আয়াত
৪১ ) সেখানে তারা অপরাধীদের জিজ্ঞেস করতে থাকবে ৩২
عَنِ ٱلْمُجْرِمِينَ ٤١
৪২ ) কিসে তোমাদের দোযখে নিক্ষেপ করলো।
مَا سَلَكَكُمْ فِى سَقَرَ ٤٢
৪৩ ) তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না। ৩৩
قَالُوا۟ لَمْ نَكُ مِنَ ٱلْمُصَلِّينَ ٤٣
৪৪ ) অভাবীদের খাবার দিতাম না। ৩৪
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ ٱلْمِسْكِينَ ٤٤
৪৫ ) সত্যের বিরুদ্ধে অপবাদ রটনাকারীদের সাথে মিলে আমরাও রটনা করতাম;
وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلْخَآئِضِينَ ٤٥
৪৬ ) প্রতিফল দিবস মিথ্যা মনে করতাম।
وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ ٱلدِّينِ ٤٦
৪৭ ) শেষ পর্যন্ত আমরা সে নিশ্চিত জিনিসের মুখোমুখি হয়েছি। ৩৫
حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلْيَقِينُ ٤٧
৪৮ ) সে সময় সুপারিশকারীদের কোন সুপারিশ তাদের কাজে আসবে না। ৩৬
فَمَا تَنفَعُهُمْ شَفَٰعَةُ ٱلشَّٰفِعِينَ ٤٨
৪৯ ) এদের হলো কি যে এরা এ উপদেশবাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে
فَمَا لَهُمْ عَنِ ٱلتَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ ٤٩
৫০ ) যেন তারা বাঘের ভয়ে
كَأَنَّهُمْ حُمُرٌ مُّسْتَنفِرَةٌ ٥٠
৩২.
ইতিপূর্বে কুরআন মজীদের কয়েকটি স্থানে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে যে, জান্নাত ও জাহান্নামের অধিবাসীরা পরস্পর থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করা সত্ত্বেও যখনই ইচ্ছা করবে কোন যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই একে অপরকে দেখতে পাবে এবং সরাসরি কথাবার্তাও বলতে পারবে। উদাহরণ হিসেবে দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল আ’রাফ, আয়াত ৪৪ থেকে ৫০, টীকা ৩৫; আস সাফ্ফাত, আয়াত ৫০ থেকে ৫৭, টীকা ৩২।
৩৩.
এর অর্থ হলো, যেসব মানুষ আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং তাঁর কিতাবকে মেনে নিয়ে মানুষের কাছে আল্লাহর প্রাথমিক হক অর্থাৎ নামায ঠিকমত আদায় করেছে আমরা তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। এক্ষেত্রে একথাটি খুব ভাল করে বুঝে নেয়া দরকার যে, কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত নামায পড়তেই পারে না যতক্ষণ না সে ঈমান আনে। তাই নামাযী হওয়ার অনিবার্য অর্থ হচ্ছে ঈমানাদার হওয়া। কিন্তু নামাযী না হওয়াকে দোযখে যাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করার মাধ্যমে স্পষ্ট করে একথাই বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি নামায না পড়লে ঈমানদার হওয়া সত্ত্বেও সে দোখয থেকে বাঁচতে পারবে না।
৩৪ .
এ থেকে জানা যায় কোন মানুষকে ক্ষুধার্ত দেখার পর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও খাবার না দেয়া ইসলামের দৃষ্টিতে কত বড় গোনাহ যে, মানুষের দোযখে যাওয়ার কারণসমূহের মধ্যে এটাকেও একটা কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৫.
অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত আমরা এ নীতি ও কর্মপন্থা অনুসরণ করেছি। শেষ পর্যন্ত সে নিশ্চিত বিষয়টি আমাদের সামনে এসে হাজির হয়েছে যে সম্পর্কে আমরা গাফিল হয়ে পড়েছিলাম। নিশ্চিত বিষয় বলে মৃত্যু ও আখেরাত উভয়টিকেই বুঝানো হয়েছে।
৩৬.
অর্থাৎ যারা মৃত্যু পর্যন্ত এ নীতি অনুসরণ করেছে তাদের জন্য শাফায়াত করলেও সে ক্ষমা লাভ করতে পারবে না। শাফায়াত সম্পর্কে কুরআন মজীদের বহু স্থানে এত স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, কে শাফায়াত করতে সক্ষম আর কে সক্ষম নয়, কোন্ অবস্থায় শাফায়াত করা যায় আর কোন্ অবস্থায় যায় না। কার জন্য করা যায় আর কার জন্য যায় না এবং কার জন্য তা কল্যাণকর আর কার জন্য তা কল্যাণকর নয় তা জানা কারো জন্য কঠিন নয়। পৃথিবীতে মানুষের গোমরাহীর বড় বড় কারণের মধ্যে একটি হলো শাফায়াত সম্পর্কে ভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস পোষণ। তাই বিষয়টি কুরআন এত খোলামেলা ও স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছে যে, এক্ষেত্রে সন্দেহের আর কোন অবকাশই বাকী রাখেনি। উদাহরণ স্বরূপ নিচে নির্দেশিত আয়াতসমূহ দেখুন, সূরা আল বাকারাহ, ২৫৫; আল আন’আম, ৯৪; আল আ’রাফ, ৫৩; ইউনুস, ৩ ও ১৮; মারয়াম, ৮৭; ত্বা-হা, ১০৯; আল আম্বিয়া, ২৮; সাবা, ২৩; আয যুমার, ৪৩ ও ৪৪, আল মু’মিন, ১৮; আদ দুখান, ৮৬; আন নাজম, ২৬ এবং আন নাবা, ৩৭ ও ৩৮। যেসব স্থানে এসব আয়াত আছে তাফহীমুল কুরআনের সেসব জায়গায় আমরা বিস্তারিতভাবে তার ব্যাখ্যা পেশ করেছি।