প্রথমত, মানুষ দোয়া করে কেবল সে সত্তার কাছে যাকে সে سَمِيْعٌ (সর্বশ্রোতা), بَصِيْرٌ (সর্বদ্রষ্টা) এবং অতি প্রাকৃতিক ক্ষমতার (Super natural power) অধিকারী মনে করে। মূলত মানুষের আভ্যন্তরীণ অনুভূতি তাকে দোয়া করতে উদ্বুদ্ধ করে। বস্তুজগতের প্রাকৃতিক উপায়-উপকরণ যখন তার কোন কষ্ট নিবারণ কিংবা কোন প্রয়োজন পূরণ করার জন্য যথেষ্ট নয় বা যথেষ্ট বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না তখন কোন অতি প্রাকৃতিক ক্ষমতার অধিকারী সত্তার ধর্ণা দেয়া অপরিহার্য। তখনই মানুষ দোয়া করে এবং না দেখেই সে সত্তাকে ডাকে; প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি জায়গায় এবং সর্বাবস্থায় ডাকে। একাকী নির্জনে ডাকে, উচ্চস্বরেই শুধু নয়, চুপে চুপেও ডাকে এবং মনে মনেও তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। একটি বিশ্বাসের ভিত্তিতেই তা হয়। বিশ্বাসটি হচ্ছে, সেই সত্তা তাকে সর্বত্র সর্বাবস্থায় দেখছেন। তাঁর মনের কথাও শুনছেন। তিনি এমন অসীম ক্ষমতার অধিকারী যে, তাঁর কাছে প্রার্থনাকারী যেখানেই অবস্থান করুক না কেন তিনি তাকে সাহায্য করতে পারেন, তার বিপর্যন্ত ভাগ্যকে পুনরায় তৈরী করতে পারেন। দোয়ার এ তাৎপর্য অনুধাবন করার পর মানুষের জন্য একথা বুঝা আর কঠিন থাকে না যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন সত্তাকে সাহায্যের জন্য ডাকে সে প্রকৃতই নিরেট নির্ভেজাল এবং স্পষ্ট শিরকে লিপ্ত হয়। কারণ, যেসব গুণাবলী কেবল আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট তা সেসব সত্তার মধ্যেও আছে বলে সে বিশ্বাস করে। সে যদি তাদেরকে ঐ সব খোদায়ী গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে শরীক না করতো তাহলে তার কাছে দোয়া করার কল্পনা পর্যন্ত তার মনে কখনো আসতো না।
এ ব্যাপারে দ্বিতীয় যে কথাটি ভালভাবে বুঝে নিতে হবে তা হচ্ছে,কোন ব্যক্তি যদি কারো সম্পর্কে নিজের থেকেই একথা মনে করে বসে যে, সে অনেক ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের মালিক তাহলে অনিবার্য রূপেই সে ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের মালিক হয়ে যায় না। ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের মালিক হওয়া একটি বাস্তব ব্যাপার যা কারো মনে করা বা না করার ওপর নির্ভর করে না। আপনি মালিক মনে করেন আর না করেন প্রকৃতই যে ক্ষমতা ইখতিয়ারের মালিক সে সর্বাবস্থায়েই মালিক থাকবে। আর যে প্রকৃত মালিক নয় আপনি তাকে মালিক মনে করে বসলেও মনে করাটা তাকে ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের অতি সামান্য অংশও দিতে পারবে না। এটা বাস্তব ও সত্য যে, একমাত্র আল্লাহ তা'আলার সত্তাই সর্বশক্তিমান, বিশব-জাহানের ব্যবস্থাপক ও শাসক এবং সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। তিনিই সামগ্রিকভাবে সমস্ত ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের মালিক। সমগ্র বিশ্ব-জাহানে দ্বিতীয় এমন কোন সত্তাই নেই, যে দোয়া শোনার কোন যোগ্যতা ও ইখতিয়ার রাখে বা তা কবুল করা বা না করার ক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। মানুষ যদি এ বাস্তবতার পরিপন্থী কাজ করে নিজের পক্ষ থেকে নবী-রসূল, আওলিয়া, ফেরেশতা, জিন, গ্রহ-উপগ্রহ ও মনগড়া দেবতাদেরকে ক্ষমতা ও ইখতিয়ারে অংশীদার মনে করে বসে তাতে বাস্তব অবস্থার সামান্যতম পরিবর্তনও হবে না। মালিক মালিকই থাকবেন এবং ক্ষমতা ও ইখতিয়ারহীন দাস দাসই থেকে যাবে।
তৃতীয় কথাটি হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্যদের কাছে প্রার্থনা করা হুবহু এমন যেন কোন ব্যক্তি দরখাস্ত লিখে নিয়ে রাজ প্রাসাদে গেল কিন্তু ক্ষমতার প্রকৃত মালিককে বাদ দিয়ে সেখানে অন্য যেসব প্রার্থী নিজেদের অভাব পূরণের আশায় বসে আছে তাদের কারো সামনে দরখাস্ত পেশ করে কর জোড়ে কাকুতি-মিনতি করে বলতে থাকলো। হুজুরই সবকিছু, এখানে তো আপনার হুকুমই চলে, আমার প্রয়োজন যদি আপনি পূরণ করেন তবেই পূরণ হতে পারে। প্রথমত, এ আচরণ নির্বুদ্ধিতা ও অজ্ঞাতার পরিচায়ক কিন্তু তখন যদি প্রকৃত ক্ষমতার ও ইখতিয়ারের মালিক শাসক সামনে বিদ্যমান থাকেন আর তার উপস্থিতিতে তাকে বাদ দিয়ে অন্য কারোর সামনে দরখাস্ত পেশ করে কাকুতি-মিনতি করে প্রার্থনা করা হয় তাহলে এমন অবস্থায় তা চরম অশোভন ও ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ বলে পরিগণিত হয়। তাছাড়া এ অজ্ঞাতা চরমে পৌঁছে তখন, যখন যে ব্যক্তির সামনে দরখাস্ত পেশ করা হচ্ছে সে নিজে তাকে বারবার একথা বুঝায় যে, আমিও তোমার মত একজন প্রার্থী। আমার কাছে কিছুই নেই। আসল শাসক তো সামনেই আছেন। তুমি তার কাছে দরখাস্ত পেশ কর। কিন্তু তার বুঝানো ও নিষেধ সত্ত্বেও এ নির্বোধ যদি বলতেই থাকে যে, আমার মালিক মনিব আপনি। আপনি যদি করে দেন তবেই আমার কাজ হবে। বস্তুত এরূপ অবস্থায়ই এ অজ্ঞাতার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
এ তিনটি বিষয় মনে রেখে আল্লাহ তা’আলার বাণী “আমাকে ডাকো। তোমাদের ডাকে সাড়া দানকারী আমি। তা গ্রহণ করা আমার কাজ।” আল্লাহ তা’আলার এ বাণীটি বুঝার চেষ্টা করুন।
এ পর্যায়ে একটি সমস্যারও সমাধান হয়ে যায় যা বহু সংখ্যক মানুষের মনে বেশীর ভাগ সময় দ্বিধা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে থাকে। দোয়া করার ক্ষেত্রে মানুষের চিন্তাধারা হলো, তাকদীরের ভাল-মন্দ যখন আল্লাহর ইখতিয়ারে তখন তিনি তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভিত্তিতে যে ফায়সালা করেছেন সেটাই অনিবার্যরূপে ঘটবে। সুতরাং আমার দোয়া করার সার্থকতা কি? এটা একটা বড় রকমের ভ্রান্তি। এ ভ্রান্তি মানুষের মন থেকে দোয়ার সমস্ত গুরুত্ব মুছে ফেলে। এ ভ্রান্ত ধারণার মধ্যে পড়ে থেকে মানুষ যদি দোয়া করেও সেসব দোয়ায় কোন প্রাণ থাকে না। কুরআন মজীদের এ আয়াতটি দু’টি পন্থায় এ ভ্রান্ত ধারণা দূর করে। প্রথমত, আল্লাহ তা’আলা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছেন, “আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো।” এ থেকে জানা যায়, তাকদীর এমন কোন জিনিস নয়। আমাদের মত (নাউযুবিল্লাহ) আল্লাহ তা’আলার হাত পাও বেঁধে দিয়েছে এবং তিনি দোয়া কবুল করার ক্ষমতা ও ইখতিয়ার হারিয়ে ফেলেছেন। নিঃসন্দেহে বান্দা আল্লাহর সিদ্বান্তসমূহ এড়ানো বা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু কোন বান্দার দোয়া ও আবেদন নিবেদন শুনে আল্লাহ নিজে তাঁর নিজের সিদ্বান্ত পরিবর্তনের ক্ষমতা অবশ্যই রাখেন। এ আয়াতে দ্বিতীয় যে কথাটি বলা হয়েছে তা হলো দোয়া কবুল হোক বা না হোক সর্বাবস্থায় তার একটি ছোট বা বড় ফায়দা থাকে কোন অবস্থায়ই তা ফায়দাহীন নয়। সে ফায়দা হলো, বান্দা তার প্রভুর সামনে নিজের অভাব ও প্রয়োজন পেশ এবং দোয়া করে তাঁর প্রভুত্ব ও শ্রেষ্টত্ব মেনে নেয় এবং নিজের দাসত্ব ও অক্ষমতা স্বীকার করে। নিজের দাসত্বের এ স্বীকৃতিই যথাস্থানে একটি ইবাদাত তথা ইবাদাতের প্রাণসত্তা। বান্দা যে উদ্দেশ্যে দোয়া করলো সেই বিশেষ জিনিসটি তাকে দেয়া হোক বা না হোক কোন অবস্থায়ই সে তার এ দোয়ার প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে না।
আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লামের হাদীস থেকে এ দু’ টি বিষয়ের ব্যাখ্যা পেয়ে যাই। নিম্ন বর্ণিত হাদীসগুলো প্রথমোক্ত বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে।
হযরত সালমান ফারসী থেকে বণিত নবী (সা.) বলেছেনঃ لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ(ترمذى) “দোয়া ছাড়া আর কোন কিছুই তাকদীরকে পরিবর্তন করতে পারে না” অর্থাৎ কোন কিছুর মধ্যেই আল্লাহর ফায়সালা পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই। কিন্তু আল্লাহ নিজে তাঁর ফায়সালা পরিবর্তন করতে পারেন। আর এটা হয় কেবল তখনি যখন বান্দা তার কাছে দোয়া করে।
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, নবী ﷺ বলেছেনঃ
مَا مِنْ أَحَدٍ يَدْعُو بِدُعَاءٍ إِلاَّ آتَاهُ اللَّهُ مَا سَأَلَ أَوْ كَفَّ عَنْهُ مِنَ السُّوءِ مِثْلَهُ مَا لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ أَوْ قَطِيعَةِ رَحِمٍ(ترمذى)
“বান্দা যখনই আল্লাহর কাছে দোয়া করে আল্লাহ তখন হয় তার প্রার্থিত জিনিস তাকে দান করেন কিংবা তার ওপরে সে পর্যায়ের বিপদ আসা বন্ধ করে দেন----যদি সে গোনাহর কাজে বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার দোয়া না করে।”
আবু সা’ঈদ খুদরী (রা.) কর্তৃক রসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত আরেকটি প্রায় অনুরূপ বিষয় বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদীসে নবী (সা.) বলেছেনঃ
ما مِنْ مُسْلِمٍ يَدْعُو بِدَعْوَةٍ لَيْسَ فِيهَا إِثْمٌ وَلاَ قَطِيعَةُ رَحِمٍ إِلاَّ أَعْطَاهُ اللَّهُ إِحْدَى ثَلاَثٍ إِمَّا أَنْ تُعَجَّلَ لَهُ دَعْوَتُهُ وَإِمَّا أَنْ يَدَّخِرَهَا لَهُ فِى الآخِرَةِ وَإِمَّا أَنْ يَصْرِفَ عَنْهُ مِنَ السُّوءِ مِثْلَهَا (مسند احمد)
“একজন মুসলমান যখনই কোন দোয়া করে তা যদি কোন গোনাহ বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার দোয়া না হয় তাহলে আল্লাহ তা’আলা তা তিনটি অবস্থার যে কোন এক অবস্থায় কবুল করে থাকেন। হয় তার দোয়া এ দুনিয়াতেই কবুল করা হয়, নয়তো আখেরাতে প্রতিদান দেয়ার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয় অথবা তার ওপরে ঐ পর্যায়ের কোন বিপদ আসা বন্ধ করা হয়।”
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেছেনঃ
إِذَا دَعَا أَحَدُكُمْ فلاَ يَقُلْ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى إِنْ شِئْتَ ، ارْحَمْنِى إِنْ شِئْتَ ، ارْزُقْنِى إِنْ شِئْتَ ، وَلْيَعْزِمْ مَسْأَلَتَهُ- (بخارى)
“তোমাদের কোন ব্যক্তি দোয়া করলে সে যেন এভাবে না বলে, হে আল্লাহ! তুমি চাইলে আমাকে মাফ করে দাও, তুমি চাইলে আমার প্রতি রহম করো এবং তুমি চাইলে আমাকে রিযিক দাও। বরং তাকে নির্দিষ্ট করে দৃঢ়তার সাথে বলতে হবে; “হে আল্লাহ, আমার অমুক প্রয়োজন পূরণ করো।”
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকেই আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটির ভাষা হচ্ছে নবী (সা.) বলেছেনঃ
ادْعُوا اللَّهَ وَأَنْتُمْ مُوقِنُونَ بِالإِجَابَةِ(ترمذى)
“আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন এ দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করো।”
আরেকটি হাদীসে হযরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ বাণী উদ্ধৃত করেছেন যে,
يُسْتَجَابُ لِلْعَبْدِ مَا لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ أَوْ قَطِيعَةِ رَحِمٍ مَا لَمْ يَسْتَعْجِلْ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الاِسْتِعْجَالُ قَالَ يَقُولُ قَدْ دَعَوْتُ وَقَدْ دَعَوْتُ فَلَمْ أَرَ يَسْتَجِيبُ لِى فَيَسْتَحْسِرُ عِنْدَ ذَلِكَ وَيَدَعُ الدُّعَاءَ (مسلم)
“যদি গোনাহ বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার দোয়া না হয় এবং তাড়াহুড়া না করা হয় তাহলে বান্দার দোয়া কবুল করা হয়।”
জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহর রসূল, তাড়াহুড়া কি? তিনি বললেনঃ তাড়াহুড়ো হচ্ছে ব্যক্তির একথা বলা যে, “আমি অনেক দোয়া করেছি। কিন্তু দেখছি আমার কোন দোয়াই কবুল হচ্ছেনা। এভাবে সে অবসন্ন গ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং দোয়া করা ছেড়ে দেয়।”
দ্বিতীয় বিষয়টিও নিম্নবর্ণিত হাদীসসমূহ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেনঃ
لَيْسَ شَىْءٌ أَكْرَمَ عَلَى اللَّهِ مِنَ الدُّعَاءِ(ترمذى , ابن ماجة)
“আল্লাহর কাছে দোয়ার চাইতে অধিক সস্মানার্হ জিনিস আর কিছুই নেই।”
হযরত ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেনঃ
سَلُوا اللَّهَ مِنْ فَضْلِهِ فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ أَنْ يُسْأَلَ(ترمذى) “আল্লাহর কাছে তাঁর করুণা ও রহমত প্রার্থনা করো। কারণ, আল্লাহ তাঁর কাছে প্রার্থনা করা পছন্দ করেন।”
হযরত ইবনে উমর (রা) ও মু'আয ইবনে জাবাল বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সা) বলেছেনঃ
إِنَّ الدُّعَاءَ يَنْفَعُ مِمَّا نَزَلَ وَمِمَّا لَمْ يَنْزِلْ فَعَلَيْكُمْ عِبَادَ اللَّهِ بِالدُّعَاءِ(ترمذى , مسند احمد)
“যে বিপদ আপতিত হয়েছে তার ব্যাপারেও দোয়া উপকারী এবং যে বিপদ এখনো আপতিত হয়নি তার ব্যাপারেও দোয়া উপকারী। অতএব হে আল্লাহর বান্দারা, তোমাদের দোয়া করা কর্তব্য।” (তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ)
يَسْأَلْ أَحَدُكُمْ رَبَّهُ حَاجَتَهُ كُلَّهَ حَتَّى يَسْأَلَ شِسْعَ نَعْلِهِ إِذَا انْقَطَعَ(ترمذى)
“তোমাদের প্রত্যেকের উচিত তার রবের কাছে নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করা। এমনকি জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তাও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে।”
অর্থাৎ মানুষ যে ব্যাপারগুলো বাহ্যত নিজের ইখতিয়ারভুক্ত বলে মনে করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আগে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করবে। কারণ, কোন ব্যাপারে আমাদের কোন চেষ্টা-তদবীরই আল্লাহর তাওফিক ও সাহায্য ছাড়া সাফল্য লাভ করতে পারে না। চেষ্টা-তদবীর শুরু করার আগে দোয়া করার অর্থ হচ্ছে, বান্দা সর্বাবস্থায় তার নিজের অক্ষমতা ও আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করছে।