আশ্-শু’আরা

২২৭ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
১৮১ ) তোমরা মাপ পূর্ণ করে দাও এবং কাউকে কম দিয়ো না।
أَوْفُوا۟ ٱلْكَيْلَ وَلَا تَكُونُوا۟ مِنَ ٱلْمُخْسِرِينَ ١٨١
১৮২ ) সঠিক পাল্লায় ওজন করো
وَزِنُوا۟ بِٱلْقِسْطَاسِ ٱلْمُسْتَقِيمِ ١٨٢
১৮৩ ) এবং লোকদেরকে তাদের জিনিস কম দিয়ো না। যমীনে বিপর্যয় ছড়িয়ে বেড়িও না
وَلَا تَبْخَسُوا۟ ٱلنَّاسَ أَشْيَآءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ ١٨٣
১৮৪ ) এবং সেই সত্ত্বাকে ভয় করো যিনি তোমাদের ও অতীতের প্রজন্মকে সৃষ্টি করেছেন।”
وَٱتَّقُوا۟ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلْجِبِلَّةَ ٱلْأَوَّلِينَ ١٨٤
১৮৫ ) তারা বললো, “তুমি নিছক একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি
قَالُوٓا۟ إِنَّمَآ أَنتَ مِنَ ٱلْمُسَحَّرِينَ ١٨٥
১৮৬ ) এবং তুমি আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও। আর আমরা তো তোমাকে একেবারেই মিথ্যুক মনে করি।
وَمَآ أَنتَ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَإِن نَّظُنُّكَ لَمِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ ١٨٦
১৮৭ ) যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে আকাশের একটি টুকরো ভেঙ্গে আমাদের ওপর ফেলে দাও।”
فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ ١٨٧
১৮৮ ) শো’আইব বললো, আমার রব জানেন তোমরা যা কিছু করছো।” ১১৬
قَالَ رَبِّىٓ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ ١٨٨
১৮৯ ) তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলো। শেষ পর্যন্ত ছাতার দিনের আযাব তাদের ওপর এসে পড়লো ১১৭ এবং তা ছিল বড়ই ভয়াবহ দিনের আযাব।
فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ ٱلظُّلَّةِ إِنَّهُۥ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ ١٨٩
১৯০ ) নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে রয়েছে একটি নিদর্শন। কিন্তু তাদের অধিকাংশ মান্যকারী নয়।
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةً وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ ١٩٠
১১৬.
অর্থাৎ আযাব নাযিল করা আমার কাজ নয়। এটা তো আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনের ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত এবং তিনি তোমাদের কার্যকলাপ দেখছেন। যদি তিনি তোমাদেরকে এ আযাবের উপযুক্ত মনে করেন তাহলে তিনি নিজেই আযাব পাঠাবেন। আইকাবাসীদের এ দাবী ও শো’আইবের এ জবাবের মধ্যে কুরাইশ বংশীয় কাফেরদের জন্য একটি সতর্কবাণী ছিল। অর্থাৎ তারাও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এ একই দাবী করছিলঃ

أَوْ تُسْقِطَ السَّمَاءَ كَمَا زَعَمْتَ عَلَيْنَا كِسَفًا

“অথবা ফেলে দাও আমাদের উপর আকাশের একটি টুকরা যেমন তুমি দাবী করছো।” (বনী ইসরাঈলঃ ৯২)

তাই তাদেরকে বলা হচ্ছে, এ ধরনের দাবী আইকাবাসীরাও তাদের নবীর কাছে করেছিল, তার যে জবাব তারা পেয়েছিল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে তোমাদের দাবীর জন্যও রয়েছে সেই একই জবাব।

১১৭.
এ আযাবের কোন বিস্তারিত বিবরণ কুরআন মজীদে বা কোন সহীহ হাদীসে উল্লেখিত হয়নি। শব্দের বাহ্যিক অর্থ থেকে যা বুঝা যায় তা হচ্ছে এই যে, তারা যেহেতু আসমানী আযাব চেয়েছিল তাই আল্লাহ‌ তাদের ওপর পাঠিয়ে দিলেন একটি মেঘমালা। এ মেঘমালাটি আযাবের বৃষ্টি বর্ষণ করে তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে না দেয়া পর্যন্ত ছাতার মত তাদের ওপর ছেয়ে রইলো। কুরআন থেকে একথা পরিষ্কারভাবে জানা যায় যে, মাদয়ানবাসীদের আযাবের ধরণ আইকাবাসীদের আযাব থেকে আলাদা ছিল। যেমন এখানে বলা হয়েছে এরা ছাতার দিনের আযাবে ধ্বংস হয়েছিল। আর তাদের ওপর আযাব এসেছিল একটি বিষ্ফোরণ ও ভূমিকম্পের মাধ্যমে।

(فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دَارِهِمْ جَاثِمِينَ এবং وَأَخَذَتِ الَّذِينَ ظَلَمُوا الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ)

তাই উভয় সম্প্রদায়কে মিলিয়ে একটি কাহিনী বানিয়ে দেবার চেষ্টা করা ঠিক নয়। কোন কোন তাফসীরকার “ছাতার দিনের আযাব”-এর কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু তাদের এসব তথ্যের উৎস আমাদের জানা নেই। ইবনে জারীর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের এ উক্তি উদ্ধৃত করেছেনঃ

مَنْ حَدَّثَكَ مِنَ الْعُلَمَاءِ مَا عَذَابُ يَوْمِ الظَّلَّةِ فَكَذّبِه-

“আলেমদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তিই ছাতার দিনের আযাব কি ছিল সে সম্পর্কে তোমাকে কোন তথ্য জানাবে, তা সঠিক বলে মেনে নিয়ো না।”

অনুবাদ: