযাব থেকে মুক্ত করতে চাইবে।” (আল মা’আরিজ, ১১থেকে ১৪ আয়াত)
----------------------
“সেদিন মানুষ নিজের ভাই, মা, বাপ, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের থেকে পালাতে থাকবে। সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের অবস্থার মধ্যে এমনভাবে লিপ্ত থাকবে যে, তার কারোর কথা মনে থাকবে না।” (আবাসা, ৩৪ থেকে ৩৭)
৯৫ .
অর্থাৎ যাদের নেক কাজের পাল্লা অসৎকাজের পাল্লা থেকে বেশী ভারী হবে।
৯৬ .
সূরার শুরুতে এবং তারপর চতুর্থ রুকূ”তে সাফল্য ও ক্ষতির যে মানদন্ড পেশ করা হয়েছে তাকে আর একবার মনের মধ্যে চাংগা করে নিন।
৯৭ .
মূলে-----শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।-----আরবী ভায়ায় এমন চেহারাকে বলা হয় যার চামড়া আলাদা হয়ে গেছে এবং দাঁত বাইরে বের হয়ে এসেছে। যেমন খাশির ভুনা মাথা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা.) এক ব্যক্তি “কালেহ”-এর অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ---------------অর্থাৎ “তুমি কি ভুনা খাশির কল্লা দেখোনি? ”
৯৮ .
অর্থাৎ নিজের মুক্তির জন্য আবেদন নিবেদন করো না। নিজের ওজর পেশ করো না। চিরকালের জন্য একেবারেই নীরব হয়ে যাও, এ অর্থ নয়। হাদীসের বর্ণনায় বলা হয়েছে, এ হবে তাদের শেষ কথাবার্তা। এরপর তাদের কন্ঠ চিরকালের জন্য স্তব্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু একথা বাহ্যত কুরআন বিরোধী। কারণ সামনের দিকে কুরআন নিজেই তাদের ও আল্লাহর মধ্যকার কথাবার্তা উদ্ধৃত করছে। কাজেই হয় হাদীসের এ বর্ণনা সঠিক নয় অথবা এর অর্থ এই যে, এরপর তারা মুক্তির জন্য কোন আবেদন নিবেদন করতে পারবে না।