এসব লোককে আল্লাহর সাহায্যকারী মূলত এজন্য বলা হয়নি যে, কোন কাজের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর কোন সৃষ্টির মুখাপেক্ষী (নাউযুবিল্লাহ)। বরং তাদেরকে আল্লাহর সাহায্যকারী এ জন্য বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তা’আলা মানুষকে জীবনের যে গণ্ডিতে কুফর ও ঈমান এবং আনুগত্য ও নাফরমানীর যে স্বাধীনতা দিয়েছেন সে ক্ষেত্রে তিনি তাঁর অজেয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জোর করে মানুষকে মু’মিন ও অনুগত বানান না। বরং নবী-রসূল ও কিতাবের সাহায্যে তাদেরকে উপদেশ দেন, শিক্ষাদান করেন এবং বুঝিয়ে সুজিয়ে সঠিক পথ দেখানোর পন্থা অবলম্বন করেন। যে ব্যক্তি এই উপদেশ ও শিক্ষাকে স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে, গ্রহণ করে সে মু’মিন; যে কাজে পরিণত করে সে মুসলিম, অনুগত ও আবেদ; যে আল্লাহভীতির নীতি অনুসরণ করে সে মুত্তাকী, যে নেকীর কাজে অগ্রগামী হয় সে ‘মুহসিন’ এবং এ থেকে আরো এক ধাপ অগ্রসর হয়ে যে এই উপদেশ ও শিক্ষার সাহায্য আল্লাহর বান্দাদের সংস্কার ও সংশোধনের উদ্দেশ্যে এবং কুফর ও পাপাচারের স্থলে আল্লাহ আনুগত্যের বিধান কায়েম করার জন্য কাজ করতে শুরু করে আল্লাহ তা’আলা তাকে তাঁর সাহায্যকারী বলে আখ্যায়িত করেন। যেমন উপরোক্ত আয়াতের কয়েকটি স্থানে স্পষ্ট ভাষায় এ কথাটিই বলা হয়েছে। যদি আল্লাহর সাহায্যকারী না বলে আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যকারী বলা মূল উদ্দেশ্য হতো তাহলে أَنْصَارُ اللَّهِ না বলে انصار دين الله বলা হতো, ينصرون الله না বলে ينصرون دين الله বলা হতো এবং ان تنصروا الله না বলে ان تنصروا دين الله বলা হতো। একটি বিষয় বলার জন্য আল্লাহ তা’আলা যখন এ কথাই প্রমাণ করে যে, এ ধরণের লোকদের আল্লাহর সাহায্যকারী বলাই এর মূল উদ্দেশ্য। তবে এই সাহায্য নাউযুবিল্লাহ এ অর্থে নয় যে, এসব লোক আল্লাহ তা’আলার এমন কোন প্রয়োজন পূরণ করেছে যার তিনি মুখাপেক্ষী। বরং এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলার যে কাজ তাঁর জবরদস্ত শক্তির জোরে না করে তাঁর নবী-রসূল ও কিতাবের সাহায্যে করতে চান এসব লোক সেই কাজে অংশগ্রহণ করছে।