আল ফাতিহা
৭ আয়াত
আল বাকারাহ
২৮৬ আয়াত
আলে ইমরান
২০০ আয়াত
আন্ নিসা
১৭৬ আয়াত
আল মায়েদাহ
১২০ আয়াত
আল আন'আম
১৬৫ আয়াত
আল আরাফ
২০৬ আয়াত
আল আনফাল
৭৫ আয়াত
আত তওবা
১২৯ আয়াত
১০
ইউনুস
১০৯ আয়াত
১১
হুদ
১২৩ আয়াত
১২
ইউসুফ
১১১ আয়াত
১৩
আর্ রাদ
৪৩ আয়াত
১৪
ইবরাহীম
৫২ আয়াত
১৫
আল হিজর
৯৯ আয়াত
১৬
আন্ নাহল
১২৮ আয়াত
১৭
বনী ইসরাঈল
১১১ আয়াত
১৮
আল কাহফ
১১০ আয়াত
১৯
মারয়াম
৯৮ আয়াত
২০
ত্বাহা
১৩৫ আয়াত
২১
আল আম্বিয়া
১১২ আয়াত
২২
আল হাজ্জ
৭৮ আয়াত
২৩
আল মুমিনূন
১১৮ আয়াত
২৪
আন্ নূর
৬৪ আয়াত
২৫
আল-ফুরকান
৭৭ আয়াত
২৬
আশ্-শু’আরা
২২৭ আয়াত
২৭
আন নামল
৯৩ আয়াত
২৮
আল কাসাস
৮৮ আয়াত
২৯
আল আনকাবূত
৬৯ আয়াত
৩০
আর রূম
৬০ আয়াত
৩১
লুকমান
৩৪ আয়াত
৩২
আস সাজদাহ
৩০ আয়াত
৩৩
আল আহযাব
৭৩ আয়াত
৩৪
আস সাবা
৫৪ আয়াত
৩৫
ফাতের
৪৫ আয়াত
৩৬
ইয়া-সীন
৮৩ আয়াত
৩৭
আস্ সা-ফফা-ত
১৮২ আয়াত
৩৮
সা-দ
৮৮ আয়াত
৩৯
আয যুমার
৭৫ আয়াত
৪০
আল মুমিন
৮৫ আয়াত
৪১
হা-মীম আস সাজদাহ
৫৪ আয়াত
৪২
আশ শূরা
৫৩ আয়াত
৪৩
আয্ যুখরুফ
৮৯ আয়াত
৪৪
আদ দুখান
৫৯ আয়াত
৪৫
আল জাসিয়াহ
৩৭ আয়াত
৪৬
আল আহক্বাফ
৩৫ আয়াত
৪৭
মুহাম্মদ
৩৮ আয়াত
৪৮
আল ফাতহ
২৯ আয়াত
৪৯
আল হুজুরাত
১৮ আয়াত
৫০
ক্বাফ
৪৫ আয়াত
৫১
আয যারিয়াত
৬০ আয়াত
৫২
আত তূর
৪৯ আয়াত
৫৩
আন নাজম
৬২ আয়াত
৫৪
আল ক্বামার
৫৫ আয়াত
৫৫
আর রহমান
৭৮ আয়াত
৫৬
আল ওয়াকি’আ
৯৬ আয়াত
৫৭
আল হাদীদ
২৯ আয়াত
৫৮
আল মুজাদালাহ
২২ আয়াত
৫৯
আল হাশর
২৪ আয়াত
৬০
আল মুমতাহিনা
১৩ আয়াত
৬১
আস সফ
১৪ আয়াত
৬২
আল জুমআ
১১ আয়াত
৬৩
আল মুনাফিকুন
১১ আয়াত
৬৪
আত তাগাবুন
১৮ আয়াত
৬৫
আত তালাক
১২ আয়াত
৬৬
আত তাহরীম
১২ আয়াত
৬৭
আল মুলক
৩০ আয়াত
৬৮
আল কলম
৫২ আয়াত
৬৯
আল হাককাহ
৫২ আয়াত
৭০
আল মাআরিজ
৪৪ আয়াত
৭১
নূহ
২৮ আয়াত
৭২
আল জিন
২৮ আয়াত
৭৩
আল মুযযাম্মিল
২০ আয়াত
৭৪
আল মুদ্দাস্সির
৫৬ আয়াত
৭৫
আল কিয়ামাহ
৪০ আয়াত
৭৬
আদ্ দাহর
৩১ আয়াত
৭৭
আল মুরসালাত
৫০ আয়াত
৭৮
আন নাবা
৪০ আয়াত
৭৯
আন নাযি’আত
৪৬ আয়াত
৮০
আবাসা
৪২ আয়াত
৮১
আত তাকবীর
২৯ আয়াত
৮২
আল ইনফিতার
১৯ আয়াত
৮৩
আল মুতাফফিফীন
৩৬ আয়াত
৮৪
আল ইনশিকাক
২৫ আয়াত
৮৫
আল বুরূজ
২২ আয়াত
৮৬
আত তারিক
১৭ আয়াত
৮৭
আল আ’লা
১৯ আয়াত
৮৮
আল গাশিয়াহ
২৬ আয়াত
৮৯
আল ফজর
৩০ আয়াত
৯০
আল বালাদ
২০ আয়াত
৯১
আশ শামস
১৫ আয়াত
৯২
আল লাইল
২১ আয়াত
৯৩
আদ দুহা
১১ আয়াত
৯৪
আলাম নাশরাহ
৮ আয়াত
৯৫
আত তীন
৮ আয়াত
৯৬
আল আলাক
১৯ আয়াত
৯৭
আল কাদ্‌র
৫ আয়াত
৯৮
আল বাইয়েনাহ
৮ আয়াত
৯৯
আল যিলযাল
৮ আয়াত
১০০
আল আদিয়াত
১১ আয়াত
১০১
আল কারি’আহ
১১ আয়াত
১০২
আত তাকাসুর
৮ আয়াত
১০৩
আল আসর
৩ আয়াত
১০৪
আল হুমাযা
৯ আয়াত
১০৫
আল ফীল
৫ আয়াত
১০৬
কুরাইশ
৪ আয়াত
১০৭
আল মাউন
৭ আয়াত
১০৮
আল কাউসার
৩ আয়াত
১০৯
আল কাফিরূন
৬ আয়াত
১১০
আন নসর
৩ আয়াত
১১১
আল লাহাব
৫ আয়াত
১১২
আল ইখলাস
৪ আয়াত
১১৩
আল ফালাক
৫ আয়াত
১১৪
আন নাস
৬ আয়াত

আন নামল

৯৩ আয়াত

২১ ) আমি তাকে কঠিন শাস্তি দেবো অথবা জবাই করে ফেলবো, নয়তো তাকে আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত কারণ দর্শাতে হবে।” ২৮
لَأُعَذِّبَنَّهُۥ عَذَابًۭا شَدِيدًا أَوْ لَأَا۟ذْبَحَنَّهُۥٓ أَوْ لَيَأْتِيَنِّى بِسُلْطَـٰنٍۢ مُّبِينٍۢ ٢١
২২ ) কিছুক্ষণ অতিবাহিত না হতেই সে এসে বললো, “আমি এমন সব তথ্য লাভ করেছি যা আপনি জানেন না। আমি সাবা সম্পর্কে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি। ২৯
فَمَكَثَ غَيْرَ بَعِيدٍۢ فَقَالَ أَحَطتُ بِمَا لَمْ تُحِطْ بِهِۦ وَجِئْتُكَ مِن سَبَإٍۭ بِنَبَإٍۢ يَقِينٍ ٢٢
২৩ ) আমি সেখানে এক মহিলাকে সে জাতির শাসকরূপে দেখেছি। তাকে সব রকম সাজ সরঞ্জাম দান করা হয়েছে এবং তার সিংহাসন খুবই জমকালো।
إِنِّى وَجَدتُّ ٱمْرَأَةًۭ تَمْلِكُهُمْ وَأُوتِيَتْ مِن كُلِّ شَىْءٍۢ وَلَهَا عَرْشٌ عَظِيمٌۭ ٢٣
২৪ ) আমি তাকে ও তার জাতিকে আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের সামনে সিজদা করতে দেখেছি” ৩০ ---শয়তান ৩১ তাদের কার্যাবলী তাদের জন্য শোভন করে দিয়েছে ৩২ এবং তাদেরকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করে দিয়েছে এ কারণে তারা সোজা পথ পায় না।
وَجَدتُّهَا وَقَوْمَهَا يَسْجُدُونَ لِلشَّمْسِ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَزَيَّنَ لَهُمُ ٱلشَّيْطَـٰنُ أَعْمَـٰلَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ ٱلسَّبِيلِ فَهُمْ لَا يَهْتَدُونَ ٢٤
২৫ ) (শয়তান তাদেরকে বিপথগামী করেছে এজন্য) যাতে তারা সেই আল্লাহকে সিজদা না করে যিনি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন জিনিসসমূহ বের করেন ৩৩ এবং সেসব কিছু জানেন যা তোমরা গোপন করো ও প্রকাশ করো। ৩৪
أَلَّا يَسْجُدُوا۟ لِلَّهِ ٱلَّذِى يُخْرِجُ ٱلْخَبْءَ فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُخْفُونَ وَمَا تُعْلِنُونَ ٢٥
২৬ ) আল্লাহ, ছাড়া আর কেউ ইবাদাতের হকদার নয় তিনি মহান আরশের মালিক। ৩৫
ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلْعَرْشِ ٱلْعَظِيمِ ۩ ٢٦
২৭ ) সুলাইমান বললোঃ “এখনই আমি দেখছি তুমি সত্য বলছো অথবা মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
۞ قَالَ سَنَنظُرُ أَصَدَقْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ ٱلْكَـٰذِبِينَ ٢٧
২৮ ) আমার এ পত্র নিয়ে যাও এবং এটি তাদের প্রতি নিক্ষেপ করো, তারপর সরে থেকে দেখো তাদের মধ্যে কি প্রতিক্রিয়া হয়।” ৩৬
ٱذْهَب بِّكِتَـٰبِى هَـٰذَا فَأَلْقِهْ إِلَيْهِمْ ثُمَّ تَوَلَّ عَنْهُمْ فَٱنظُرْ مَاذَا يَرْجِعُونَ ٢٨
২৯ ) রাণী বললো, “হে দরবারীরা! আমার প্রতি একটি বড় গুরুত্বপূর্ণ পত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
قَالَتْ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُا۟ إِنِّىٓ أُلْقِىَ إِلَىَّ كِتَـٰبٌۭ كَرِيمٌ ٢٩
৩০ ) তা সুলাইমানের পক্ষ থেকে এবং আল্লাহ রহমানুর রহীমের নামে শুরু করা হয়েছে।”
إِنَّهُۥ مِن سُلَيْمَـٰنَ وَإِنَّهُۥ ٣٠
২৮.
বর্তমান যুগের কোন কোন লোকও বলেন, আরবী ও আমাদের দেশীয় ভাষায় যে পাখিটিকে হুদহুদ পাখি বলা হয় হুদহুদ আসলে সে পাখিটিকে বুঝানো হয়নি। বরং এটি এক ব্যক্তির নাম। সে ছিল হযরত সুলাইমান (আ)-এর সেনাবাহিনীর একজন অফিসার। এ দাবীর ভিত্তি এ নয় যে, ইতিহাসে তারা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের সেনাবাহিনীতে হুদহুদ নামে একজন সেনা অফিসারের সন্ধান পেয়েছেন। বরং শুধুমাত্র এ যুক্তির ভিত্তিতে এ দাবী খাড়া করা হয়েছে যে, প্রাণীদের নামে মানুষের নামকরণ করার রীতি দুনিয়ার সকল ভাষার মতো আরবীতেও প্রচলিত আছে এবং হিব্রু ভাষাতেও ছিল। তাছাড়া সামনের দিকে হুদহুদের যে কাজ বর্ণনা করা হয়েছে এবং হযরত সুলাইমান (আ) এর সাথে তার যে কথাবার্তা উল্লিখিত হয়েছে তা তাদের মতে একমাত্র একজন মানুষই করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে কুরআন মজীদের পূর্বাপর আলোচনা দেখলে মানুষ পরিষ্কার জানতে পারে যে, এটা কুরআনের তাফসীর নয় বরং তার বিকৃতি এবং এর চেয়ে অগ্রসর হয়ে বলা যায়, তার প্রতি মিথ্যাচারিতা। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির সাথে কুরআনের কি কোন শত্রুতা আছে? সে বলতে চায়, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের সেনাবাহিনী বা পল্টন অথবা তথ্য বিভাগের এক ব্যক্তি অনুপস্থিত ছিল। তিনি তার খোঁজ করছিলেন। সে হাজির হয়ে এই এই খবর দিলো। হযরত সুলাইমান তাকে এই এই কাজে পাঠালেন। একথাটা বলতে গিয়ে কুরআন অনবরত এমন হেঁয়ালিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করছে যা পাঠ করে একজন পাঠক প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পাখিই মনে করতে বাধ্য হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কুরআনের বর্ণনা বিন্যাসের প্রতি একটু দৃষ্টি দিনঃ

প্রথমে বলা হয়, হযরত সুলাইমান আল্লাহর এ অনুগ্রহের জন্য এভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, “আমাকে পাখির ভাষার জ্ঞান দেয়া হয়েছে” এ বাক্যে তো প্রথমত পাখি শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যার ফলে প্রত্যেকটি আরব ও আরবী জানা লোক এ শব্দটিকে পাখি অর্থে গ্রহণ করবে। কারণ এখানে এমন কোন পূর্বাপর প্রসঙ্গ বা সম্পর্ক নেই যা এ শব্দটিকে রূপক বা অপ্রকৃত অর্থে ব্যবহার করার পথ সুগম করতে পারে।

দ্বিতীয়ত এ মূলে ব্যবহৃত “তাইর” শব্দের অর্থ পাখি না হয়ে যদি মানুষের কোন দল থাকে, তাহলে তার জন্য “মানতিক” (বুলি) শব্দ না বলে “লুগাত” বা “লিসান” (অর্থাৎ ভাষা) শব্দ বলা বেশী সঠিক হতো। আর তাছাড়া কোন ব্যক্তির অন্য কোন মানব গোষ্ঠীর ভাষা জানাটা এমন কোন বিরাট ব্যাপার নয় যে, বিশেষভাবে সে তার উল্লেখ করবে। আজকাল আমাদের মধ্যে হাজার হাজার লোক অনেক বিদেশী ভাষা জানে ও বোঝে। এটা এমন কি কৃতিত্ব যে জন্য একে মহান আল্লাহর অস্বাভাবিক দান ও অনুগ্রহ গণ্য করা যেতে পারে?

এরপর বলা হয়, “সুলাইমানের জন্য জিন, মানুষ ও পাখি সেনাদল সমবেত করা হয়েছিল।” এ বাক্যে প্রথমত জিন, মানুষ ও পাখি তিনটি পরিচিত জাতির নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আরবী ভাষায় এ তিনটি শব্দ তিনটি বিভিন্ন ও সর্বজন পরিচিতি জাতির জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তারপর এ শব্দগুলো ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এদের কোনটির রূপক ও অপ্রকৃত অর্থে বা উপমা হিসেবে ব্যবহারের সপক্ষে কোন পূর্বাপর প্রাসাঙ্গিক সূত্রও নেই। ফলে ভাষার পরিচিত অর্থগুলোর পরিবর্তে অন্য অর্থে কোন ব্যক্তি এগুলোকে ব্যবহার করতে পারেনা। তাছাড়া “মানুষ” শব্দটি “জিন” ও “পাখি” শব্দ দু’টির মাঝখানে বসেছে, যার ফলে জিন ও পাখি আসলে মানুষ প্রজাতিরই দু’টি দল ছিল এ অর্থ গ্রহণ করার পথে কোন সুস্পষ্ট বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। যদি এ ধরণের অর্থ গ্রহণ করা উদ্দেশ্য হতো তাহলে مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ وَالطَّيْرِ না বলে বলা হতো الْجِنِّ وَالطَّيْرِ مِنَ الْإِنْسِ সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে বলা হয়, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পাখির খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। এ সময় হুদহুদকে অনুপস্থিত দেখে তিনি একথা বলেন। যদি এ পাখি মানুষ হয়ে থাকে এবং হুদহুদও কোন মানুষের নাম হয়ে থাকে তাহলে কমপক্ষে তিনি এমন কোন শব্দ বলতেন যা থেকে বেচারা পাঠক তাকে প্রাণী মনে করতো না। দলের নাম বলা হচ্ছে পাখি এবং তার একজন সদস্যের নাম বলা হচ্ছে হুদহুদ , এরপরও আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাকে মানুষ মনে করে নেব, আমাদের কাছে এ আশা করা হচ্ছে।

তারপর হযরত সুলাইমান বলেন, হুদহুদ হয় তার নিজের অনুপস্থিতির সঙ্গত কারণ বলবে নয়তো আমি তাকে কঠিন শাস্তি দেব অথবা তাকে জবাই করে ফেলবো। মানুষকে হত্যা করা হয়, ফাঁসি দেয়া হয়, মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, জবাই করে কে? কোন ভয়ংকর পাষাণ হৃদয় ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ প্রতিশোধ স্পৃহায় পাগল হয়ে গেলে হয়তো কাউকে জবাই করে ফেলে। কিন্তু আল্লাহর নবীর কাছেও কি আমরা এ আশা করবো যে, তিনি নিজের সেনাদলের এক সদস্যকে নিছক তার গরহাজির (Deserter) থাকার অপরাধে জবাই করার কথা ঘোষণা করে দেবেন এবং আল্লাহর প্রতি এ সুধারণা পোষণ করবো যে, তিনি এ ধরণের একটি মারাত্মক কথার উল্লেখ করে তার নিন্দায় একটি শব্দও বলবেন না?

আর একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে, হযরত সুলাইমান আলাহিস সালাম এ হুদহুদের কাছে সাবার রাণীর নামে পত্র দিয়ে পাঠাচ্ছেন এবং সেটি তাদের কাছে ফেলে দিতে বা নিক্ষেপ করতে বলছেন (القه اليهم) । বলা নিষ্প্রয়োজন, এ নির্দেশ পাখিদের প্রতি দেয়া যেতে পারে কিন্তু কোন মানুষকে রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়ে তাকে এ ধরণের নিক্ষেপ করার নির্দেশ দেয়া একেবারে অসঙ্গত হয়। কেউ বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে থাকলে সে একথা মেনে নেবে যে, এক দেশের বাদশাহ অন্য দেশের রাণীর নামে পত্র দিয়ে নিজের রাষ্ট্রদূতকে এ ধরণের নির্দেশ সহকারে পাঠাতে পারে যে, পত্রটি নিয়ে রাণীর সামনে ফেলে দাও বা নিক্ষেপ করো। আমাদের মতো মামুলি লোকেরাও নিজেদের প্রতিবেশীর কাছে নিজের কোন কর্মচারীকে পাঠাবার ক্ষেত্রেও ভদ্রতা ও শিষ্টাচারের যে প্রাথমিক রীতি মেনে চলি হযরত সুলাইমানকে কি তার চেয়েও নিম্নমানের মনে করতে হবে? কোন ভদ্রলোক কি কখনো নিজের কর্মচারীকে বলতে পারে, যা আমার এ পত্রটি অমুক সাহেবের সামনে ছুঁড়ে দিয়ে আয়?

এসব নিদর্শন ও চিহ্ন পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছে, এখানে হুদহুদ অভিধানিক অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সে মানুষ নয় বরং একটি পাখি ছিল। এখন যদি কোন ব্যক্তি একথা মেনে নিতে প্রস্তুত না হয় যে, কুরআন হুদহুদের বলা যেসব কথা উদ্ধৃত করছে একটি হুদহুদ তা বলতে পারে, তাহলে তার পরিষ্কার বলে দেয়া উচিত আমি কুরআনের একথাটি মানি না। কুরআনের স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন শব্দগুলোর মনগড়া অর্থ করে তার আড়ালে নিজের অবিশ্বাসকে লুকিয়ে রাখা জঘন্য মুনাফিকী ছাড়া আর কিছুই নয়।

২৯.
সাবা ছিল আরবের দক্ষিণ এলাকার একটি বিখ্যাত ব্যবসাজীবী জাতি। তাদের রাজধানী মারিব বর্তমান ইয়ামনের রাজধানী সান্আ থেকে ৫৫ মাইল উত্তরপূর্বে অবস্থিত ছিল। তাঁর উত্থানের যুগ মাঈনের রাষ্ট্রের পতনের পর প্রায় খৃস্টপূর্ব ১১০০ অব্দে শুরু হয়। এরপর থেকে প্রায় এক হাজার বছর পর্যন্ত। আরব দেশে তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপ অব্যাহত থাকে। তারপর ১১৫ খৃস্টপূর্বাব্দে দক্ষিণ আরবের দ্বিতীয় খ্যাতিমান জাতি হিময়ার তাদের স্থান দখল করে। আরবে ইয়ামন ও হাদরামউত এবং আফ্রিকায় হাবশা (ইথিয়োপিয়া) পর্যন্ত তাদের সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। পূর্ব আফ্রিকা, হিন্দুস্থান, দূর প্রাচ্য এবং আরবের যত বাণিজ্য মিসর, সিরিয়া গ্রীস ও ইতালীর হতো তার বেশীর ভাগ ছিল এ সাবায়ীদের হাতে। এজন্য এ জাতিটি প্রাচীনকালে নিজের নিজের ধনাঢ্যতা ও সম্পদশালীতার জন্য অত্যন্ত প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল। বরং গ্রীকঐতিহাসিকরা তো তাদেরকে দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী জাতি বলে উলেখ করেছেন। ব্যবসায় ছাড়া তাদের সমৃদ্ধির বড় কারণটি ছিল এই যে, তারা দেশের জায়গায় জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করে পানি সেচের উন্নততর ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। ফলে তাদের সমগ্র এলাকা সবুজ শ্যামল উদ্যানে পরিণত হয়েছিল। তাদের দেশের এ অস্বাভাবিক শস্য শ্যামলিমার কথা গ্রীক ঐতিহাসিকরাও উল্লেখ করেছেন এবং কুরআন মজীদেও সূরা সাবায় এদিকে ইঙ্গিত করেছে।

হুদহুদের একথা, “আমি এমন তথ্য সংগ্রহ করেছি যা আপনি জানেন না” বলার অর্থ এ নয় যে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম সাবার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। একথা সুস্পষ্ট ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার যে শাসকের রাজ্য লোহিত সাগরের দক্ষিণ কিনারে (ইয়ামন) বসবাসরত এমন একটি জাতি সম্পর্কে একেবারে অজ্ঞ থাকতে পারেন না যারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো। তাছাড়া যাবুর থেকে জানা যায়, হযরত সুলাইমানেরও পূর্বে তাঁর মহান পিতা হযরত দাউদ (আ) সাবা সম্পর্কে জানতেন। যাবুরে আমরা তাঁর দোয়ার এ শব্দগুলো পাইঃ

“হে ইশ্বর, তুমি রাজাকে (অর্থাৎ স্বয়ং হযরত দাউদকে) আপনার শাসন, রাজপুত্রকে (অর্থাৎ সুলাইমানকে) তোমার ধর্মশীলতা প্রদান কর.................। তর্শীশ ও দ্বীপগণের রাজগণ নৈবেদ্য আনিবেন। শিবা (অর্থাৎ সাবার ইয়ামনী ও হাবশী শাখাসমূহ) সাবার রাজগণ উপহার দিবেন।” (গীত সংহিতা ৭২: ১-২, ১০-১১)

তাই হুদহুদের কথার অর্থ মনে হয় এই যে, সাবা জাতির কেন্দ্রস্থলে আমি স্বচক্ষে যা দেখে এসেছি তার কোন খবর এখনো পর্যন্ত আপনার কাছে পৌঁছেনি।

৩০.
এ থেকে জানা যায়, সেকালে এ জাতিটি সূর্য দেবতার পূজা করতো। আরবের প্রাচীন বর্ণনাগুলো থেকেও এ জাতির এ একই ধর্মের কথা জানা যায়। ইবনে ইসহাক কুলজি বিজ্ঞান (Genenalogies) অভিজ্ঞদের উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, সাবা জাতির প্রাচীনতম পূর্বপুরুষ হলো আবদে শামস (অর্থাৎ সূর্যের দাস বা সূর্য উপাসক) এবং উপাধি ছিল সাবা। বনী ইসরাঈলের বর্ণনাও এর সমর্থক। সেখানে বলা হয়েছে, হুদহুদ যখন সুলাইমানের (আ) পত্র নিয়ে পৌঁছে যায় সাবার রাণী তখন সূর্য দেবতার পূজা করতে যাচ্ছিলেন। হুদহুদ পথেই পত্রটি রাণীর সামনে ফেলে দেয়।
৩১.
বক্তব্যের ধরন থেকে অনুমিত হয় যে, এখান থেকে শেষ প্যারা পর্যন্তকার বাক্যগুলো হুদহুদের বক্তব্যের অংশ নয়। বরং “সূর্যের সামনে সিজদা করে” পর্যন্ত তার বক্তব্য শেষ হয়ে যায়। এরপর এ উক্তিগুলো আলাহর পক্ষ থেকে করা হয়েছে এ অনুমানকে যে জিনিস শক্তিশালী করে তা হচ্ছে এ বাক্যটি وَيَعْلَمُ مَا تُخْفُونَ وَمَا تُعْلِنُونَ “আর তিনি সবকিছু জানেন, যা তোমরা লুকাও ও প্রকাশ করো।” এ শব্দগুলো থেকে প্রবল ধারণা জন্মে যে, বক্তা হুদহুদ এবং শ্রোতা সুলাইমান ও তার দরবারীগণ নন বরং বক্তা হচ্ছেন আল্লাহ এবং তিনি সম্বোধন করছেন মক্কার মুশরিকদেরকে, যাদেরকে নসিহত করার জন্যই এ কাহিনী শুনানো হচ্ছে। মুফাসসিরগণের মধ্যে রূহুল মা’আনী-এর লেখক আল্লামা আলূসীও এ অনুমানকে অগ্রগণ্য মনে করেছেন।
৩২.
অর্থাৎ দুনিয়ার ধন-সম্পদ উপার্জন এবং নিজের জীবনকে অত্যধিক জাঁকালো ও বিলাসী করার যে কাজে তারা নিমগ্ন ছিল, শয়তান তাদেরকে বুঝিয়ে দেয় যে, বুদ্ধি ও চিন্তার এটিই একমাত্র নিয়োগ ক্ষেত্র এবং দৈহিক ও মানসিক শক্তিসমূহ প্রয়োগের একমাত্র উপযুক্ত স্থান। তাই এ পার্থিব জীবন ও তার আরাম-আয়েশ ছাড়া আর কোন জিনিস সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে চিন্তা-ভাবনা করার দরকার নেই। এ আপাতদৃষ্ট পার্থিব জীবনের পিছনে কোন বাস্তব সত্য নিহিত রয়েছে এবং তোমাদের প্রচলিত ধর্ম, নৈতিকতা, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও জীবন ব্যবস্থার ভিত্তিসমূহ এ সত্যের সাথে সামঞ্জস্য রাখে, না পুরোপুরি তার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে সেসব নিয়ে অযথা মাথা ঘামাবার দরকার নেই বলে শয়তান তাদেরকে নিশ্চিন্ত করে দেয় যে, তোমরা যখন ধন-দৌলত, শক্তি-সামর্থ্য ও শান-শওকতের দিক দিয়ে দুনিয়ায় অগ্রসর হয়েই যাচ্ছো তখন আবার তোমাদের প্রচলিত আকীদা-বিশ্বাস ও মতবাদকে সঠিক কিনা, তা চিন্তা করার প্রয়োজনই বা কি! এসব সঠিক হবার সপক্ষে তো এই একটি প্রমাণই যথেষ্ট যে, তোমরা আরামে ও নিশ্চিন্তে অর্থ ও বিত্তের পাহাড় গড়ে তুলছো এবং আয়েশী জীবন যাপন করছো।
৩৩.
যিনি প্রতি মুহূর্তে এমন সব জিনিসের উদ্ভব ঘটাচ্ছেন যেগুলো জন্মের পূর্বে কোথায় কোথায় লুকিয়ে ছিল কেউ জানে না। ভূ-গর্ভ থেকে প্রতি মুহূর্তে অসংখ্য উদ্ভিদ এবং নানা ধরনের খনিজ পদার্থ বের করছেন। ঊর্ধ্ব জগত থেকে প্রতিনিয়ত এমন সব জিনিসের আর্বিভাব ঘটাচ্ছেন, যার আর্বিভাব না ঘটলে মানুষের ধারণা ও কল্পনায়ও কোনদিন আসতে পারতো না।
৩৪.
অর্থাৎ সকল জিনিসই তাঁর জ্ঞানের আওতাধীন। তাঁর কাছে গোপন ও প্রকাশ্য সব সমান। সবকিছুই তার সামনে সমুজ্জ্বল ও উন্মুক্ত।

নমুনা হিসেবে মহান আল্লাহর এ দু’টি গুণ বর্ণনা করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে এমন বুঝিয়ে দেয়া যে, যদি তারা শয়তানের প্রতারণার জালে আবদ্ধ না হতো তাহলে এ সোজা পথটি পরিষ্কার দেখতে পেতো যে, সূর্য নামের একটি জ্বলন্ত জড় পদার্থ, যার নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কেই কোন অনুভূতি নেই, সে কোন ইবাদাতের হকদার নয় বরং একমাত্র সর্বজ্ঞ ও সর্বদর্শী মহান সত্তা যাঁর অসীম শক্তি প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন অভাবনীয় কৃর্তির উদ্ভব ঘটাচ্ছেন, তিনিই এর হকদার।

৩৫.
এখানে সিজদা করা ওয়াজিব। কুরআনের যেসব জায়গায় সিজদা করা ওয়াজিব বলে ফকীহগণ একমত, এটি তার অন্যতম। এখানে সিজদা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, একজন মু’মিনের সূর্যপূজারীদের থেকে নিজেকে সচেতনভাবে পৃথক করা এবং নিজের কর্মের মাধ্যমে একথার স্বীকৃতি দেয়া ও একথা প্রকাশ করা উচিত যে, সে সূর্যকে নয় বরং একমাত্র আলাহ রব্বুল আলামীনকেই নিজের সিজদার ও ইবাদাতের উপযোগী এবং যোগ্য মনে করে।
৩৬.
এখানে এসে হুদহুদের ভূমিকা শেষ হয়ে যায়। যুক্তিবাদের প্রবক্তারা যে কারণে তাকে পাখি বলে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে সেটি হচ্ছে এই যে, তাদের মতে একটি পাখি এতোটা পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, বিচার ক্ষমতা ও বাকশক্তি সম্পন্ন হওয়া অসম্ভব। সে একটা দেশের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বুঝে ফেলবে যে, এটি সাবা জাতির দেশে, এ দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা এ ধরণের, এর শাসক অমুক মহিলা, এদের ধর্ম সূর্যপূজা, এদের এক আল্লাহর পূজারী হওয়া উচিত ছিল কিন্তু এরা ভ্রষ্টতায় লিপ্ত রয়েছে ইত্যাদি, আর সে এসে হযরত সুলাইমানের সামনে নিজের এসব উপলব্ধি এতো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এটা তাদের দৃষ্টিতে একটি অসম্ভব ব্যাপার। এসব কারণে কট্টর নাস্তিকরা কুরআনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে বলে, কুরআন “কালীলাহ ও দিমনা” (পশু-পাখির মুখ দিয়ে বর্ণিত উপদেশমূলক কল্পকাহিনী) ধরণের কথা বলে। আর কুরআনের যুক্তিবাদী তাফসীর যারা করেন তারা তার শব্দগুলোকে তাদের প্রত্যক্ষ অর্থ থেকে সরিয়ে নিয়ে একথা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, এই হুদহুদ তো আসলে কোন পাখিই ছিল না। কিন্তু জিজ্ঞাস্য এই যে, ভদ্র মহোদয়গণের কাছে এমন কি বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলী আছে যার ভিত্তিতে তারা চূড়ান্তভাবে একথা বলতে পারেন যে, পশু পাখি ও তাদের বিভিন্ন প্রজাতি এবং বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট পাখির শক্তি, দক্ষতা, নৈপুন্য ও ধীশক্তি কতটুকু এবং কতটুকু নয়? যে জিনিসগুলোকে তারা অর্জিত জ্ঞান মনে করছেন সেগুলো আসলে প্রাণীদের জীবন ও আচার-আচরণের নিছক অকিঞ্চিত ও ভাসাভাসা পর্যবেক্ষণ ফল ছাড়া আর কিছুই নয়। বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা কে কি জানে, শোনে ও দেখে, কি অনুভব করে, কি চিন্তা করে ও বোঝে এবং তাদের প্রত্যেকের মন ও বুদ্ধিশক্তি কিভাবে কাজ করে, এসব সম্পর্কে মানুষ আজ পর্যন্ত কোন নিশ্চিত উপায়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। এরপরও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর জীবনের যে সামান্যতম পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে তা থেকে তাদের বিস্ময়কর যোগ্যতা ও ক্ষমতার সন্ধান পাওয়া গেছে। এখন মহান আল্লাহ‌ যিনি এসব প্রাণীর স্রষ্টা তিনি যদি আমাদের বলেন, তিনি তাঁর একজন নবীকে এসব প্রাণীর ভাষা বুঝার এবং এদের সাথে কথা বলার যোগ্যতা দান করেছিলেন এবং সেই নবীর কাছে প্রতিপালিত ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হবার কারণে একটি হুদহুদ পাখি এমনি যোগ্যতা সম্পন্ন হয়েছিল যার ফলে ভিন দেশ থেকে এই এই বিষয় দেখে এসে নবীকে সে তার খবর দিতো, তাহলে আল্লাহর এ বর্ণনার আলোকে আমাদের প্রাণীজগত সম্পর্কে নিজেদের এ পর্যন্তকার যতসামান্য জ্ঞান ও বিপুল সংখ্যক অনুমানের পুর্নবিবেচনা করা উচিত ছিল না? তা না করে নিজেদের এ অকিঞ্চিত জ্ঞানকে মানদণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে আল্লাহর এ বর্ণনার প্রতি মিথ্যা আরোপ অথবা তাঁর মধ্যে সূক্ষ্ম অর্থগত বিকৃতি সাধন করা আমাদের কোন্ ধরণের বৃদ্ধিমত্তার পরিচায়ক?
অনুবাদ: