وَإِنِ ٱمْرَأَةٌ خَافَتْ مِنۢ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًۭا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَآ أَن يُصْلِحَا بَيْنَهُمَا صُلْحًۭا ۚ وَٱلصُّلْحُ خَيْرٌۭ ۗ وَأُحْضِرَتِ ٱلْأَنفُسُ ٱلشُّحَّ ۚ وَإِن تُحْسِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًۭا
যখনই ১৫৭ কোন স্ত্রীলোক নিজের স্বামীর কাছ থেকে অসদাচরণ অথবা উপেক্ষা প্রদর্শনের আশঙ্কা করে, তারা দু’জনে (কিছু অধিকারের কমবেশীর ভিত্তিতে) যদি পরস্পর সন্ধি করে নেয়, তাহলে এতে কোন দোষ নেই। যে কোন অবস্থায়ই সন্ধি উত্তম। ১৫৮ মন দ্রুত সংকীর্ণতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। ১৫৯ কিন্তু যদি তোমরা পরোপকার করো ও আল্লাহভীতি সহকারে কাজ করো, তাহলে নিশ্চিত জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের এই কর্মনীতি সম্পর্কে অনবহিত থাকবেন না। ১৬০
১৫৭
আসল প্রশ্নের জবাব এখান থেকে শুরু হচ্ছে। এ জবাবটি বুঝতে হলে প্রথমে প্রশ্নটি ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে। জাহেলী যুগে এক ব্যক্তি অসংখ্য বিয়ে করতে পারতো। এ ব্যাপারে তার অবাধ স্বাধীনতা ছিল। আর এই অসংখ্য স্ত্রীদের জন্য কোন অধিকারও সংরক্ষিত ছিল না। সূরা নিসার প্রাথমিক আয়াতগুলো নাযিল হবার পর এই স্বাধীনতার ওপর দু’ ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়। এক, স্ত্রীদের সংখ্যা সর্বাধিক চারের মধ্যে সীমিত করে দেয়া হয়। দুই, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করার জন্য ‘আদল’ (অর্থাৎ সবদিক দিয়ে সমান ব্যবহার) এর শর্ত আরোপ করা হয়। এখানে প্রশ্ন ওঠে, যদি কোন ব্যক্তির স্ত্রী বন্ধা হয় বা চিররুগ্না হয় অথবা কোন ক্রমেই তার স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক সম্পর্ক বজায় রাখার যোগ্যতা না থাকে এবং এ অবস্থায় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে তাহলে কি উভয়ের প্রতি সমান আকর্ষণ অনুভব করা, সমান ভালোবাসা পোষণ করা এবং উভয়ের সাথে সমান দৈহিক সম্পর্ক রাখা তার জন্য অপরিহার্য গণ্য হবে? আর যদি সে এমনটি না করে, তাহলে আদলের শর্ত কি এটাই দাবী করে যে, দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করার পূর্বে সে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেবে? এছাড়াও প্রথম স্ত্রী নিজেই যদি বিচ্ছিন্ন হতে না চায় তাহলে কি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটা বোঝাপড়ার মাধ্যমে যে স্ত্রী আকর্ষণহীন হয়ে পড়েছে সে স্বেচ্ছায় নিজের কিছু অধিকার ত্যাগ করে তাকে তালাক দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য স্বামীকে রাজী করতে পারে? এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা কি আদলের বিরোধী হবে? সংশ্লিষ্ট আয়াতটিতে উপরোল্লিখিত প্রশ্নগুলোর জবাব দেয়া হয়েছে।
১৫৮
অর্থাৎ তালাক ও বিচ্ছিন্নতার পরিবর্তে যে স্ত্রী তার জীবনের একটি অংশ এক স্বামীর সাথে অতিবাহিত করেছে এভাবে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও চুক্তির মাধ্যমে বাকি জীবনটা তারই সাথে অবস্থান করাটাই উত্তম।
১৫৯
স্ত্রী যদি নিজের মধ্যে স্বামীর জন্য আকর্ষণহীনতার কারণ অনুভব করতে থাকে এবং এরপরও সে স্বামীর কাছে থেকে একজন আকর্ষণীয় স্ত্রীর প্রতি ব্যবহার প্রত্যাশা করে তাহলে এটিই হবে সেই স্ত্রীর মনের সংকীর্ণতা। আর স্বামী যদি এমন কোন স্ত্রীকে সীমাতিরিক্তভাবে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে এবং তার অধিকার অসহনীয় পর্যায়ে ছিনিয়ে নিতে চায়, যে স্ত্রী স্বামীর মনরাজ্যে সকল প্রকার আকর্ষণ হারিয়ে বসার পরও তার সাথে অবস্থান করতে চায়, তাহলে এটি হবে স্বামীর পক্ষ থেকে মনের সংকীর্ণতার পরিচয়।
১৬০
এখানে আল্লাহ আবার পুরুষেরই উদার মনোবৃত্তির প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এ ধরনের ব্যাপারে এটিই আল্লাহর রীতি। তিনি সকল প্রকার আকর্ষণহীনতাসত্ত্বেও মেয়েটির সাথে অনুগ্রহপূর্ণ ব্যবহার করার জন্য পুরুষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। কেননা মেয়েটি বছরের পর বছর ধরে তার জীবন সঙ্গিনী হিসেবে জীবন অতিবাহিত করেছে। এই সঙ্গে আল্লাহকে ভয় করারও নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা কোন মানুষের ভুল-ত্রুটির কারণে তিনি তার দিক থেকে যদি নিজের কৃপাদৃষ্টি ফিরিয়ে নেন এবং তারভাগ্যের অংশ হ্রাস করে দেন, তাহলে দুনিয়ায় তার আশ্রয়লাভ করার আর কোন স্থানইথাকে না।