আল মুরসালাত

৫০ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
১১ ) এবং রসূলের হাজির হওয়ার সময় এসে পড়বে।
وَإِذَا ٱلرُّسُلُ أُقِّتَتْ ١١
১২ ) (সেদিন ঐ ঘটনাটি সংঘটিত হবে) । কোন দিনের জন্য একাজ বিলম্বিত করা হয়েছে?
لِأَىِّ يَوْمٍ أُجِّلَتْ ١٢
১৩ ) ফায়সালার দিনের জন্য।
لِيَوْمِ ٱلْفَصْلِ ١٣
১৪ ) তুমি কি জান সে ফায়সালার দিনটি কি?
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا يَوْمُ ٱلْفَصْلِ ١٤
১৫ ) সেদিন ধ্বংস অপেক্ষা করছে মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য।
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ ١٥
১৬ ) আমি কি পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করিনি?
أَلَمْ نُهْلِكِ ٱلْأَوَّلِينَ ١٦
১৭ ) আবার পরবর্তী লোকদের তাদের অনুগামী করে দেব।
ثُمَّ نُتْبِعُهُمُ ٱلْءَاخِرِينَ ١٧
১৮ ) অপরাধীদের সাথে আমরা এরূপই করে থাকি।
كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِٱلْمُجْرِمِينَ ١٨
১৯ ) সেদিন ধ্বংস অপেক্ষা করছে মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য। ১০
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ ١٩
২০ ) আমি কি তোমাদেরকে এক নগণ্য পানি থেকে সৃষ্টি করিনি
أَلَمْ نَخْلُقكُّم مِّن مَّآءٍ مَّهِينٍ ٢٠
৬ .
কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে একথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, হাশরের ময়দানে যখন মানব জাতির মামলা আল্লাহর দরবারে পেশ করা হবে তখন প্রত্যেক জাতির রসূলকে সাক্ষ্যদানের জন্য হাজির করা হবে। উদ্দেশ্য, তাঁরা যে মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন তার সাক্ষ্য দেবেন। বিপথগামী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে এটা হবে আল্লাহ‌ তাআলার সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বড় প্রমাণ। এর দ্বারা প্রমাণ করা হবে যে, তার ভ্রান্ত আচরণের জন্য সে নিজেই দায়ী। অন্যথায় আল্লাহ‌ তাআলার পক্ষ থেকে তাকে সাবধান করার ব্যাপারে কোন ত্রুটি করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে হলে নিম্নবর্ণিত স্থানসমূহ দেখুন। তাফহীমুল কুরআন, আল আরাফ আয়াত ১৭২, ১৭৩, টীকা ১৩৪, ১৩৫; আয যুমার, আয়াত ৬৯, টীকা ৮০;আল মুলক, আয়াত ৮, টীকা ১৪।
৭.
অর্থাৎ সেসব লোকের জন্য যারা সেদিনের আগমনের খবরকে মিথ্যা বলে মনে করেছিল এবং এ ভেবে পৃথিবীতে জীবন যাপন করে চলছিল যে, এমন সময় কখনো আসবে না যখন প্রভুর সামনে হাজির হয়ে নিজের কাজ-কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
৮.
এটা আখেরাতের সপক্ষে ঐতিহাসিক প্রমাণ। এর অর্থ হলো, এ দুনিয়াতেই তোমরা নিজেদের ইতিহাসের প্রতি একবার তাকিয়ে দেখো। যেসব জাতি আখেরাতকে অস্বীকার করে এ দুনিয়ার জীবনকেই প্রকৃত জীবন মনে করেছে এবং এ দুনিয়াতে প্রকাশিত ফলাফলকে ভাল ও মন্দের মাপকাঠি ধরে নিয়ে সে অনুসারে নিজেদের নৈতিক আচরণ নিরূপণ করেছে স্থান-কাল নির্বিশেষে তারা সবাই শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, প্রকৃতপক্ষে আখেরাত এক বাস্তব সত্য। যারা একে উপেক্ষা করে কাজ করে তারা ঠিক তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় সে ব্যক্তি যে চোখ বন্ধ করে বাস্তবকে অস্বীকার করে চলে। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা ইউনুস, টীকা ১২; আন নামল, টীকা ৮৬; আর রুম, টীকা ৮, সাবা, টীকা২৫।)
৯ .
অর্থাৎ এটা আমার স্থায়ী নীতি ও বিধান। আখেরাতের অস্বীকৃতি অতীত জাতিগুলোর জন্য যেভাবে ধ্বংসাত্মক প্রমাণিত হয়েছে অনুরূপ আনাগত জাতিগুলোর জন্যও তা ধ্বংসাত্মক প্রমাণিত হবে। পূর্বেও কোন জাতি এ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে না।
১০ .
এখানে এ আয়াতটির অর্থ হলো, দুনিয়াতে তাদের যে পরিণতি হয়েছে কিংবা ভবিষ্যতে হবে তা তাদের আসল শাস্তি নয়। তাদের ওপর আসল ধ্বংস নেমে আসবে চূড়ান্ত ফায়সালার দিনে। এ পৃথিবীতে যে শাস্তি দেয়া হয় তার অবস্থা হলো, যখন কোন ব্যক্তি একের পর এক অপরাধ করতে থাকে এবং কোন ভাবেই সে তার ভ্রষ্ট ও বিকৃত আচরণ থেকে বিরত হয় না তখন শেষ অবধি তাকে গ্রেফতার করা হয়। যে আদালতে তার মামলার চূড়ান্ত ফয়সালা হবে এবং তার সমস্ত কৃতকর্মের শাস্তি দেয়া হবে তা এ দুনিয়ায় না আখেরাতে কায়েম হবে এবং সেটিই হবে তার ধ্বংসের আসল দিন। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, আল আরাফ, টীকা ৫-৬;হুদ, টীকা ১০৫।)
অনুবাদ: