আয়াত
৩১ ) নানা জাতের ফল ও ঘাস
وَفَٰكِهَةً وَأَبًّا ٣١
৩২ ) তোমাদের ও তোমাদের গৃহপালিত পশুর জীবন ধারণের সামগ্রী হিসেবে। ২০
مَّتَٰعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَٰمِكُمْ ٣٢
৩৩ ) অবশেষে যখন সেই কান ফাটানো আওয়াজ আসবে ২১
فَإِذَا جَآءَتِ ٱلصَّآخَّةُ ٣٣
৩৪ ) সেদিন মানুষ পালাতে থাকবে ---
يَوْمَ يَفِرُّ ٱلْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ ٣٤
৩৫ ) নিজের ভাই, বোন,
وَأُمِّهِۦ وَأَبِيهِ ٣٥
৩৬ ) মা, বাপ, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের থেকে। ২২
وَصَٰحِبَتِهِۦ وَبَنِيهِ ٣٦
৩৭ ) তাদের প্রত্যেকে সেদিন এমন কঠিন সময়ের মুখোমুখি হবে যে, নিজের ছাড়া আর কারোর কথা তার মনে থাকবে না। ২৩
لِكُلِّ ٱمْرِئٍ مِّنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ ٣٧
৩৮ ) সেদিন কতক চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ مُّسْفِرَةٌ ٣٨
৩৯ ) হাসিমুখ ও খুশীতে ডগবগ করবে।
ضَاحِكَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌ ٣٩
৪০ ) আবার কতক চেহারা হবে সেদিন ধূলিমলিন,
وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ ٤٠
২০.
অর্থাৎ কেবল তোমাদের জন্যই নয়, তোমাদের যেসব পশু থেকে তোমরা গোশত, চর্বি, দুধ, মাখন ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী লাভ করে থাকো এবং যারা তোমাদের আরো অসংখ্য অর্থনৈতিক প্রয়োজন পূর্ণ করে থাকে, তাদের জন্যও। এসব কিছুই কি এজন্য করা হয়েছে যে, তোমরা এসব দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করে লাভবান হবে এবং যে আল্লাহর রিযিক লাভ করে তোমরা বেঁচে আছো তাঁর নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করবে?
২১.
এখানে কিয়ামতের শেষ শিংগা ধ্বনির কথা বলা হয়েছে। এই বিকট আওয়াজ বুলন্দ হবার সাথে সাথেই মরা মানুষেরা বেঁচে উঠবে।
২২.
প্রায় এই একই ধরনের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে সূরা মা’আরিজের ১০ থেকে ১৪ পর্যন্ত আয়াতে। পালাবার মানে এও হতে পারে যে, সেদিন মানুষ নিজের ঐসব প্রিয়তম আত্মীয়-স্বজনকে বিপদ সাগরে হাবুডুবু খেতে দেখে তাদের সাহায্যার্থে দৌড়ে যাবার পরিবর্তে উল্টো তাদের থেকে দূরে পালিয়ে যেতে থাকবে, যাতে তারা সাহায্যের জন্য তাকে ডাকতে না থাকে। আবার এর এ মানেও হতে পারে যে, দুনিয়ায় আল্লাহর ভয় না করে পরস্পরকে গোমরাহ করতে থেকেছে, তার কুফল সামনে স্বমূর্তিতে প্রকাশিত দেখে তাদের প্রত্যেকে যাতে অন্যের গোমরাহী ও গোনাহের দায়িত্ব কেউ তার ঘাড়ে না চাপিয়ে দেয় এই ভয়ে অন্যের থেকে পালাতে থাকবে। ভাই ভাইকে, সন্তান মা-বাপকে, স্বামী স্ত্রীকে এবং মা-বাপ সন্তানকে এই মর্মে ভয় করতে থাকবে যে, নিশ্চয়ই এবার আমার বিরুদ্ধে মামলায় এরা সাক্ষী দেবে।
২৩.
হাদীস গ্রন্থগুলোতে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ও সনদ পরম্পরায় বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ একেবারেই উলংঙ্গ হয়ে উঠবে।” একথা শুনে তাঁর পবিত্র স্ত্রীদের মধ্য থেকে কোন একজন (কোন কোন বর্ণনা মতে হযরত আয়েশা, কোন বর্ণনা মতে হযরত সওদা আবার কোন বর্ণনা অনুযায়ী অন্য একজন মহিলা) ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের লজ্জাস্থান কি সেদিন সবার সামনে খোলা থাকবে? জবাবে রসূলুল্লাহ ﷺ এই আয়াতটি তেলাওয়াত করে বলেন, সেদিন অন্যের দিকে তাকাবার মতো হুঁশ ও চেতনা করো থাকবে না। (নাসাঈ, তিরমিযী, ইবনে আবী হাতেম, ইবনে জারীর, তাবারানী, ইবনে মারদুইয়া, বায়হাকী ও হাকেম)।