আশ্-শু’আরা

২২৭ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৫১ ) আর আমরা আশা করি আমাদের রব আমাদের গোনাহ্ মাফ করে দেবেন, কেননা, সবার আগে আমরা ঈমান এনেছি।” ৪০
إِنَّا نَطْمَعُ أَن يَغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَٰيَٰنَآ أَن كُنَّآ أَوَّلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ ٥١
৫২ ) আমি ৪১ মূসার কাছে ওহী পাঠিয়েছি এই মর্মেঃ “রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে যাও, তোমাদের পিছু নেয়া হবে।” ৪২
وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنْ أَسْرِ بِعِبَادِىٓ إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ ٥٢
৫৩ ) এর ফলে ফেরাউন (সৈন্য একত্র করার জন্য) নগরে নগরে নকীব পাঠালো (এবং বলে পাঠালোঃ)
فَأَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَٰشِرِينَ ٥٣
৫৪ ) এরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক,
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ ٥٤
৫৫ ) এরা আমাদের নারাজ করেছে
وَإِنَّهُمْ لَنَا لَغَآئِظُونَ ٥٥
৫৬ ) এবং আমরা একটি দল, সদা-সতর্ক থাকাই আমাদের রীতি।” ৪৩
وَإِنَّا لَجَمِيعٌ حَٰذِرُونَ ٥٦
৫৭ ) এভাবে আমি তাদেরকে বের করে এনেছি তাদের বাগ-বাগীচা, নদী-নির্ঝরিনী,
فَأَخْرَجْنَٰهُم مِّن جَنَّٰتٍ وَعُيُونٍ ٥٧
৫৮ ) ধন-ভাণ্ডার ও সুরম্য আবাসগৃহসমূহ থেকে। ৪৪
وَكُنُوزٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ ٥٨
৫৯ ) এসব ঘটেছে তাদের সাথে আর (অন্যদিকে) আমি বনী ইসরাঈলকে ঐ সব জিনিসের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছি। ৪৫
كَذَٰلِكَ وَأَوْرَثْنَٰهَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٥٩
৬০ ) সকাল হতেই তারা এদের পিছু নিয়ে বের হয়ে পড়লো।
فَأَتْبَعُوهُم مُّشْرِقِينَ ٦٠
৪০.
অর্থাৎ আমাদের একদিন তো আমাদের রবের কাছে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। এখন যদি তুমি আমাদের হত্যা করো, তাহলে এর ফলে যেদিনটি আসবার ছিল সেটি আজ এসে যাবে, এর বেশী কিছু হবে না। এ অবস্থায় ভয় পাওয়ার প্রশ্ন কেন উঠবে? বরং উল্টো আমাদের তো মাগফেরাত পাওয়ার ও গোনাহ মাফের আশা আছে। কারণ আজ এখানে সত্য প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই আমরা তা মেনে নেবার ক্ষেত্রে এক মূহুর্তও দেরি করিনি এবং এ বিশাল সমাবেশে আমরাই প্রথমে অগ্রবর্তী হয়ে ঈমান এনেছি।

ফেরাউন ঢেঁড়া পিটিয়ে যে জনগোষ্ঠীকে সমবেত করেছিল তাদের সবার সামনে যাদুকরদের এ জবাব দু’টি কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেঃ

একঃ ফেরাউন একজন মহা মিথ্যুক, হটকারী ও প্রতারক। সে নিজে ফায়সালা করার জন্য যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলো তাতে মূসা আলাইহিস সালামের সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন বিজয়কে সোজাভাবে মেনে নেবার পরিবর্তে এখন সে সহসা একটি মিথ্যা ষড়যন্ত্রের গল্প ফেঁদে বসেছে এবং হত্যা ও শাস্তির হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক তার স্বীকৃতি আদায় করার চেষ্টা করছে। এ গল্প যদি সামান্যও সত্য হতো, তাহলে যাদুকররা হাত-পা কাটাবার ও শূলবিদ্ধ হয়ে প্রাণ দেবার জন্য এতো হন্যে হয়ে যেতো না। এ ধরণের কোন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যদি কোন রাজত্ব লাভের লোভ থেকে থাকতো, তাহলে এখন তো আর তার কোন অবকাশ নেই। কারণ রাজত্ব এখন যাদের ভাগ্যে আছে তারাই তা ভোগ করবে, এ ভাগ্যাহতরা এখন শুধুমাত্র নিহত হওয়া ও শাস্তি লাভ করার জন্য রয়ে গেছে। এ ভয়াবহ বিপদ মাথায় নিয়েও এ যাদুকরদের নিজেদের ঈমানের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা পরিষ্কারভাবে একথা প্রমাণ করে যে, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সবৈর্ব মিথ্যা। বরং এক্ষেত্রে সত্য কথা হচ্ছে, যাদুকররা নিজেদের যাদুবিদ্যায় পারদর্শী হবার কারণে যথার্থই জানতে পেরেছে যে, মূসা আলাইহিস সালাম যা কিছু দেখিয়েছেন তা কোনক্রমেই যাদু নয় বরং প্রকৃতপক্ষে তা আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনের কুদরতের প্রকাশ।

দুইঃ এ সময় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাজার হাজার জনতার সামনে যে কথাটি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল সেটি ছিল এই যে, আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনের প্রতি ঈমান আনার সাথে সাথেই এ যাদুকরদের চরিত্রে কেমন নৈতিক বিপ্লব সাধিত হয়ে গেলো। ইতিপূর্বে তাদের অবস্থা ছিলঃ তারা পূর্বপুরুষদের ধর্মকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিল এবং এজন্য ফেরাউনের সামনে হাত জোড় করে ইনাম চাইছিল। আর এখন মুহূর্তের মধ্যে তাদের হিম্মত ও সংকল্পের বলিষ্ঠতা এমনি উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যার ফলে সেই ফেরাউন তাদের কাছে তুচ্ছ হয়ে গিয়েছিল, তার সমগ্র রাজশক্তিকে তারা হেয় প্রতিপন্ন করেছিল এবং নিজেদের ঈমানের খাতিরে মৃত্যু ও নিকৃষ্টতম শারীরিক শাস্তি বরদাশত করতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। এ নাজুক মনস্তাত্বিক পরিবেশে মিসরীয়দের মুশরীকি ধর্মের লাঞ্ছনা এবং মূসা আলাইহিস সালাম প্রচারিত সত্য দ্বীনের বলিষ্ঠ প্রচারণা সম্ভবত এর চাইতে বেশী আর হতে পারতো না।

৪১.
ওপরে বর্ণিত ঘটনার পর হিজরতের কথা শুরু করার কারণে কারোর মনে এ ভুল ধারণা সৃষ্টি হওয়া উচিত নয় যে, এর পর পরই হযরত মূসাকে বনী ইসরাঈল শহর মিসর থেকে বের হয়ে আসার হুকুম দেওয়া হয়। আসলে এখানে মাঝখানে কয়েক বছরের ইতিহাস আলোচনা করা হয়নি। সূরা আ’রাফের ১৫-১৬ এবং সূরা ইউনুসের ৯ রুকু’তে এ আলোচনা এসেছে। এর একটি অংশ সামনের দিকে সূরা মু’মিনের ২ থেকে ৫ ও সূরা যুখরুফের ৫ রুকু’তেও আসছে। এখানে যেহেতু বক্তব্য পরম্পরার সাথে সম্পর্ক রেখে সুস্পষ্ট নিদর্শনাসমূহ দেখে নেবার পরও যে ফেরাউন হঠকারিতার পথ অবলম্বন করেছিল তার পরিণতি কি হয়েছিল? এবং যে দাওয়াতের পেছনে আল্লাহর শক্তি নিয়োজিত ছিল তা কিভাবে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল সে কথা বর্ণনা করাই উদ্দেশ্য, তাই ফেরাউন ও হযরত মূসা সংঘাতের প্রাথমিক পর্যায় বর্ণনা করার পর এখন ঘটনা সংক্ষেপ করে এর শুধুমাত্র শেষ দৃশ্য দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
৪২.
উল্লেখ্য, বনী ইসরাঈলের জনবসতি মিসরের কোন এক জায়গায় একসাথে ছিল না। বরং দেশের সমস্ত শহরে ও পল্লীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। বিশেষ করে মামফিস (MAMPHIS) থেকে রামসীস পর্যন্ত এলাকায় তাদের বৃহত্তর অংশ বাস করতো। এ এলাকা জুশান নামে পরিচিত ছিল। (দেখুন তাফহীমুল কুরআন সূরা আ’রাফ, বনী ইসরাঈলের নির্গমন পথের নকশা) কাজেই হযরত মূসাকে যখন হুকুম দেওয়া হয়েছিল যে, তোমাকে এবার বনী ইসরাঈলকে নিয়ে মিসর থেকে বের হয়ে যেতে হবে, তখন সম্ভবত তিনি দেশের সমস্ত বনী ইসরাঈলী বসতিতে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে হিজরত করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এজন্য হয়তো একটি রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। সে রাতে প্রত্যেক জনপদের মুহাজিরদের বের হয়ে পড়তে হবে। রাতের বেলা হিজরত করার জন্য বের হবার নির্দেশ কেন দেয়া হয়েছিল “তোমাদের পিছু নেয়া হবে” উক্তি থেকে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। অর্থাৎ ফেরাউনের সেনাবাহিনী তোমাদের পিছনে ধাওয়া করার আগে রাতের মধ্যে তোমরা নিজেদের পথে অন্তত এতদূর অগ্রসর হয়ে যাওয়ার ফলে তারা অনেক পিছনে পড়ে যায়।
৪৩.
একথাগুলো ফেরাউনের মনের গোপন ভীতি প্রকাশ করে। লোক দেখানো নির্ভীকতার মোড়কে সেই ভীতিকে সে ঢেকে রেখেছিল। একদিকে তাৎক্ষণিক সাহায্যের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সে সৈন্য তলব করছিল। এ থেকে মনে হয় যে, সে বনী ইসরাঈলের দিক থেকে বিপদের আশঙ্কা করছিল। অন্যদিকে আবার একথাটিও গোপন করতে চাচ্ছিল যে, একটি দীর্ঘকালের নিগৃহীত-নিষ্পেষিত এবং চরম লাঞ্ছনা ও দাসত্বের জীবন যাপনকারী জাতির দিক থেকে ফেরাউনের মতো মহাশক্তিধর শাসক কোন আশঙ্কা অনুভব করছে, এমনকি ত্বরিত সাহায্যের জন্য সেনাবাহিনী তলব করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাই নিজের বার্তা সে এমনভাবে পাঠাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে, বেচারা বনী ইসরাঈল তো সামান্য ব্যাপার মাত্র, মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক, তারা আমাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না কিন্তু তারা এমন সব কাজ করেছে যা আমাদের ক্রোধ উৎপাদন করেছে। তাই আমরা তাদেরকে শাস্তি দিতে চাই। কোন আশঙ্কার কারণে আমরা সেনা সমাবেশ করছি না। বরং এটি নিছক একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ মাত্র। বিপদের কোন দূরতম সম্ভাবনা হলেও যথাসময়ে তার মূলোৎপাটনে প্রস্তুত থাকাই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।
৪৪.
অর্থাৎ ফেরাউনের মতে দূরতম এলাকা থেকে সেনাবাহিনী তলব করে বনী ইসরাঈলকে ধ্বংস করার ব্যবস্থা করে সে খুব বুদ্ধিমানের কাজ করেছে। কিন্তু আল্লাহ‌ এমন ব্যবস্থা অবলম্বন করলেন যার ফলে তার নিজের কৌশলে সে নিজেই ফেঁসে গেলো। অর্থাৎ ফেরাউনী রাজ্যের শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তারা নিজ নিজ জায়গা ছেড়ে এমন এক জায়গায় সমবেত হলো যেখানে তাদের সবাইকে এক সাথে সলিল সমাধি লাভ করতে হবে। যদি তারা বনী ইসরাঈলের পিছু না নিতো, তাহলে এর ফল কেবল এতটুকুই হতো যে, একটি জাতি দেশ ত্যাগ করে চলে যেতো। এর চেয়ে বেশী তাদের আর কোন ক্ষতি হতো না, ফলে তারা আগের মতো বিলাস কুঞ্জে বসে আয়েশী জীবন যাপন করতো। কিন্তু তারা বুদ্ধিমত্তার পরম পরাকাষ্ঠা দেখানোর জন্য বনী ইসরাঈলকে নিরাপদে চলে না যেতে দেবার ফায়সালা করলো। শুধু তাই নয়, মুহাজির কাফেলাগুলোর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে চিরকালের জন্য তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইলো। এ উদ্দেশ্যে তাদের শাহজাদাবৃন্দ, বড় বড় সরদার ও রাজকর্মচারীরা তাদের শক্তিমদমত্ত বাদশাহকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের প্রাসাদসমূহ থেকে বের হয়ে পড়লো। তাদের এহেন বুদ্ধিমত্তার এ দ্বিবিধ ফলও দেখা গেলো যে, বনী ইসরাঈল মিসর থেকে বের হয়েও গেলো আবার মিসরের জালেম ফেরাউনী সাম্রাজ্যের প্রধান জনশক্তি (cream) সাগরে বিসর্জিত হলো।
৪৫.
কোন কোন তাফসীরকার এ আয়াতের অর্থ এভাবে গ্রহণ করেছেনঃ যেসব উদ্যান, নদী, ধনভাণ্ডার ও উন্নত আবাসগৃহ ত্যাগ করে এ জালেমরা বের হয়েছিল মহান আল্লাহ‌ বনী ইসরাঈলকে সেগুলোরই ওয়ারিশ বানিয়ে দেন। এ অর্থ যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে অবশ্যই মেনে নিতে হবে যে, ফেরাউনের ডুবে মরার পর বনী ইসরাঈল আবার মিসরে পৌঁছে যাবে এবং ফেরাউনের বংশধরদের সমস্ত ধন-দৌলত এবং শক্তি, পরাক্রম ও গৌরবের অধিকারী হবে। কিন্তু এ জিনিসটি প্রথমত ইতিহাস থেকেও প্রমাণিত নয় এবং দ্বিতীয়ত কুরআনের অন্যান্য জায়গায় বিস্তারিত বিবরণও আয়াতের এ অর্থ গ্রহণের অনুকূল নয়। সূরা বাকারাহ, মায়েদাহ, আ’রাফ ও তা-হা-তে যে ইতিবৃত্ত বর্ণনা করা হয়েছে তা থেকে পরিষ্কার জানা যায়, ফেরাউনের ডুবে মরার পর বনী ইসরাঈল মিসরে ফিরে আসার পরিবর্তে নিজেদের অভীষ্ট মনজিলের (ফিলিস্তীন) দিকেই এগিয়ে যেতে থাকে। তারপর থেকে দাউদের আমল (খৃঃ পূঃ ৯০৩-১০১৩) পর্যন্ত তাদের ইতিহাসের সব ঘটনাই আজকের পৃথিবীতে সিনাই উপদ্বীপ, উত্তর আরব, পূর্ব জর্দান (ট্রান্সজর্ডান) ও ফিলিস্তীন নামে পরিচিত এলাকায় ঘটেছে। তাই এর সঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, আল্লাহ‌ একদিকে ফেরাউনের বংশধরদেরকে এসব নিয়ামত থেকে বঞ্চিত করেন এবং অন্যদিকে বনী ইসরাঈলকে এসব নিয়ামতই দান করেন। অর্থাৎ তারা ফিলিস্তীন ভূখণ্ডে বাগ-বাগীচা, নদ-নদী, ধনভাণ্ডার ও উত্তম আবাসিক ভবন সমূহের অধিকারী হয়। সূরা আ'রাফের নিন্মোক্ত আয়াতে এ ব্যাখ্যার প্রতি সমর্থন পাওয়া যায়ঃ

فَانْتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا عَنْهَا غَافِلِينَ - وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُوا يُسْتَضْعَفُونَ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا

“তখন আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম। কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা আখ্যায়িত করেছিল এবং তা থেকে বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিল। আর তাদের পরিবর্তে আমি যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তাদেরকে এমন একটি দেশের পূর্ব ও পশ্চিমের ওয়ারিস বানিয়ে দিলাম যাকে আমি সমৃদ্ধিতে ভরে দিয়েছিলাম।” (১৩৬-১৩৭ আয়াত)

এ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ দেশের উপমা কুরআন মজীদে সাধারণত ফিলিস্তীনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। যখন কোন এলাকার নাম না নিয়ে এ গুণটি বর্ণনা করা হয় তখন এ থেকে এ এলাকার কথা বলা হয়েছে বলে মনে করা হয়। যেমন সূরা বনী ইসরাঈলে বলা হয়েছেঃ إِلَىالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ

এবং সূরা আম্বিয়ায়ে বলা হয়েছেঃ

وَنَجَّيْنَاهُ وَلُوطًا إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا لِلْعَالَمِينَ

আরো বলা হয়েছেঃ

وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ عَاصِفَةً تَجْرِي بِأَمْرِهِ إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا

এভাবে সূরা সাবা-এ বলা হয়েছে الْقُرَى الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا এ সবগুলো আয়াতে বরকত শব্দ ফিলিস্তীনের জনপদগুলোর সম্পর্কেই ব্যবহৃত হয়েছে।

অনুবাদ: