وَمَا لَكُمْ لَا تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ ۙ وَٱلرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ لِتُؤْمِنُوا۟ بِرَبِّكُمْ وَقَدْ أَخَذَ مِيثَـٰقَكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনছো না। অথচ তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আনার জন্য রসূল তোমাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন ১১ অথচ তিনি তোমাদের থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। ১২ যদি তোমরা সত্যিই স্বীকার করে নিতে প্রস্তুত হও।
১১
অর্থাৎ এমন এক পরিস্থিতিতে তোমরা ঈমানের পরিপন্থী এই কর্মপন্থা গ্রহণ করছো যখন আল্লাহর রসূল নিজে তোমাদের মাঝে আছেন এবং তোমাদেরকে কোন দূরবর্তী মাধ্যমের সাহায্যে ঈমানের দাওয়াত দেয়া হচ্ছে না, বরং তোমাদের কাছে সে দাওয়াত সরাসরি আল্লাহর রসূলের মুখ থেকে পৌঁছচ্ছে।
১২
কিছু সংখ্যক মুফাসসির এ প্রতিশ্রুতি বলতে অর্থ করেছেন আল্লাহর দাসত্ব করার সে প্রতিশ্রুতি যা সৃষ্টির সূচনা পর্বে আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাঁর সমস্ত সন্তানকে বের করে তাদের সবার নিকট থেকে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু অপর কিছু সংখ্যক তাফসীরকার এর অর্থ করেছেন সে প্রতিশ্রুতি যা প্রত্যেক মানুষের প্রকৃতি ও প্রকৃতিগত বিবেক-বুদ্ধিতে আল্লাহর দাসত্বের জন্য বর্তমান। কিন্তু সঠিক কথা হলো, এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্যের সচেতন প্রতিশ্রুতি ঈমান গ্রহণ করার মাধ্যমে প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহর সাথে যে প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়। কুরআন মজীদের অন্য এক স্থানে যে ভাষায় এ প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করা হয়েছে তা হচ্ছেঃ
وَاذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَمِيثَاقَهُ الَّذِي وَاثَقَكُمْ بِهِ إِذْ قُلْتُمْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ (المائدة : 7)
“আল্লাহ তোমাদের যেসব নিয়ামত দান করেছেন সেসব নিয়ামতের কথা মনে কর এবং তোমাদের কাছ থেকে যে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছেন তার কথাও মনে কর। সে সময় তোমরা বলেছিলেঃ আমরা শুনলাম এবং আনুগত্য করলাম। আর আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ মনের কথাও জানেন।”
হযরত উবাদা ইবনে সামেত থেকে বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেনঃ
بايعنا رسول الله صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِى النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ وعلى والنَّفَقَةِ فِى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَعَلَى الأَمْرِ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ وعلى أَنْ نَقُولُ فِى اللَّهِ تعالى ولاَ نخَافُ لَوْمَةَ لاَئِمٍ (مسند احمد)
“রসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের থেকে এই মর্মে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন যে, আমরা যেন সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তা উভয় অবস্থায় শুনি ও আনুগত্য করে যাই এবং স্বচ্ছলতা ও অস্বচ্ছলতা উভয় অবস্থায় আল্লাহর পথে খরচ করি, ভাল কাজের আদেশ করি এবং মন্দ কাজের নিষেধ করি, আল্লাহ সম্পর্কে সত্য কথা বলি এবং সেজন্য কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারকে ভয় না করি।” (মুসনাদে আহমাদ)।