১১ ) এই কুরআন পুরাপুরি হেদায়াতের কিতাব। সেই লোকদের জন্য কঠিন জ্বালাদায়ক আযাব রয়েছে। যারা নিজেদের রব-এর আয়াতগুলোকে মেনে নিতে অস্বীকার করছে।
هَـٰذَا هُدًۭى ۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِـَٔايَـٰتِ رَبِّهِمْ لَهُمْ عَذَابٌۭ مِّن رِّجْزٍ أَلِيمٌ ١١
১২ ) তিনিই তো আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য সমুদ্রকে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর নির্দেশে জাহাজসমূহ সেখানে চলে ১৩ আর তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে ১৪ এবং কৃতজ্ঞ হতে পার।
۞ ٱللَّهُ ٱلَّذِى سَخَّرَ لَكُمُ ٱلْبَحْرَ لِتَجْرِىَ ٱلْفُلْكُ فِيهِ بِأَمْرِهِۦ وَلِتَبْتَغُوا۟ مِن فَضْلِهِۦ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ١٢
১৩ ) তিনি যমীন ও আসমানের সমস্ত জিনিসকেই তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন, ১৫ সবই নিজের পক্ষ থেকে। ১৬ এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য বড় বড় নিদর্শন রয়েছে। ১৭
وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًۭا مِّنْهُ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّقَوْمٍۢ يَتَفَكَّرُونَ ١٣
১৪ ) হে নবী, যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে বলে দাও, যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন কঠিন দিন আসার আশঙ্কা করে না ১৮ তাদের আচরণ সমূহ যেন ক্ষমা করে দেয় যাতে আল্লাহ নিজেই একটি গোষ্ঠীকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেন। ১৯
قُل لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يَغْفِرُوا۟ لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ ٱللَّهِ لِيَجْزِىَ قَوْمًۢا بِمَا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ ١٤
১৫ ) যে সৎকাজ করবে সে নিজের জন্যই করবে। আর যে অসৎ কাজ করবে তার পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে। সবাইকে তো তার রবের কাছেই ফিরে যেতে হবে।
مَنْ عَمِلَ صَـٰلِحًۭا فَلِنَفْسِهِۦ ۖ وَمَنْ أَسَآءَ فَعَلَيْهَا ۖ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ ١٥
১৬ ) ইতিপূর্বে আমি বনী ইসরাঈলদের কিতাব, হুকুম ২০ ও নবুওয়াত দান করেছিলাম। আমি তাদেরকে উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলাম, সারা দুনিয়ার মানুষের ওপর মর্যাদা দান করেছিলাম ২১
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْحُكْمَ وَٱلنُّبُوَّةَ وَرَزَقْنَـٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَـٰتِ وَفَضَّلْنَـٰهُمْ عَلَى ٱلْعَـٰلَمِينَ ١٦
১৭ ) এবং দ্বীনের ব্যাপারে স্পষ্ট হিদায়াত দান করেছিলাম। অতঃপর তাদের মধ্যে যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিলো তা (অজ্ঞতার কারণে নয়, বরং) জ্ঞান আসার পরে হয়েছিলো এবং এ কারণে হয়েছিলো যে, তারা একে অপরের ওপর জুলুম করতে চাচ্ছিলো। ২২ তারা যেসব ব্যাপারে মতভেদ করে আসছিলো আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই সব ব্যাপারে ফায়সালা করবেন।
وَءَاتَيْنَـٰهُم بَيِّنَـٰتٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْرِ ۖ فَمَا ٱخْتَلَفُوٓا۟ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِى بَيْنَهُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ فِيمَا كَانُوا۟ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ ١٧
১৮ ) অতঃপর হে নবী, আমি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাকে একটি সুস্পষ্ট রাজপথের (শরীয়তের) ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। ২৩ সুতরাং তুমি তার ওপরেই চলো এবং যারা জানে না তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না।
ثُمَّ جَعَلْنَـٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْرِ فَٱتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ ١٨
১৯ ) আল্লাহর মোকাবিলায় তারা তোমরা কোন কাজেই আসতে পারে না। ২৪ জালেমরা একে অপরের বন্ধু এবং মুত্তাকীনদের বন্ধু আল্লাহ।
إِنَّهُمْ لَن يُغْنُوا۟ عَنكَ مِنَ ٱللَّهِ شَيْـًۭٔا ۚ وَإِنَّ ٱلظَّـٰلِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍۢ ۖ وَٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلْمُتَّقِينَ ١٩
২০ ) এটা সব মানুষের জন্য দূরদৃষ্টির আলো এবং যারা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে তাদের জন্য হিদায়াত ও রহমত। ২৫
هَـٰذَا بَصَـٰٓئِرُ لِلنَّاسِ وَهُدًۭى وَرَحْمَةٌۭ لِّقَوْمٍۢ يُوقِنُونَ ٢٠
১৩.
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, বনী ইসরাঈল, টীকা ৮৩, আর রূম; টীকা ৬৯; লোকমান, টীকা ৫৫, আল মু’মিন, টীকা ১১০, আশ শূরা, টীকা ৫৪।
১৪.
অর্থাৎ সমুদ্র পথে বাণিজ্য, মৎস্য শিকার, ডুবুরীর কাজ, জাহাজ চালনা এবং অন্যান্য উপায়ে রিযিক অর্জনের চেষ্টা করো।
১৫.
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা ইবরাহীম, টীকা-৪৪, লোকমান, টীকা ৩৫।
১৬.
এ আয়াতাংশের দু’টি অর্থ। একটি অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর এই দান দুনিয়ার বাদশাহদের দানের মত নয়। কেননা, তারা প্রজার নিকট থেকে নেয়া সম্পদ প্রজাদেরই কিছু লোককে দান করে থাকে। বিশ্বজাহানের সমস্ত সম্পদ আল্লাহর নিজের সৃষ্টি। তিনি নিজের পক্ষ থেকে তা মানুষকে দান করেছেন। আরেকটি অর্থ হচ্ছে, এসব নিয়ামত সৃষ্টি করার ব্যাপারে যেমন কেউ আল্লাহর শরীক নয়, তেমনি মানুষের জন্য এগুলোকে অনুগত করার ব্যাপারেও অন্য কোন সত্তার কোনো প্রকার দখল বা কর্তৃত্ব নেই। আল্লাহ একাই এ সবের স্রষ্টা এবং তিনিই নিজের পক্ষ থেকে তা মানুষকে দান করেছেন।
১৭.
অর্থাৎ অনুগতকরণে এবং এসব জিনিসকে মানুষের জন্য কল্যাণকর বানানোর মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য বড় বড় নিদর্শন রয়েছে। এসব নিদর্শন পরিষ্কারভাবে এ সত্যের প্রতি ইঙ্গিত দান করছে যে, পৃথিবী থেকে আসমান পর্যন্ত বিশ্বজাহানের সমস্ত বস্তু এবং শক্তির স্রষ্টা, মালিক, প্রশাসক ও ব্যবস্থাপক একমাত্র আল্লাহ, যিনি সব কিছুকেই একটি নিয়ম-বিধির অনুগত করে রেখেছেন এবং সেই আল্লাহই মানুষের রব-যিনি তাঁর অসীম ক্ষমতা, জ্ঞান ও কৌশল এবং রহমতে এসব বস্তু ও শক্তিসমূহকে মানুষের জীবন, জীবিকা, আয়েশ-আরাম, উন্নতি ও তাহযীব-তমদ্দুনের উপযোগী ও সহায়ক বানিয়েছেন এবং একা তিনিই মানুষের দাসত্ব, কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য লাভের অধিকারী। অন্য সত্তাসমূহ এসব বস্তু ও শক্তি সৃষ্টিতে যাদের কোন অংশ নেই কিংবা এসব বস্তু ও শক্তি মানুষের অনুগত করা ও কল্যাণকর বানানোর ক্ষেত্রে যাদের কোন কর্তৃত্ব নেই, মানুষের দাসত্ব, কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য লাভের অধিকারও তাদের নেই।
১৮.
মূল আয়াতাংশ হচ্ছে لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ اللَّهِ । এর শাব্দিক অনুবাদ হবে, “যেসব মানুষ আল্লাহর দিনসমূহের আশা রাখে না।” কিন্তু আরবী বাকরীতিতে এ রকম ক্ষেত্রে
اَيَّام অর্থ শুধু দিন নয়, বরং এমন সব স্মরনীয় দিন যখন গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহ সংঘটিত হয়েছে। যেমন
اَيَّامُ الْعَرَبْ শব্দ আরব ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী এবং আরব গোত্রসমূহের এমন সব বড় বড় যুদ্ধ-বিগ্রহ বুঝানোর জন্য বলা হয় যা পরবর্তী বংশধররা শত শত বছর ধরে স্মরণ করে আসছে। এখানে
اَيَّامُ الله অর্থ কোন জাতির জীবনের সর্বাধিক অকল্যাণকর দিন, যেদিন তাদের ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসে এবং নিজ কৃতকর্মের পরিণামে তাদের ধ্বংস করে দেয়া হয়। এই অর্থ অনুসারে আমরা এই আয়াতাংশের অনুবাদ করেছি, ‘যারা আল্লাহর পক্ষে থেকে ভয়াবহ দিন আসারআশঙ্কা করে না। অর্থাৎ যাদের এ চিন্তা নেই যে, কখনো এমন দিনও আসতে পারে যখন আমাদের এসব কাজ-কর্মের ফলশ্রুতিতে আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য নেমে আসবে। এই উদাসীনতাই তাদেরকে জুলুম-অত্যাচারের ব্যাপারে দুঃসাহস যুগিয়েছে।
১৯.
মুফাসসিরগণ এ আয়াতের দু’টি অর্থ বর্ণনা করেছেন। আয়াতের শব্দাবলী থেকে এ দু’টি অর্থ গ্রহণেরই অবকাশ আছে। একটি অর্থ হচ্ছে, মু’মিনদেরকে এ জালেম গোষ্ঠীর অত্যাচার উপেক্ষা করতে হবে যাতে আল্লাহ তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে তাদের ধৈর্য ও মহানুভবতা এবং শিষ্টাচারের প্রতিদান দেন এবং তারা আল্লাহর পথে যে দুঃখ-কষ্ট বরদাশত করেছে তার পুরস্কার দান করেন।
আরেকটি অর্থ হচ্ছে, মু’মিনগণ যেন, এই গোষ্ঠীকে উপেক্ষা করে যাতে আল্লাহ নিজেই তাদের অত্যাচারের প্রতিফল দান করেন।
কতিপয় মুফাসসির এ আয়াতকে ‘মনসূখ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেনঃ যতদিন মুসলমানদের যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি ততদিন এ আদেশ বহাল ছিল। কিন্তু যুদ্ধের অনুমতি দেয়ার পর এ হুকুম ‘মনসূখ’ হয়ে গিয়েছে। তবে আয়াতের শব্দসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, মনসুখ হওয়ার এ দাবী ঠিক নয়। ব্যক্তি যখন কারো জুলুমের প্রতিশোধ গ্রহণ করতে সক্ষম নয় তখন তাকে ক্ষমা করে দেয়া অর্থে এই ‘মাফ’ শব্দটি কখনো ব্যবহৃত হয় না। বরং এক্ষেত্রে ধৈর্য, সহ্য ও বরদাশত শব্দগুলো প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এ শব্দগুলো বাদ দিয়ে এখানে যখন ‘মাফ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে তখন আপনা থেকেই তার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঈমানদারগণ সেই সব লোকের জুলুম ও বাড়াবাড়ির জবাব দেয়া থেকে বিরত থাকবে আল্লাহর ব্যাপারে নির্ভীক হওয়া যাদেরকে নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের সীমালংঘনের দুঃসাহস যুগিয়েছে। যেসব আয়াতে মুসলমানদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছে তার সাথে এ নির্দেশের কোন অমিল বা বৈপরীত্য নেই। যুদ্ধের অনুমতি দানের প্রশ্নটি এমন অবস্থার সাথে সম্পর্কিত যখন কোন কাফের কওমের বিরুদ্ধে যথারীতি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুসলিম সরকারের কাছে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে। আর ক্ষমার নির্দেশ এমন সাধারণ পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত যখন কোন না কোনভাবে মু’মিনদের সম্মুখীন হতে হয় আল্লাহর ভয়ে ভীত নয় এমন সব লোকদের এবং তারা তাদের বক্তব্য, লেখনী ও আচার-আচরণ দ্বারা মু’মিনদেরক নানাভাবে কষ্ট দেয়। এ নির্দেশের উদ্দেশ্য হলো, মুসলমানরা যেন তাদের উচ্চতর আসন থেকে নেমে এসব হীন চরিত্র লোকদের সাথে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং তাদের প্রতিটি অর্থহীন কাজের জবাব দিতে শুরু না করে। যতক্ষণ পর্যন্ত শিষ্টতা ও যৌক্তিতার সাহায্যে কোন অভিযোগ ও আপত্তির জবাব দেয়া কিংবা কোন জুলুমের প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। কিন্তু যখনই এ সীমা লংঘিত হবে তখনই সেখানেই ক্ষান্তি দিয়ে ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ করতে হবে। মুসলমানরা নিজেরাই যদি তাদের মোকাবিলায় ময়দানে নেমে পড়ে তাহলে আল্লাহ তাদের সাথে মোকাবিলার ক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে তাদের আপন অবস্থার ওপর ছেড়ে দেবেন। কিন্তু তারা যদি ক্ষমা ও উপেক্ষার নীতি অনুসরণ করে তাহলে আল্লাহ নিজেই জালেমদের সাথে বুঝাপড়া করবেন এবং মজলুমদেরকে তাদের ধৈর্য ও মহানুভবতার পুরস্কার দান করবেন।
২০.
হুকুম অর্থ তিনটি জিনিস। এক-কিতাবের জ্ঞান ও উপলব্ধি এবং দ্বীনের অনুভূতি। দুই-কিতাবের অভিপ্রায় অনুসারে কাজ করার কৌশল। তিন-বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যোগ্যতা।
২১.
অর্থ এ নয় যে, চিরদিনের জন্য সারা দুনিয়ার মানুষের ওপর মর্যাদা দান করেছেন। বরং এর সঠিক অর্থ হচ্ছে, সেই যুগে দুনিয়ার সমস্ত জাতির মধ্য থেকে আল্লাহ বনী ইসরাইলকে এই খেদমতের জন্য বাছাই করে নিয়েছিলেন যে, তারা হবে আল্লাহর কিতাবের ধারক এবং আল্লাহর আনুগত্যের ঝাণ্ডাবাহী।
২২.
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল বাকারা, টীকা ২৩০; আল ইমরান, টীকা ১৭ ১৮ ; আশ শূরা, টীকা ২২ ও ২৩।
২৩.
অর্থাৎ ইতিপূর্বে যে কাজের দায়িত্ব বনী ইসরাইলদের ওপর অর্পণ করা হয়েছিলো এখন তার দায়িত্ব তোমাদের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। তারা জ্ঞান লাভ করা সত্ত্বেও আত্মস্বার্থের জন্য দ্বীনের মধ্যে এমন মতভেদ সৃষ্টি করে এবং পরস্পর এমন দলাদলিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে যার ফলে দুনিয়ার মানুষকে আল্লাহর পথে আহবান জানানোর যোগ্যতাই হারিয়ে বসে। বর্তমানে তোমাদের সেই দ্বীনের সুস্পষ্ট রাজপথের ওপর দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে তোমরা সেই খেদমত আঞ্জাম দিতে পার যা বনী ইসরাঈলরা পরিত্যাগ করেছে এবং যার যোগ্যতাও তাদের ছিল না। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, সূরা আশ শূরা, আয়াত ১৩ থেকে ১৫ এবং টীকা ২০ থেকে ২৬)।
২৪.
অর্থাৎ যদি তোমরা তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য দ্বীনের মধ্যে কোনো প্রকার রদবদল করো তাহলে তারা আল্লাহর সামনে জবাবদিহি থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না।
২৫.
অর্থাৎ এই কিতাব এবং এই শরীয়ত পৃথিবীর মানুষের জন্য এমন এক আলো যা হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়। কিন্তু তা থেকে হিদায়াত লাভ করে কেবল সেই সব লোক যারা তার সত্যতার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে। আর তা রহমত কেবল তাদের জন্যই।