আয়াত
১১ ) আমাকে এবং সে ব্যক্তিকে ১০ ছেড়ে দাও যাকে আমি একা সৃষ্টি করেছি। ১১
ذَرْنِى وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًا ١١
১২ ) তাকে অঢেল সম্পদ দিয়েছি
وَجَعَلْتُ لَهُۥ مَالًا مَّمْدُودًا ١٢
১৩ ) এবং আরো দিয়েছি সবসময় কাছে থাকার মত অনেক পুত্র সন্তান। ১২
وَبَنِينَ شُهُودًا ١٣
১৪ ) তার নেতৃত্বের পথ সহজ করে দিয়েছি।
وَمَهَّدتُّ لَهُۥ تَمْهِيدًا ١٤
১৫ ) এরপরও সে লালায়িত, আমি যেন তাকে আরো বেশী দান করি। ১৩
ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ ١٥
১৬ ) তা কখনো নয়, সে আমার আয়াতসমূহের সাথে শত্রুতা পোষণ করে।
كَلَّآ إِنَّهُۥ كَانَ لِءَايَٰتِنَا عَنِيدًا ١٦
১৭ ) অচিরেই আমি তাকে এক কঠিন স্থানে চড়িয়ে দেব।
سَأُرْهِقُهُۥ صَعُودًا ١٧
১৮ ) সে চিন্তা-ভাবনা করলো এবং একটা ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো।
إِنَّهُۥ فَكَّرَ وَقَدَّرَ ١٨
১৯ ) অভিশপ্ত হোক সে, সে কি ধরনের ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো?
فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ ١٩
২০ ) আবার অভিশপ্ত হোক সে, সে কি ধরনের ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো?
ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ ٢٠
১০ .
এখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলা হচ্ছেঃ হে নবী, কাফেরদের সে সম্মেলনে যে ব্যক্তি (ওয়ালীদ ইবনে মুগীরা) তোমাকে বদনাম করার উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছিল যে, সমগ্র আরব থেকে আগত হাজীদের কাছে তোমাকে যাদুকর বলে প্রচার করতে হবে তার ব্যাপারটা তুমি আমার ওপর ছেড়ে দেও। এখন আমার কাজ হলো, তার সাথে বুঝাপড়া করা। তোমার নিজের এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করার কোন প্রয়োজন নেই।
১১.
একথাটির দু’টি অর্থ হতে পারে এবং দু’টি অর্থই সঠিক। এক, আমি যখন তাকে সৃষ্টি করেছিলাম সে সময় কোন প্রকার ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি এবং মর্যাদা ও নেতৃত্বের অধিকারী ছিল না। দুই, একমাত্র আমিই তার সৃষ্টিকর্তা। অন্য যেসব উপাস্যের খোদায়ী ও প্রভুত্ব কায়েম রাখার জন্য সে তোমার দেয়া তাওহীদের দাওয়াতের বিরোধিতায় এত তৎপর, তাদের কেউই তাকে সৃষ্টি করার ব্যাপারে আমার সাথে শরীক ছিল না।
১২.
ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার দশ বারটি পুত্র সন্তান ছিল। তাদের মধ্যে হযরত খালেদ ইবনে ওয়ালীদ ইতিহাসে অনেক বেশী প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। এসব পুত্র সন্তানদের জন্য شهود শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর কয়েকটি অর্থ হতে পরে। এক, রুযী রোজগারের জন্য তাদের দৌড় ঝাপ করতে বা সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকতে কিংবা বিদেশ যাত্রা করতে হয় না। তাদের বাড়ীতে এত খাদ্য মজুদ আছে যে, তারা সর্বক্ষণ বাপের কাছে উপস্থিত থাকে এবং তাকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকে। দুই, তার সবগুলো সন্তানই নামকরা এবং প্রভাবশালী, তারা বাপের সাথে দরবার ও সভা-সমিতিতে উপস্থিত থাকে। তিন, তারা সবাই এমন সামাজিক পদমর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি যে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সাক্ষ্য বা মতামত গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
১৩.
একথার একটি অর্থ হলো, এসব সত্ত্বেও তার লালসা ও আকাংখার শেষ নেই। এত কিছু লাভ করার পরও সে সর্বক্ষণ এ চিন্তায় বিভোর যে, দুনিয়ার সব নিয়ামত ও ভোগের উপকরণ সে কিভাবে লাভ করতে পারবে। দুই, হযরত হাসান বসরী ও আরো কয়েকজন মনীষী বর্ণনা করেছেন যে, সে বলতোঃ মুহাম্মাদের ﷺ একথা যদি সত্য হয়ে থাকে যে, মৃত্যুর পর আরো একটি জীবন আছে এবং সেখানে জান্নাত বলেও কিছু একটা থাকবে তাহলে সে জান্নাত আমার জন্যই তৈরী করা হয়েছে।