১
আল ফাতিহা
৭ আয়াত
২
আল বাকারাহ
২৮৬ আয়াত
৩
আলে ইমরান
২০০ আয়াত
৪
আন্ নিসা
১৭৬ আয়াত
৫
আল মায়েদাহ
১২০ আয়াত
৬
আল আন'আম
১৬৫ আয়াত
৭
আল আরাফ
২০৬ আয়াত
৮
আল আনফাল
৭৫ আয়াত
৯
আত তওবা
১২৯ আয়াত
১০
ইউনুস
১০৯ আয়াত
১১
হুদ
১২৩ আয়াত
১২
ইউসুফ
১১১ আয়াত
১৩
আর্ রাদ
৪৩ আয়াত
১৪
ইবরাহীম
৫২ আয়াত
১৫
আল হিজর
৯৯ আয়াত
১৬
আন্ নাহল
১২৮ আয়াত
১৭
বনী ইসরাঈল
১১১ আয়াত
১৮
আল কাহফ
১১০ আয়াত
১৯
মারয়াম
৯৮ আয়াত
২০
ত্বাহা
১৩৫ আয়াত
২১
আল আম্বিয়া
১১২ আয়াত
২২
আল হাজ্জ
৭৮ আয়াত
২৩
আল মুমিনূন
১১৮ আয়াত
২৪
আন্ নূর
৬৪ আয়াত
২৫
আল-ফুরকান
৭৭ আয়াত
২৬
আশ্-শু’আরা
২২৭ আয়াত
২৭
আন নামল
৯৩ আয়াত
২৮
আল কাসাস
৮৮ আয়াত
২৯
আল আনকাবূত
৬৯ আয়াত
৩০
আর রূম
৬০ আয়াত
৩১
লুকমান
৩৪ আয়াত
৩২
আস সাজদাহ
৩০ আয়াত
৩৩
আল আহযাব
৭৩ আয়াত
৩৪
আস সাবা
৫৪ আয়াত
৩৫
ফাতের
৪৫ আয়াত
৩৬
ইয়া-সীন
৮৩ আয়াত
৩৭
আস্ সা-ফফা-ত
১৮২ আয়াত
৩৮
সা-দ
৮৮ আয়াত
৩৯
আয যুমার
৭৫ আয়াত
৪০
আল মুমিন
৮৫ আয়াত
৪১
হা-মীম আস সাজদাহ
৫৪ আয়াত
৪২
আশ শূরা
৫৩ আয়াত
৪৩
আয্ যুখরুফ
৮৯ আয়াত
৪৪
আদ দুখান
৫৯ আয়াত
৪৫
আল জাসিয়াহ
৩৭ আয়াত
৪৬
আল আহক্বাফ
৩৫ আয়াত
৪৭
মুহাম্মদ
৩৮ আয়াত
৪৮
আল ফাতহ
২৯ আয়াত
৪৯
আল হুজুরাত
১৮ আয়াত
৫০
ক্বাফ
৪৫ আয়াত
৫১
আয যারিয়াত
৬০ আয়াত
৫২
আত তূর
৪৯ আয়াত
৫৩
আন নাজম
৬২ আয়াত
৫৪
আল ক্বামার
৫৫ আয়াত
৫৫
আর রহমান
৭৮ আয়াত
৫৬
আল ওয়াকি’আ
৯৬ আয়াত
৫৭
আল হাদীদ
২৯ আয়াত
৫৮
আল মুজাদালাহ
২২ আয়াত
৫৯
আল হাশর
২৪ আয়াত
৬০
আল মুমতাহিনা
১৩ আয়াত
৬১
আস সফ
১৪ আয়াত
৬২
আল জুমআ
১১ আয়াত
৬৩
আল মুনাফিকুন
১১ আয়াত
৬৪
আত তাগাবুন
১৮ আয়াত
৬৫
আত তালাক
১২ আয়াত
৬৬
আত তাহরীম
১২ আয়াত
৬৭
আল মুলক
৩০ আয়াত
৬৮
আল কলম
৫২ আয়াত
৬৯
আল হাককাহ
৫২ আয়াত
৭০
আল মাআরিজ
৪৪ আয়াত
৭১
নূহ
২৮ আয়াত
৭২
আল জিন
২৮ আয়াত
৭৩
আল মুযযাম্মিল
২০ আয়াত
৭৪
আল মুদ্দাস্সির
৫৬ আয়াত
৭৫
আল কিয়ামাহ
৪০ আয়াত
৭৬
আদ্ দাহর
৩১ আয়াত
৭৭
আল মুরসালাত
৫০ আয়াত
৭৮
আন নাবা
৪০ আয়াত
৭৯
আন নাযি’আত
৪৬ আয়াত
৮০
আবাসা
৪২ আয়াত
৮১
আত তাকবীর
২৯ আয়াত
৮২
আল ইনফিতার
১৯ আয়াত
৮৩
আল মুতাফফিফীন
৩৬ আয়াত
৮৪
আল ইনশিকাক
২৫ আয়াত
৮৫
আল বুরূজ
২২ আয়াত
৮৬
আত তারিক
১৭ আয়াত
৮৭
আল আ’লা
১৯ আয়াত
৮৮
আল গাশিয়াহ
২৬ আয়াত
৮৯
আল ফজর
৩০ আয়াত
৯০
আল বালাদ
২০ আয়াত
৯১
আশ শামস
১৫ আয়াত
৯২
আল লাইল
২১ আয়াত
৯৩
আদ দুহা
১১ আয়াত
৯৪
আলাম নাশরাহ
৮ আয়াত
৯৫
আত তীন
৮ আয়াত
৯৬
আল আলাক
১৯ আয়াত
৯৭
আল কাদ্র
৫ আয়াত
৯৮
আল বাইয়েনাহ
৮ আয়াত
৯৯
আল যিলযাল
৮ আয়াত
১০০
আল আদিয়াত
১১ আয়াত
১০১
আল কারি’আহ
১১ আয়াত
১০২
আত তাকাসুর
৮ আয়াত
১০৩
আল আসর
৩ আয়াত
১০৪
আল হুমাযা
৯ আয়াত
১০৫
আল ফীল
৫ আয়াত
১০৬
কুরাইশ
৪ আয়াত
১০৭
আল মাউন
৭ আয়াত
১০৮
আল কাউসার
৩ আয়াত
১০৯
আল কাফিরূন
৬ আয়াত
১১০
আন নসর
৩ আয়াত
১১১
আল লাহাব
৫ আয়াত
১১২
আল ইখলাস
৪ আয়াত
১১৩
আল ফালাক
৫ আয়াত
১১৪
আন নাস
৬ আয়াত
الٓر كِتَٰبٌ أَنزَلْنَٰهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ ٱلنَّاسَ مِنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذْنِ رَبِّهِمْ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَمِيدِ ١
আলিফ লাম্ র। হে মুহাম্মাদ। এটি একটি কিতাব, তোমার প্রতি এটি নাযিল করেছি, যাতে তুমি লোকদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর মধ্যে নিয়ে আসো তাদের রবের প্রদত্ত সুযোগ ও সামর্থ্যের ভিত্তিতে, এমন এক আল্লাহর পথে ১ যিনি প্রবল প্রতাপান্বিত ও আপন সত্তায় আপনি প্রশংসিত ২
ٱللَّهِ ٱلَّذِى لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ وَوَيْلٌ لِّلْكَٰفِرِينَ مِنْ عَذَابٍ شَدِيدٍ ٢
এবং পৃথিবী ও আকাশের যাবতীয় বস্তুর মালিক। আর কঠিন ধ্বংসকর শাস্তি রয়েছে তাদের জন্য যারা সত্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করে,
ٱلَّذِينَ يَسْتَحِبُّونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا عَلَى ٱلْءَاخِرَةِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا أُو۟لَٰٓئِكَ فِى ضَلَٰلٍۭ بَعِيدٍ ٣
যারা দুনিয়ার জীবনকে আখেরাতের ওপর প্রাধান্য দেয় ৩ যারা লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে রুখে দিচ্ছে এবং চাচ্ছে এ পথটি (তাদের আকাংখা অনুযায়ী) বাঁকা হয়ে যাক। ৪ ভ্রষ্টতায় এরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِۦ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ فَيُضِلُّ ٱللَّهُ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِى مَن يَشَآءُ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ٤
আমি নিজের বাণী পৌঁছাবার জন্য যখনই কোন রসূল পাঠিয়েছি, সে তার নিজের সম্প্রদায়েরই ভাষায় বাণী পৌঁছিয়েছে, যাতে সে তাদেরকে খুব ভালো করে পরিষ্কারভাবে বুঝাতে পারে। ৫ তারপর আল্লাহ যাকে চান তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হেদায়াত দান করেন। ৬ তিনি প্রবল পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী। ৭
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِـَٔايَٰتِنَآ أَنْ أَخْرِجْ قَوْمَكَ مِنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ وَذَكِّرْهُم بِأَيَّىٰمِ ٱللَّهِ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ ٥
আমি এর আগে মূসাকেও নিজের নিদর্শনাবলী সহকারে পাঠিয়ে ছিলাম। তাকেও আমি হুকুম দিয়েছিলাম, নিজের সম্প্রদায়কে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের মধ্যে নিয়ে এসো এবং তাদেরকে ইতিহাসের ৮ শিক্ষণীয় ঘটনাবলী শুনিয়ে উপদেশ দাও। এ ঘটনাবলীর মধ্যে বিরাট নিদর্শন ৯ রয়েছে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সবর করে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ১০
وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ ٱذْكُرُوا۟ نِعْمَةَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ أَنجَىٰكُم مِّنْ ءَالِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِ وَيُذَبِّحُونَ أَبْنَآءَكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَآءَكُمْ وَفِى ذَٰلِكُم بَلَآءٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ ٦
স্মরণ করো যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বললো, “আল্লাহর সেই অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো যা তিনি তোমাদের প্রতি করেছেন। তিনি তোমাদের ফিরাউনী সম্প্রদায়ের কবল থেকে মুক্ত করেছেন, যারা তোমাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাতো, তোমাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং তোমাদের মেয়েদের জীবিত রাখতো। এর মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য মহা পরীক্ষা ছিল।
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِى لَشَدِيدٌ ٧
আর স্মরণ করো, তোমাদের রব এই বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, যদি কৃতজ্ঞ থাকো ১১ তাহলে আমি তোমাদের আরো বেশী দেবো আর যদি নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হও তাহলে আমার শাস্তি বড়ই কঠিন। ১২
وَقَالَ مُوسَىٰٓ إِن تَكْفُرُوٓا۟ أَنتُمْ وَمَن فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ ٱللَّهَ لَغَنِىٌّ حَمِيدٌ ٨
আর মূসা বললো, “যদি তোমরা কুফরী করো এবং পৃথিবীর সমস্ত অধিবাসীও কাফের হয়ে যায় তাহলে আল্লাহর কিছুই আসে যায় না এবং তিনি আপন সত্তায় আপনি প্রশংসিত।” ১৩
أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَؤُا۟ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِمْ لَا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا ٱللَّهُ جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَرَدُّوٓا۟ أَيْدِيَهُمْ فِىٓ أَفْوَٰهِهِمْ وَقَالُوٓا۟ إِنَّا كَفَرْنَا بِمَآ أُرْسِلْتُم بِهِۦ وَإِنَّا لَفِى شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَنَآ إِلَيْهِ مُرِيبٍ ٩
তোমাদের কাছে কি ১৪ তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত জাতিগুলোর বৃত্তান্ত পৌঁছেনি? নূহের জাতি, আদ, সামূদ এবং তাদের পরে আগমনকারী বহু জাতি, যাদের সংখ্যা একমাত্র আল্লাহ জানেন? তাদের রসূলরা যখন তাদের কাছে দ্ব্যর্থহীন কথা ও সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আসেন তখন তারা নিজেদের মুখে হাত চাপা দেয় ১৫ এবং বলে, “যে বার্তা সহকারে তোমাদের পাঠানো হয়েছে আমরা তা মানি না এবং তোমরা আমাদের যে জিনিসের দাওয়াত দিচ্ছো তার ব্যাপারে আমরা যুগপৎ উদ্বেগ ও সংশয়ের মধ্যে আছি।” ১৬
قَالَتْ رُسُلُهُمْ أَفِى ٱللَّهِ شَكٌّ فَاطِرِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ يَدْعُوكُمْ لِيَغْفِرَ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرَكُمْ إِلَىٰٓ أَجَلٍ مُّسَمًّى قَالُوٓا۟ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا تُرِيدُونَ أَن تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ ءَابَآؤُنَا فَأْتُونَا بِسُلْطَٰنٍ مُّبِينٍ ١٠
তাদের রসূলরা বলে, “আল্লাহর ব্যাপারে কি সন্দেহ আছে, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা? ১৭ তিনি তোমাদের ডাকছেন তোমাদের গুনাহ মাফ করার এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের অবকাশ দেয়ার জন্য।” ১৮ তারা জবাব দেয়, “তোমরা আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও। ১৯ বাপ-দাদাদের থেকে যাদের ইবাদাত চলে আসছে তোমরা তাদের ইবাদাত থেকে আমাদের ফেরাতে চাও। ঠিক আছে তাহলে আনো কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ।” ২০
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦ وَمَا كَانَ لَنَآ أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَٰنٍ إِلَّا بِإِذْنِ ٱللَّهِ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُؤْمِنُونَ ١١
তাদের রসূলুরা তাদেরকে বলে, “যথার্থই আমরা তোমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নই। কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। ২১ আর তোমাদের কোন প্রমাণ এনে দেবো, এ ক্ষমতা আমাদের নেই। প্রমাণ তো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে আসতে পারে এবং ঈমানদারদের আল্লাহরই ওপর ভরসা রাখা উচিত।
وَمَا لَنَآ أَلَّا نَتَوَكَّلَ عَلَى ٱللَّهِ وَقَدْ هَدَىٰنَا سُبُلَنَا وَلَنَصْبِرَنَّ عَلَىٰ مَآ ءَاذَيْتُمُونَا وَعَلَى ٱللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُتَوَكِّلُونَ ١٢
আর আমরা আল্লাহরই ওপর ভরসা করবো না কেন, যখন আমাদের জীবনের পথে তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন? তোমরা আমাদের যে যন্ত্রণা দিচ্ছো তার ওপর আমরা সবর করবো এবং ভরসাকারীদের ভরসা আল্লাহরই ওপর হওয়া উচিত।”
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِرُسُلِهِمْ لَنُخْرِجَنَّكُم مِّنْ أَرْضِنَآ أَوْ لَتَعُودُنَّ فِى مِلَّتِنَا فَأَوْحَىٰٓ إِلَيْهِمْ رَبُّهُمْ لَنُهْلِكَنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ ١٣
শেষ পর্যন্ত অস্বীকারকারীরা তাদের রসূলদের বলে দিল, “হয় তোমাদের ফিরে আসতে হবে আমাদের মিল্লাতে ২২ আর নয়তো আমরা তোমাদের বের করে দেবো আমাদের দেশ থেকে।” তখন তাদের রব তাদের কাছে অহী পাঠালেন, “আমি এ জালেমদের ধ্বংস করে দেবো
وَلَنُسْكِنَنَّكُمُ ٱلْأَرْضَ مِنۢ بَعْدِهِمْ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَافَ مَقَامِى وَخَافَ وَعِيدِ ١٤
এবং এদের পর পৃথিবীতে তোমাদের প্রতিষ্ঠিত করবো। ২৩ এটা হচ্ছে তার পুরস্কার, যে আমার সামনে জবাবদিহি করার ভয় করে এবং আমার শাস্তির ভয়ে ভীত।”
وَٱسْتَفْتَحُوا۟ وَخَابَ كُلُّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ ١٥
তারা ফায়সালা চেয়েছিল (ফলে এভাবে তাদের ফায়সালা হলো) এবং প্রত্যেক উদ্ধত সত্যের দুশমন ব্যর্থ মনোরথ হলো। ২৪
مِّن وَرَآئِهِۦ جَهَنَّمُ وَيُسْقَىٰ مِن مَّآءٍ صَدِيدٍ ١٦
এরপর সামনে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সেখানে তাকে পান করতে দেয়া হবে গলিত পুঁজের মতো পানি,
يَتَجَرَّعُهُۥ وَلَا يَكَادُ يُسِيغُهُۥ وَيَأْتِيهِ ٱلْمَوْتُ مِن كُلِّ مَكَانٍ وَمَا هُوَ بِمَيِّتٍ وَمِن وَرَآئِهِۦ عَذَابٌ غَلِيظٌ ١٧
যা সে জবরদস্তি গলা দিয়ে নামাবার চেষ্টা করবে এবং বড় কষ্টে নামাতে পারবে। মৃত্যু সকল দিক দিয়ে তার ওপর ছেয়ে থাকবে কিন্তু তার মৃত্যু হবে না এবং সামনের দিকে একটি কঠোর শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে।
مَّثَلُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِرَبِّهِمْ أَعْمَٰلُهُمْ كَرَمَادٍ ٱشْتَدَّتْ بِهِ ٱلرِّيحُ فِى يَوْمٍ عَاصِفٍ لَّا يَقْدِرُونَ مِمَّا كَسَبُوا۟ عَلَىٰ شَىْءٍ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلضَّلَٰلُ ٱلْبَعِيدُ ١٨
যারা তাদের রবের সাথে কুফরী করলো তাদের কার্যক্রমের উপমা হচ্ছে এমন ছাই-এর মতো, যাকে একটি ঝনঝাক্ষুব্ধ দিনের প্রবল বাতাস উড়িয়ে দিয়েছে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের কোনই ফল লাভ করতে পারবে না। ২৫ এটিই চরম বিভ্রান্তি।
أَلَمْ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّ إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ وَيَأْتِ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ ١٩
তুমি কি দেখছো না, আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন? ২৬ তিনি চাইলে তোমাদের নিয়ে যান এবং একটি নতুন সৃষ্টি তোমাদের স্থলাভিসিক্ত হয়।
وَمَا ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ بِعَزِيزٍ ٢٠
এমনটি করা তাঁর জন্য মোটেই কঠিন নয়। ২৭
وَبَرَزُوا۟ لِلَّهِ جَمِيعًا فَقَالَ ٱلضُّعَفَٰٓؤُا۟ لِلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ أَنتُم مُّغْنُونَ عَنَّا مِنْ عَذَابِ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍ قَالُوا۟ لَوْ هَدَىٰنَا ٱللَّهُ لَهَدَيْنَٰكُمْ سَوَآءٌ عَلَيْنَآ أَجَزِعْنَآ أَمْ صَبَرْنَا مَا لَنَا مِن مَّحِيصٍ ٢١
আর এরা যখন সবাই একত্রে আল্লাহর সামনে উন্মুক্ত হয়ে যাবে, ২৮ সে সময় এদের মধ্য থেকে যারা দুনিয়ায় দুর্বল ছিল তারা যারা নিজেদেরকে বড় বলে জাহির করতো তাদেরকে বলবে, “দুনিয়ায় আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম, এখন কি তোমরা আল্লাহর আযাব থেকে আমাদের বাঁচাবার জন্যও কিছু করতে পারো? তারা জবাব দেবে, “আল্লাহ যদি আমাদের মুক্তিলাভের কোন পথ দেখাতেন তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তোমাদেরও দেখিয়ে দিতাম। এখন তো সব সমান, কান্নাকাটি করো বা সবর করো- সর্বাবস্থায় আমাদের বাঁচার কোন পথ নেই।” ২৯
وَقَالَ ٱلشَّيْطَٰنُ لَمَّا قُضِىَ ٱلْأَمْرُ إِنَّ ٱللَّهَ وَعَدَكُمْ وَعْدَ ٱلْحَقِّ وَوَعَدتُّكُمْ فَأَخْلَفْتُكُمْ وَمَا كَانَ لِىَ عَلَيْكُم مِّن سُلْطَٰنٍ إِلَّآ أَن دَعَوْتُكُمْ فَٱسْتَجَبْتُمْ لِى فَلَا تَلُومُونِى وَلُومُوٓا۟ أَنفُسَكُم مَّآ أَنَا۠ بِمُصْرِخِكُمْ وَمَآ أَنتُم بِمُصْرِخِىَّ إِنِّى كَفَرْتُ بِمَآ أَشْرَكْتُمُونِ مِن قَبْلُ إِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ٢٢
আর যখন সবকিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে তখন শয়তান বলবে, “সত্যি বলতে কি আল্লাহ তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করে ছিলেন তা সব সত্যি ছিল এবং আমি যেসব ওয়াদা করেছিলাম তার মধ্য থেকে একটিও পুরা করিনি। ৩০ তোমাদের ওপর আমার তো কোন জোর ছিল না, আমি তোমাদের আমার পথের দিকে আহ্বান জানানো ছাড়া আর কিছুই করিনি এবং তোমরা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলে। ৩১ এখন আমার নিন্দাবাদ করো না, নিজেরাই নিজেদের নিন্দাবাদ করো। এখানে না আমি তোমাদের অভিযোগের প্রতিকার করতে পারি আর না তোমরা আমার। ইতিপূর্বে তোমরা যে আমাকে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কতৃত্বের শরীক করেছিলে ৩২ তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, এ ধরনের জালেমদের জন্য তো যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি অবধারিত।
وَأُدْخِلَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ تَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَٰمٌ ٢٣
অপরদিকে যারা দুনিয়ায় ঈমান এনেছে এবং যারা সৎ কাজ করেছে তাদেরকে এমন বাগীচায় প্রবেশ করানো হবে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে চিরকাল বসবাস করবে। সেখানে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানো হবে শান্তি ও নিরাপত্তার মোবারকবাদ সহকারে। ৩৩
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا كَلِمَةً طَيِّبَةً كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِى ٱلسَّمَآءِ ٢٤
তুমি কি দেখছো না আল্লাহ কালেমা তাইয়েবার ৩৪ উপমা দিয়েছেন কোন্ জিনিসের সাহায্যে? এর উপমা হচ্ছে যেমন একটি ভালো জাতের গাছ, যার শিকড় মাটির গভীরে প্রোথিত এবং শাখা-প্রশাখা আকাশে পৌঁছে গেছে। ৩৫
تُؤْتِىٓ أُكُلَهَا كُلَّ حِينٍۭ بِإِذْنِ رَبِّهَا وَيَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ ٢٥
প্রতি মুহূর্তে নিজের রবের হুকুমে সে ফলদান করে। ৩৬ এ উপমা আল্লাহ এ জন্য দেন যাতে লোকেরা এর সাহায্যে শিক্ষা লাভ করতে পারে।
وَمَثَلُ كَلِمَةٍ خَبِيثَةٍ كَشَجَرَةٍ خَبِيثَةٍ ٱجْتُثَّتْ مِن فَوْقِ ٱلْأَرْضِ مَا لَهَا مِن قَرَارٍ ٢٦
অন্যদিকে অসৎ বাক্যের ৩৭ উপমা হচ্ছে, একটি মন্দ গাছ, যাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপড়ে দূরে নিক্ষেপ করা হয়, যার কোন স্থায়িত্ব নেই। ৩৮
يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱلْقَوْلِ ٱلثَّابِتِ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَفِى ٱلْءَاخِرَةِ وَيُضِلُّ ٱللَّهُ ٱلظَّٰلِمِينَ وَيَفْعَلُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُ ٢٧
ঈমানদারদেরকে আল্লাহ একটি শাশ্বত বাণীর ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে প্রতিষ্ঠা দান করেন। ৩৯ আর জালেমদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন। ৪০ আল্লাহ যা চান তাই করেন।
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ بَدَّلُوا۟ نِعْمَتَ ٱللَّهِ كُفْرًا وَأَحَلُّوا۟ قَوْمَهُمْ دَارَ ٱلْبَوَارِ ٢٨
তুমি দেখেছো তাদেরকে, যারা আল্লাহর নিয়ামত লাভ করলো এবং তাকে কৃতঘ্নতায় পরিণত করলো আর (নিজেদের সাথে) নিজেদের সম্প্রদায়কেও ধ্বংসের আবর্তে ঠেলে দিল-
جَهَنَّمَ يَصْلَوْنَهَا وَبِئْسَ ٱلْقَرَارُ ٢٩
অর্থাৎ জাহান্নাম, যার মধ্যে তাদেরকে ঝল্সানো হবে এবং তা নিকৃষ্টতম আবাস-
وَجَعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادًا لِّيُضِلُّوا۟ عَن سَبِيلِهِۦ قُلْ تَمَتَّعُوا۟ فَإِنَّ مَصِيرَكُمْ إِلَى ٱلنَّارِ ٣٠
এবং আল্লাহর কিছু সমকক্ষ বানিয়ে নিল, যাতে তারা তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করে দেয়। এদেরকে বলো, ঠিক আছে, মজা ভোগ করে নাও, শেষ পর্যন্ত তোমাদের তো ফিরে যেতে হবে দোজখের মধ্যেই
قُل لِّعِبَادِىَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌ لَّا بَيْعٌ فِيهِ وَلَا خِلَٰلٌ ٣١
হে নবী! আমার যে বান্দারা ঈমান এনেছে তাদেরকে বলে দাও, তারা যেন নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে (সৎপথে) ব্যয় করে ৪১ - সেই দিন আসার আগে যেদিন না বেচা-কেনা হবে আর না হতে পারবে বন্ধু বাৎসল্য। ৪২
ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءً فَأَخْرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ رِزْقًا لَّكُمْ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلْفُلْكَ لِتَجْرِىَ فِى ٱلْبَحْرِ بِأَمْرِهِۦ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلْأَنْهَٰرَ ٣٢
আল্লাহ তো তিনিই, ৪৩ যিনি এ পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তারপর তার মাধ্যমে তোমাদের জীবিকা দান করার জন্য নানা প্রকার ফল উৎপন্ন করেছেন। যিনি নৌযানকে তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন, যাতে তাঁর হুকুমে তা সাগরে বিচরণ করে এবং নদী সমূহকে তোমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন।
وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ دَآئِبَيْنِ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ ٣٣
যিনি সূর্য ও চন্দ্রকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন, তারা অবিরাম চলছে এবং রাত ও দিনকে তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন। ৪৪
وَءَاتَىٰكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلْتُمُوهُ وَإِن تَعُدُّوا۟ نِعْمَتَ ٱللَّهِ لَا تُحْصُوهَآ إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ ٣٤
যিনি এমন সবকিছু তোমাদের দিয়েছেন যা তোমরা চেয়েছো ৪৫ যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামতসমূহ গণনা করতে চাও তাহলে তাতে সক্ষম হবে না। আসলে মানুষ বড়ই বে-ইনসাফ ও অকৃতজ্ঞ।
وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِيمُ رَبِّ ٱجْعَلْ هَٰذَا ٱلْبَلَدَ ءَامِنًا وَٱجْنُبْنِى وَبَنِىَّ أَن نَّعْبُدَ ٱلْأَصْنَامَ ٣٥
স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন ইবরাহীম দোয়া করছিল, ৪৬ “হে আমার রব! এ শহরকে ৪৭ নিরাপত্তার শহরে পরিণত করো এবং আমার ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচাও।
رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِّنَ ٱلنَّاسِ فَمَن تَبِعَنِى فَإِنَّهُۥ مِنِّى وَمَنْ عَصَانِى فَإِنَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ٣٦
হে আমার রব! এ মূর্তিগুলো অনেককে ভ্রষ্টতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, ৪৮ (হয়তো আমার সন্তানদেরকেও এরা পথভ্রষ্ট করতে পারে, তাই তাদের মধ্য থেকে) যে আমার পথে চলবে সে আমার অন্তর্গত আর যে আমার বিপরীত পথ অবলম্বন করবে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যি তুমি ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। ৪৯
رَّبَّنَآ إِنِّىٓ أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِى بِوَادٍ غَيْرِ ذِى زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ ٱلْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱجْعَلْ أَفْـِٔدَةً مِّنَ ٱلنَّاسِ تَهْوِىٓ إِلَيْهِمْ وَٱرْزُقْهُم مِّنَ ٱلثَّمَرَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ ٣٧
হে আমাদের রব! আমি একটি তৃণ পানিহীন উপত্যকায় নিজের বংশধরদের একটি অংশকে তোমার পবিত্র গৃহের কাছে এনে বসবাস করিয়েছি। পরওয়ারদিগার! এটা আমি এ জন্য করেছি যে, এরা এখানে নামায কায়েম করবে। কাজেই তুমি লোকদের মনকে এদের প্রতি আকৃষ্ট করো এবং ফলাদি দিয়ে এদের আহারের ব্যবস্থা করো, ৫০ হয়তো এরা শোকরগুজার হবে।
رَبَّنَآ إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِى وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَىٰ عَلَى ٱللَّهِ مِن شَىْءٍ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فِى ٱلسَّمَآءِ ٣٨
হে পরওয়ারদিগার! তুমি জানো যা কিছু আমরা লুকাই এবং যা কিছু প্রকাশ করি।” ৫১ - আর ৫২ যথার্থই আল্লাহর কাছে কিছুই গোপন নেই, না পৃথিবীতে না আকাশে-
ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ٱلَّذِى وَهَبَ لِى عَلَى ٱلْكِبَرِ إِسْمَٰعِيلَ وَإِسْحَٰقَ إِنَّ رَبِّى لَسَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ ٣٩
“শোকর সেই আল্লাহর, যিনি এ বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাকের মতো পুত্র দিয়েছেন। আসলে আমার রব নিশ্চয়ই দোয়া শোনেন।
رَبِّ ٱجْعَلْنِى مُقِيمَ ٱلصَّلَوٰةِ وَمِن ذُرِّيَّتِى رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَآءِ ٤٠
হে আমার রব! আমাকে নামায প্রতিষ্ঠাকারী করো এবং আমার বংশধরদের থেকেও (এমন লোকদের উঠাও যারা এ কাজ করবে) । পরওয়ারদিগার! আমার দোয়া কবুল করো।
رَبَّنَا ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ ٱلْحِسَابُ ٤١
হে পরওয়াদিগার! যেদিন হিসেব কায়েম হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং সমস্ত মুমিনদেরকে মাফ করে দিয়ো।” ৫৩
وَلَا تَحْسَبَنَّ ٱللَّهَ غَٰفِلًا عَمَّا يَعْمَلُ ٱلظَّٰلِمُونَ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ ٱلْأَبْصَٰرُ ٤٢
এখন এ জালেমরা যা কিছু করছে আল্লাহকে তোমরা তা থেকে গাফেল মনে করো না। আল্লাহ তো তাদেরকে সময় দিচ্ছেন সেই দিন পর্যন্ত যখন তাদের চক্ষু বিস্ফোরিত হয়ে যাবে,
مُهْطِعِينَ مُقْنِعِى رُءُوسِهِمْ لَا يَرْتَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْفُهُمْ وَأَفْـِٔدَتُهُمْ هَوَآءٌ ٤٣
তারা মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি ওপরের দিকে স্থির হয়ে থাকবে ৫৪ এবং মন উড়তে থাকবে।
وَأَنذِرِ ٱلنَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ ٱلْعَذَابُ فَيَقُولُ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ رَبَّنَآ أَخِّرْنَآ إِلَىٰٓ أَجَلٍ قَرِيبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ ٱلرُّسُلَ أَوَلَمْ تَكُونُوٓا۟ أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ ٤٤
হে মুহাম্মাদ! সেই দিন সম্পর্কে এদেরকে সতর্ক করো, যে দিন আযাব এসে এদেরকে ধরবে। সে সময় এ জালেমরা বলবে, “হে আমাদের রব! আমাদের একটুখানি অবকাশ দাও, আমরা তোমার ডাকে সাড়া দেবো এবং রসূলদের অনুসরণ করবো।” কিন্তু তাদেরকে পরিষ্কার জবাব দেয়া হবেঃ “তোমরা কি তারা নও যারা ইতিপূর্বে কসম খেয়ে খেয়ে বলতো, আমাদের কখনো পতন হবে না?”
وَسَكَنتُمْ فِى مَسَٰكِنِ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ وَتَبَيَّنَ لَكُمْ كَيْفَ فَعَلْنَا بِهِمْ وَضَرَبْنَا لَكُمُ ٱلْأَمْثَالَ ٤٥
অথচ তোমরা সেই সব জাতির আবাস ভূমিতে বসবাস করেছিলে যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল এবং আমি তাদের সাথে কি ব্যবহার করেছি তা দেখেও ছিলে আর তাদের দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে আমি তোমাদের বুঝিয়েও ছিলাম।
وَقَدْ مَكَرُوا۟ مَكْرَهُمْ وَعِندَ ٱللَّهِ مَكْرُهُمْ وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ ٱلْجِبَالُ ٤٦
তারা তাদের সব রকমের চক্রান্ত করে দেখেছে কিন্তু তাদের প্রত্যেকটি চক্রান্তের জবাব আল্লাহর কাছে ছিল, যদিও তাদের চক্রান্তগুলো এমন পর্যায়ের ছিল যাতে পাহাড় টলে যেতো। ৫৫
فَلَا تَحْسَبَنَّ ٱللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِۦ رُسُلَهُۥٓ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ ذُو ٱنتِقَامٍ ٤٧
কাজেই হে নবী! কখখনো এ ধারণা করো না যে, আল্লাহ তাঁর নবীদের প্রতি প্রদত্ত ওয়াদার বিরুদ্ধাচরণ করবেন। ৫৬ আল্লাহ প্রতাপান্বিত ও প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
يَوْمَ تُبَدَّلُ ٱلْأَرْضُ غَيْرَ ٱلْأَرْضِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُ وَبَرَزُوا۟ لِلَّهِ ٱلْوَٰحِدِ ٱلْقَهَّارِ ٤٨
তাদেরকে সেই দিনের ভয় দেখাও যেদিন পৃথিবী ও আকাশকে পরিবর্তিত করে অন্য রকম করে দেয়া হবে ৫৭ এবং সবাই এক মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে উন্মুক্ত হয়ে হাযির হবে।
وَتَرَى ٱلْمُجْرِمِينَ يَوْمَئِذٍ مُّقَرَّنِينَ فِى ٱلْأَصْفَادِ ٤٩
সেদিন তোমরা অপরাধীদের দেখবে, শিকলে তাদের হাত পা বাঁধা,
سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٍ وَتَغْشَىٰ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ ٥٠
আলকাতরার ৫৮ পোশাক পরে থাকবে এবং আগুনের শিখা তাদের চেহারা ঢেকে ফেলতে থাকবে।
لِيَجْزِىَ ٱللَّهُ كُلَّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ ٥١
এটা এ জন্য হবে যে, আল্লাহ প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের বদলা দেবেন। হিসেব নিতে আল্লাহর একটুও দেরী হয় না।
هَٰذَا بَلَٰغٌ لِّلنَّاسِ وَلِيُنذَرُوا۟ بِهِۦ وَلِيَعْلَمُوٓا۟ أَنَّمَا هُوَ إِلَٰهٌ وَٰحِدٌ وَلِيَذَّكَّرَ أُو۟لُوا۟ ٱلْأَلْبَٰبِ ٥٢
এটি একটি পয়গাম সব মানুষের জন্য এবং এটি পাঠানো হয়েছে এ জন্য যাতে এর মাধ্যমে তাদেরকে সতর্ক করা যায় এবং তারা জেনে নেয় যে, আসলে আল্লাহ মাত্র একজনই আর যারা বুদ্ধি-বিবেচনা রাখে তারা সচেতন হয়ে যায়।