১
আল ফাতিহা
৭ আয়াত
২
আল বাকারাহ
২৮৬ আয়াত
৩
আলে ইমরান
২০০ আয়াত
৪
আন্ নিসা
১৭৬ আয়াত
৫
আল মায়েদাহ
১২০ আয়াত
৬
আল আন'আম
১৬৫ আয়াত
৭
আল আরাফ
২০৬ আয়াত
৮
আল আনফাল
৭৫ আয়াত
৯
আত তওবা
১২৯ আয়াত
১০
ইউনুস
১০৯ আয়াত
১১
হুদ
১২৩ আয়াত
১২
ইউসুফ
১১১ আয়াত
১৩
আর্ রাদ
৪৩ আয়াত
১৪
ইবরাহীম
৫২ আয়াত
১৫
আল হিজর
৯৯ আয়াত
১৬
আন্ নাহল
১২৮ আয়াত
১৭
বনী ইসরাঈল
১১১ আয়াত
১৮
আল কাহফ
১১০ আয়াত
১৯
মারয়াম
৯৮ আয়াত
২০
ত্বাহা
১৩৫ আয়াত
২১
আল আম্বিয়া
১১২ আয়াত
২২
আল হাজ্জ
৭৮ আয়াত
২৩
আল মুমিনূন
১১৮ আয়াত
২৪
আন্ নূর
৬৪ আয়াত
২৫
আল-ফুরকান
৭৭ আয়াত
২৬
আশ্-শু’আরা
২২৭ আয়াত
২৭
আন নামল
৯৩ আয়াত
২৮
আল কাসাস
৮৮ আয়াত
২৯
আল আনকাবূত
৬৯ আয়াত
৩০
আর রূম
৬০ আয়াত
৩১
লুকমান
৩৪ আয়াত
৩২
আস সাজদাহ
৩০ আয়াত
৩৩
আল আহযাব
৭৩ আয়াত
৩৪
আস সাবা
৫৪ আয়াত
৩৫
ফাতের
৪৫ আয়াত
৩৬
ইয়া-সীন
৮৩ আয়াত
৩৭
আস্ সা-ফফা-ত
১৮২ আয়াত
৩৮
সা-দ
৮৮ আয়াত
৩৯
আয যুমার
৭৫ আয়াত
৪০
আল মুমিন
৮৫ আয়াত
৪১
হা-মীম আস সাজদাহ
৫৪ আয়াত
৪২
আশ শূরা
৫৩ আয়াত
৪৩
আয্ যুখরুফ
৮৯ আয়াত
৪৪
আদ দুখান
৫৯ আয়াত
৪৫
আল জাসিয়াহ
৩৭ আয়াত
৪৬
আল আহক্বাফ
৩৫ আয়াত
৪৭
মুহাম্মদ
৩৮ আয়াত
৪৮
আল ফাতহ
২৯ আয়াত
৪৯
আল হুজুরাত
১৮ আয়াত
৫০
ক্বাফ
৪৫ আয়াত
৫১
আয যারিয়াত
৬০ আয়াত
৫২
আত তূর
৪৯ আয়াত
৫৩
আন নাজম
৬২ আয়াত
৫৪
আল ক্বামার
৫৫ আয়াত
৫৫
আর রহমান
৭৮ আয়াত
৫৬
আল ওয়াকি’আ
৯৬ আয়াত
৫৭
আল হাদীদ
২৯ আয়াত
৫৮
আল মুজাদালাহ
২২ আয়াত
৫৯
আল হাশর
২৪ আয়াত
৬০
আল মুমতাহিনা
১৩ আয়াত
৬১
আস সফ
১৪ আয়াত
৬২
আল জুমআ
১১ আয়াত
৬৩
আল মুনাফিকুন
১১ আয়াত
৬৪
আত তাগাবুন
১৮ আয়াত
৬৫
আত তালাক
১২ আয়াত
৬৬
আত তাহরীম
১২ আয়াত
৬৭
আল মুলক
৩০ আয়াত
৬৮
আল কলম
৫২ আয়াত
৬৯
আল হাককাহ
৫২ আয়াত
৭০
আল মাআরিজ
৪৪ আয়াত
৭১
নূহ
২৮ আয়াত
৭২
আল জিন
২৮ আয়াত
৭৩
আল মুযযাম্মিল
২০ আয়াত
৭৪
আল মুদ্দাস্সির
৫৬ আয়াত
৭৫
আল কিয়ামাহ
৪০ আয়াত
৭৬
আদ্ দাহর
৩১ আয়াত
৭৭
আল মুরসালাত
৫০ আয়াত
৭৮
আন নাবা
৪০ আয়াত
৭৯
আন নাযি’আত
৪৬ আয়াত
৮০
আবাসা
৪২ আয়াত
৮১
আত তাকবীর
২৯ আয়াত
৮২
আল ইনফিতার
১৯ আয়াত
৮৩
আল মুতাফফিফীন
৩৬ আয়াত
৮৪
আল ইনশিকাক
২৫ আয়াত
৮৫
আল বুরূজ
২২ আয়াত
৮৬
আত তারিক
১৭ আয়াত
৮৭
আল আ’লা
১৯ আয়াত
৮৮
আল গাশিয়াহ
২৬ আয়াত
৮৯
আল ফজর
৩০ আয়াত
৯০
আল বালাদ
২০ আয়াত
৯১
আশ শামস
১৫ আয়াত
৯২
আল লাইল
২১ আয়াত
৯৩
আদ দুহা
১১ আয়াত
৯৪
আলাম নাশরাহ
৮ আয়াত
৯৫
আত তীন
৮ আয়াত
৯৬
আল আলাক
১৯ আয়াত
৯৭
আল কাদ্র
৫ আয়াত
৯৮
আল বাইয়েনাহ
৮ আয়াত
৯৯
আল যিলযাল
৮ আয়াত
১০০
আল আদিয়াত
১১ আয়াত
১০১
আল কারি’আহ
১১ আয়াত
১০২
আত তাকাসুর
৮ আয়াত
১০৩
আল আসর
৩ আয়াত
১০৪
আল হুমাযা
৯ আয়াত
১০৫
আল ফীল
৫ আয়াত
১০৬
কুরাইশ
৪ আয়াত
১০৭
আল মাউন
৭ আয়াত
১০৮
আল কাউসার
৩ আয়াত
১০৯
আল কাফিরূন
৬ আয়াত
১১০
আন নসর
৩ আয়াত
১১১
আল লাহাব
৫ আয়াত
১১২
আল ইখলাস
৪ আয়াত
১১৩
আল ফালাক
৫ আয়াত
১১৪
আন নাস
৬ আয়াত
আয়াত
৪১ ) এদের জন্য এটিও একটি নিদর্শন যে, আমি এদের বংশধরদেরকে ভরা নৌকায় চড়িয়ে দিয়েছি ৩৮
وَءَايَةٌۭ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ ٤١
৪২ ) এবং তারপর এদের জন্য ঠিক তেমনি আরো নৌযান সৃষ্টি করেছি যেগুলোতে এরা আরোহণ করে। ৩৯
وَخَلَقْنَا لَهُم مِّن مِّثْلِهِۦ مَا يَرْكَبُونَ ٤٢
৪৩ ) আমি চাইলে এদেরকে ডুবিয়ে দেই, এদের কোন ফরিয়াদ শ্রবণকারী থাকবে না এবং কোনভাবেই এদেরকে বাঁচানো যেতে পারে না।
وَإِن نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنقَذُونَ ٤٣
৪৪ ) ব্যস, আমার রহমতই এদেরকে কূলে ভিড়িয়ে দেয় এবং একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত জীবনের দ্বারা লাভবান হবার সুযোগ দিয়ে থাকে। ৪০
إِلَّا رَحْمَةًۭ مِّنَّا وَمَتَـٰعًا إِلَىٰ حِينٍۢ ٤٤
৪৫ ) এদেরকে যখন বলা হয়, তোমাদের সামনে যে পরিণাম আসছে এবং যা তোমাদের পেছনে অতিক্রান্ত হয়েছে তার হাত থেকে বাঁচো, ৪১ হয়তো তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হবে (তখন এরা এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়) ।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ٱتَّقُوا۟ مَا بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ ٤٥
৪৬ ) এদের সামনে এদের রবের আয়াতসমূহের মধ্য থেকে যে আয়াতই আসে এরা সেদিকে দৃষ্টি দেয় না ৪২
وَمَا تَأْتِيهِم مِّنْ ءَايَةٍۢ مِّنْ ءَايَـٰتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا۟ عَنْهَا مُعْرِضِينَ ٤٦
৪৭ ) এবং যখন এদেরকে বলা হয়, আল্লাহ তোমাদের যে রিযিক দান করেছেন তার মধ্য থেকে কিছু আল্লাহর পথে খরচ করো তখন এসব কুফরীতে লিপ্ত লোক মু’মিনদেরকে জবাব দেয় “আমরা কি তাদেরকে খাওয়াবো, যাদেরকে আল্লাহ চাইলে নিজেই খাওয়াতেন? তোমরা তো পরিষ্কার বিভ্রান্তির শিকার হয়েছো।” ৪৩
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ قَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَنُطْعِمُ مَن لَّوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ أَطْعَمَهُۥٓ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِى ضَلَـٰلٍۢ مُّبِينٍۢ ٤٧
৪৮ ) এরা ৪৪ বলে, “এ কিয়ামতের হুমকি কবে পুরা হবে? বলো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও? ৪৫
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَـٰذَا ٱلْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ ٤٨
৪৯ ) আসলে এরা যে জিনিসের দিকে তাকিয়ে আছে তা তো একটি বিস্ফোরণের শব্দ, যা সহসা এদেরকে ঠিক এমন অবস্থায় ধরে ফেলবে যখন এরা (নিজেদের পার্থিব ব্যাপারে) বিবাদ করতে থাকবে
مَا يَنظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةًۭ وَٰحِدَةًۭ تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُونَ ٤٩
৫০ ) এবং সে সময় এরা কোন অসিয়াতও করতে পারবে না এবং নিজেদের গৃহেও ফিরতে পারবে না। ৪৬
فَلَا يَسْتَطِيعُونَ تَوْصِيَةًۭ وَلَآ إِلَىٰٓ أَهْلِهِمْ يَرْجِعُونَ ٥٠
৩৮.
ভরা নৌযান মানে নূহ আলাইহিস সালামের নৌযান। আর মানব বংশধরদেরকে তাতে আরোহণ করিয়ে দেবার অর্থ হচ্ছে এই যে, এ নৌযানে বাহ্যত হযরত নূহের কয়েকজন সাথীই বসেছিলেন ঠিকই কিন্তু আসলে তাতে আরোহণ করেছিল কিয়ামত পর্যন্ত জন্মলাভকারী সমস্ত মানুষ। কারণ নূহের তুফানে তাদেরকে ছাড়া বাকি সমস্ত মানুষকে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল এবং পরবর্তী মানব বংশধারা এ নৌযানে আরোহীদের থেকে শুরু হয়েছিল।
৩৯.
এ থেকে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ইতিহাসে হযরত নূহ আলাইহিস সালামের নৌকাটিই ছিল প্রথম নৌকা। এর পূর্বে নদী ও সাগর পার হবার কোন উপায় মানুষ জানতো না। মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম হযরত নূহকে (আঃ) এ উপায়টি শেখান। তাঁর তৈরী করা নৌকায় চড়ে যখন আল্লাহর কিছু বান্দা প্লাবন ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পায় তখন পরবর্তীকালে তাদের বংশধররা সামূদ্রিক সফরের জন্য নৌযান তৈরী করতে থাকে।
৪০.
আগের নিদর্শনগুলো উল্লেখ করা হয়েছিল তাওহীদের সপক্ষে যুক্তি-প্রমাণ হিসেবে, আর এখানে এ নিদর্শনটির উল্লেখ করা হয়েছে এ ধারণা দান করার জন্য যে, প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করার যে ক্ষমতাও মানুষকে দেয়া হয়েছে তা সবই আল্লাহ প্রদত্ত, মানুষ নিজেই সেগুলো অর্জন করেনি। আর এ শক্তিগুলো ব্যবহার করার যে পদ্ধতি সে উদ্ভাবন করেছে তাও আল্লাহর পথনির্দেশনার মাধ্যমেই তার জ্ঞানের আওতাধীন হয়েছে, এগুলো তার নিজের উদ্ভাবন নয়। নিজ শক্তিতে এ বিশাল শক্তিগুলোকে বিজিত করার ক্ষমতা মানুষের ছিল না। প্রকৃতির রহস্য সন্ধান করা এবং শক্তিগুলোকে কাজে লাগাবার যোগ্যতাও তার ছিল না, তারপর যে শক্তিগুলোর ওপর আল্লাহ তাকে কর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ ততক্ষণ পর্যন্ত থাকে যতক্ষণ আল্লাহ তাদেরকে তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। অন্যথায় আল্লাহর ইচ্ছা যখন ভিন্নতর হয় তখন যেসব শক্তি মানুষের সেবা করে চলছিল সেগুলো অকস্মাৎ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মানুষ নিজেকে তাদের সামনে সম্পূর্ণ অসহায় দেখতে পায়। এ সত্যটি সম্পর্কে সজাগ করার জন্য আল্লাহ সামূদ্রিক সফরের ব্যাপারটিকে নিছক নমুনা হিসেবে পেশ করেছেন। আল্লাহ হযরত নূহকে যদি নৌকা তৈরী করার পদ্ধতি না শিখিয়ে দিতেন এবং তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তারা তাতে আরোহণ না করতো তাহলে প্লাবনে সমগ্র মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যেতো। তারপর আল্লাহর কাছ থেকে নৌকা নির্মাণের কায়দা-কানুন শিখে নিয়ে লোকেরা নদী ও সাগর অতিক্রম করার যোগ্যতা অর্জন করে। এর ফলে মানবজাতি সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়। কিন্তু এ প্রথম পর্ব থেকে আজকের বিশাল আকার জাহাজ নির্মাণ পর্যন্ত মানুষ যতদূর উন্নতি সাধন করেছে এবং নৌযান পরিচালনার ক্ষেত্রে যতটুকুই নিপুণতা ও দক্ষতা অর্জন করেছে তা সত্ত্বেও সে এ দাবী করতে পারে না যে, নদী ও সাগর সবই তার নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে এবং তাদের ওপর সে পুরোপুরি বিজয় লাভ করেছে। আজো আল্লাহর পানি আল্লাহরই কুদরতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যখনই তিনি চান মানুষকে তার জাহাজসহ তার বুকে ডুবিয়ে দেন।
৪১.
অর্থাৎ তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিরা যা দেখেছে।
৪২.
আয়াত বলতে আল্লাহর কিতাবের আয়াতই বুঝানো হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ দেয়া হয় আবার এমন নিদর্শনাবলীও বুঝানো হয়েছে যেগুলো প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ ও মানুষের নিজের অস্তিত্ব ও তার ইতিহাসের মধ্যে পাওয়া যায়। এসব মানুষকে শিক্ষা দান করে। তবে এজন্য অবশ্যই মানুষের শিক্ষা গ্রহণ করার মানসিকতা থাকা জরুরী।
৪৩.
এর মাধ্যমে একথা বলাই উদ্দেশ্য যে, কুফরী কেবল তাদের দৃষ্টিশক্তিকেই অন্ধ করে দেয়নি বরং তাদের নৈতিক অনুভূতিকেও নির্জীব করে দিয়েছে। তারা আল্লাহর ব্যাপারেও সঠিক চিন্তা-ভাবনা করে না এবং আল্লাহর সৃষ্টির সাথেও যথার্থ ব্যবহার করে না। তাদের কাছে রয়েছে প্রত্যেক উপদেশের উল্টা জবাব। প্রত্যেক পথভ্রষ্টতা ও অসদাচরণের জন্য একটি বিপরীত দর্শন। প্রত্যেক সৎকাজ থেকে দূরে থাকার জন্য একটি মনগড়া বাহানা তাদের কাছে তো রয়েছেই।
৪৪.
নবী ﷺ ও কাফেরদের মধ্যে তাওহীদের পরে আর যে বিষয়টি নিয়ে বিরোধ চলছিল সেটি ছিল আখেরাত। এ সম্পর্কিত বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তি অবশ্যই সামনের দিকে আলোচনার শেষ পর্যায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু যুক্তি উপস্থাপনের পূর্বে এখানে এ বিষয়টির ভিত্তিতে তাদের সামনে আখেরাতের একটি শিক্ষণীয় চিত্র অংকন করা হয়েছে। এর ফলে তারা জানতে পারবে, যে বিষয়টি তারা অস্বীকার করছে তা তাদের অস্বীকার করার ফলে মূলতবী হয়ে যাবে না বরং অনিবার্যভাবে একদিন তাদের এসব অবস্থার সম্মুখীন হতে হবেই।
৪৫.
এ প্রশ্নের অর্থ এ ছিল না যে, যথার্থই তারা কিয়ামতের আসার তারিখ জানতে চায় এবং যদি তাদেরকে জানানো হতো, অমুক মাসের অমুক তারিখে কিয়ামত হবে তাহলে তাদের সন্দেহ দূর হয়ে যেতো এবং তারা তা মেনে নিতো। আসলে এ ধরনের প্রশ্ন তারা করতো নিছক চ্যালেঞ্জের ঢংয়ে কূটতর্ক করার জন্য। এ ব্যাপারে তারা একথা বলতে চাচ্ছিল যে, কোন কিয়ামত টিয়ামত হবে না, তোমরা খামখা আমাদের ভয় দেখাচ্ছো। এ কারণে তাদের জবাবে বলা হয়নি, কিয়ামত অমুক দিন আসবে বরং তাদেরকে বলা হয়েছে, তা আসবে এবং প্রচণ্ড শক্তিতে আসবে।
৪৬.
অর্থাৎ কিয়ামত আস্তে আস্তে ধীরে-সুস্থে আসবে এবং লোকেরা তাকে আসতে দেখবে, এমনটি হবে না। বরং তা এমনভাবে আসবে যখন লোকেরা পুর্ণ নিশ্চিন্ততা সহকারে নিজেদের কাজ কারবারে মশগুল থাকবে এবং তাদের মনের ক্ষুদ্রতম কোণেও এ চিন্তা জাগবে না যে, দুনিয়ার শেষ সময় এসে গেছে। এ অবস্থায় অকস্মাৎ একটি বিরাট বিস্ফোরণ ঘটবে এবং যে যেখানে থাকবে সেখানেই খতম হয়ে যাবে।
হাদীসে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) ও হযরত আবু হুরাইরার (রাঃ) নবী ﷺ থেকে একটি বর্ণনা লিপিবদ্ধ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছেঃ লোকেরা পথে চলাফেরা করবে, বাজারে কেনাবেচা করতে থাকবে, নিজেদের মজলিসে বসে আলাপ আলোচনা করতে থাকবে, এমন সময় হঠাৎ শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে। কেউ কাপড় কিনছিল। হাত থেকে রেখে দেবার সময়টুকু পাবে না, সে শেষ হয়ে যাবে। কেউ নিজের পশুগুলোকে পানি পান করাবার জন্য জলাধার ভর্তি করবে এবং তখনো পানি পান করানো শুরু করবে না তার আগেই কিয়ামত হয়ে যাবে। কেউ খাবার খেতে বসবে এবং এক গ্রাস খাবার মুখ পর্যন্ত নিয়ে যাবার সুযোগও পাবে না।