আল ফাতিহা
৭ আয়াত
আল বাকারাহ
২৮৬ আয়াত
আলে ইমরান
২০০ আয়াত
আন্ নিসা
১৭৬ আয়াত
আল মায়েদাহ
১২০ আয়াত
আল আন'আম
১৬৫ আয়াত
আল আরাফ
২০৬ আয়াত
আল আনফাল
৭৫ আয়াত
আত তওবা
১২৯ আয়াত
১০
ইউনুস
১০৯ আয়াত
১১
হুদ
১২৩ আয়াত
১২
ইউসুফ
১১১ আয়াত
১৩
আর্ রাদ
৪৩ আয়াত
১৪
ইবরাহীম
৫২ আয়াত
১৫
আল হিজর
৯৯ আয়াত
১৬
আন্ নাহল
১২৮ আয়াত
১৭
বনী ইসরাঈল
১১১ আয়াত
১৮
আল কাহফ
১১০ আয়াত
১৯
মারয়াম
৯৮ আয়াত
২০
ত্বাহা
১৩৫ আয়াত
২১
আল আম্বিয়া
১১২ আয়াত
২২
আল হাজ্জ
৭৮ আয়াত
২৩
আল মুমিনূন
১১৮ আয়াত
২৪
আন্ নূর
৬৪ আয়াত
২৫
আল-ফুরকান
৭৭ আয়াত
২৬
আশ্-শু’আরা
২২৭ আয়াত
২৭
আন নামল
৯৩ আয়াত
২৮
আল কাসাস
৮৮ আয়াত
২৯
আল আনকাবূত
৬৯ আয়াত
৩০
আর রূম
৬০ আয়াত
৩১
লুকমান
৩৪ আয়াত
৩২
আস সাজদাহ
৩০ আয়াত
৩৩
আল আহযাব
৭৩ আয়াত
৩৪
আস সাবা
৫৪ আয়াত
৩৫
ফাতের
৪৫ আয়াত
৩৬
ইয়া-সীন
৮৩ আয়াত
৩৭
আস্ সা-ফফা-ত
১৮২ আয়াত
৩৮
সা-দ
৮৮ আয়াত
৩৯
আয যুমার
৭৫ আয়াত
৪০
আল মুমিন
৮৫ আয়াত
৪১
হা-মীম আস সাজদাহ
৫৪ আয়াত
৪২
আশ শূরা
৫৩ আয়াত
৪৩
আয্ যুখরুফ
৮৯ আয়াত
৪৪
আদ দুখান
৫৯ আয়াত
৪৫
আল জাসিয়াহ
৩৭ আয়াত
৪৬
আল আহক্বাফ
৩৫ আয়াত
৪৭
মুহাম্মদ
৩৮ আয়াত
৪৮
আল ফাতহ
২৯ আয়াত
৪৯
আল হুজুরাত
১৮ আয়াত
৫০
ক্বাফ
৪৫ আয়াত
৫১
আয যারিয়াত
৬০ আয়াত
৫২
আত তূর
৪৯ আয়াত
৫৩
আন নাজম
৬২ আয়াত
৫৪
আল ক্বামার
৫৫ আয়াত
৫৫
আর রহমান
৭৮ আয়াত
৫৬
আল ওয়াকি’আ
৯৬ আয়াত
৫৭
আল হাদীদ
২৯ আয়াত
৫৮
আল মুজাদালাহ
২২ আয়াত
৫৯
আল হাশর
২৪ আয়াত
৬০
আল মুমতাহিনা
১৩ আয়াত
৬১
আস সফ
১৪ আয়াত
৬২
আল জুমআ
১১ আয়াত
৬৩
আল মুনাফিকুন
১১ আয়াত
৬৪
আত তাগাবুন
১৮ আয়াত
৬৫
আত তালাক
১২ আয়াত
৬৬
আত তাহরীম
১২ আয়াত
৬৭
আল মুলক
৩০ আয়াত
৬৮
আল কলম
৫২ আয়াত
৬৯
আল হাককাহ
৫২ আয়াত
৭০
আল মাআরিজ
৪৪ আয়াত
৭১
নূহ
২৮ আয়াত
৭২
আল জিন
২৮ আয়াত
৭৩
আল মুযযাম্মিল
২০ আয়াত
৭৪
আল মুদ্দাস্সির
৫৬ আয়াত
৭৫
আল কিয়ামাহ
৪০ আয়াত
৭৬
আদ্ দাহর
৩১ আয়াত
৭৭
আল মুরসালাত
৫০ আয়াত
৭৮
আন নাবা
৪০ আয়াত
৭৯
আন নাযি’আত
৪৬ আয়াত
৮০
আবাসা
৪২ আয়াত
৮১
আত তাকবীর
২৯ আয়াত
৮২
আল ইনফিতার
১৯ আয়াত
৮৩
আল মুতাফফিফীন
৩৬ আয়াত
৮৪
আল ইনশিকাক
২৫ আয়াত
৮৫
আল বুরূজ
২২ আয়াত
৮৬
আত তারিক
১৭ আয়াত
৮৭
আল আ’লা
১৯ আয়াত
৮৮
আল গাশিয়াহ
২৬ আয়াত
৮৯
আল ফজর
৩০ আয়াত
৯০
আল বালাদ
২০ আয়াত
৯১
আশ শামস
১৫ আয়াত
৯২
আল লাইল
২১ আয়াত
৯৩
আদ দুহা
১১ আয়াত
৯৪
আলাম নাশরাহ
৮ আয়াত
৯৫
আত তীন
৮ আয়াত
৯৬
আল আলাক
১৯ আয়াত
৯৭
আল কাদ্‌র
৫ আয়াত
৯৮
আল বাইয়েনাহ
৮ আয়াত
৯৯
আল যিলযাল
৮ আয়াত
১০০
আল আদিয়াত
১১ আয়াত
১০১
আল কারি’আহ
১১ আয়াত
১০২
আত তাকাসুর
৮ আয়াত
১০৩
আল আসর
৩ আয়াত
১০৪
আল হুমাযা
৯ আয়াত
১০৫
আল ফীল
৫ আয়াত
১০৬
কুরাইশ
৪ আয়াত
১০৭
আল মাউন
৭ আয়াত
১০৮
আল কাউসার
৩ আয়াত
১০৯
আল কাফিরূন
৬ আয়াত
১১০
আন নসর
৩ আয়াত
১১১
আল লাহাব
৫ আয়াত
১১২
আল ইখলাস
৪ আয়াত
১১৩
আল ফালাক
৫ আয়াত
১১৪
আন নাস
৬ আয়াত

আয যুমার

৭৫ আয়াত

৪১ ) [হে নবী (সা)] আমি সব মানুষের জন্য এ সত্য (বিধান সহ) কিতাব নাযিল করেছি। সুতরাং যে সোজা পথ অনুসরণ করবে সে নিজের জন্যই করবে। আর যে পথভ্রষ্ট হবে তার পথভ্রষ্টতার প্রতিফলও তাকেই ভোগ করতে হবে। তার জন্য তুমি দায়ী হবে না। ৫৯
إِنَّآ أَنزَلْنَا عَلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبَ لِلنَّاسِ بِٱلْحَقِّ ۖ فَمَنِ ٱهْتَدَىٰ فَلِنَفْسِهِۦ ۖ وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا ۖ وَمَآ أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ ٤١
৪২ ) মৃত্যর সময় আল্লাহই রূহসমূহ কবজ করেন আর যে এখনো মরেনি নিদ্রাবস্থায় তার রূহ কবজ করেন। ৬০ অতঃপর যার মৃত্যুর ফায়সালা কার্যকরী হয় তাকে রেখে দেন এবং অন্যদের রূহ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেরত পাঠান। যারা চিন্তা-ভাবনা করে তাদের জন্য এর মধ্যে বড় নিদর্শন রয়েছে। ৬১
ٱللَّهُ يَتَوَفَّى ٱلْأَنفُسَ حِينَ مَوْتِهَا وَٱلَّتِى لَمْ تَمُتْ فِى مَنَامِهَا ۖ فَيُمْسِكُ ٱلَّتِى قَضَىٰ عَلَيْهَا ٱلْمَوْتَ وَيُرْسِلُ ٱلْأُخْرَىٰٓ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّى ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّقَوْمٍۢ يَتَفَكَّرُونَ ٤٢
৪৩ ) এসব লোক কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে সুপারিশকারী বানিয়ে রেখেছে? ৬২ তাদেরকে বলো, তাদের ক্ষমতা ও ইখতিয়ারে যদি কিছু না থাকে এবং তারা কিছু না বুঝে এমতাবস্থায়ও কি সুপারিশ করবে?
أَمِ ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ شُفَعَآءَ ۚ قُلْ أَوَلَوْ كَانُوا۟ لَا يَمْلِكُونَ شَيْـًۭٔا وَلَا يَعْقِلُونَ ٤٣
৪৪ ) বলো, সুপারিশ সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইখতিয়ারাধীন। ৬৩ আসমান ও যমীনের বাদশাহীর মালিক তিনিই। তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
قُل لِّلَّهِ ٱلشَّفَـٰعَةُ جَمِيعًۭا ۖ لَّهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ ٤٤
৪৫ ) যখন শুধু আল্লাহর কথা বলা হয়, তখন যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের মন কষ্ট অনুভব করে। আর যখন তাকে বাদ দিয়ে অন্যদের কথা বলা হয় তখন তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। ৬৪
وَإِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَحْدَهُ ٱشْمَأَزَّتْ قُلُوبُ ٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِٱلْـَٔاخِرَةِ ۖ وَإِذَا ذُكِرَ ٱلَّذِينَ مِن دُونِهِۦٓ إِذَا هُمْ يَسْتَبْشِرُونَ ٤٥
৪৬ ) বলো, হে আল্লাহ, আসমান ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা, দৃশ্য ও অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারী, তোমার বান্দারা যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করে আসছে তুমিই সে বিষয়ে ফায়সালা করবে।
قُلِ ٱللَّهُمَّ فَاطِرَ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ عَـٰلِمَ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ أَنتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِى مَا كَانُوا۟ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ ٤٦
৪৭ ) এসব জালেমদের কাছে যদি পৃথিবীর সমস্ত সম্পদরাজি এবং তাছাড়া আরো অতটা সম্পদও থাকে তাহলে কিয়ামতের ভীষণ আযাব থেকে বাঁচার জন্য তারা মুক্তিপণ হিসেবে সমস্ত সম্পদ দিয়ে দিতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। সেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কিছু তাদের সামনে আসবে যা তারা কোন দিন অনুমানও করেনি।
وَلَوْ أَنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ مَا فِى ٱلْأَرْضِ جَمِيعًۭا وَمِثْلَهُۥ مَعَهُۥ لَٱفْتَدَوْا۟ بِهِۦ مِن سُوٓءِ ٱلْعَذَابِ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۚ وَبَدَا لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ مَا لَمْ يَكُونُوا۟ يَحْتَسِبُونَ ٤٧
৪৮ ) সেখানে তাদের সামনে নিজেদের কৃতকর্মের সমস্ত মন্দ ফলাফল প্রকাশ হয়ে পড়বে। আর যে জিনিস সম্পর্কে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো তা-ই তাদের ওপর চেপে বসবে।
وَبَدَا لَهُمْ سَيِّـَٔاتُ مَا كَسَبُوا۟ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ ٤٨
৪৯ ) এ মানুষকেই ৬৫ যখন সামান্য মসিবতে পেয়ে বসে তখন সে আমাকে ডাকে। কিন্তু আমি যখন নিজের পক্ষ থেকে নিয়ামত দিয়ে তাকে সমৃদ্ধ করি তখন সে বলে ওঠেঃ এসব তো আমি আমার জ্ঞান-বুদ্ধির জোরে লাভ করেছি। ৬৬ না, এটা বরং পরীক্ষা। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না। ৬৭
فَإِذَا مَسَّ ٱلْإِنسَـٰنَ ضُرٌّۭ دَعَانَا ثُمَّ إِذَا خَوَّلْنَـٰهُ نِعْمَةًۭ مِّنَّا قَالَ إِنَّمَآ أُوتِيتُهُۥ عَلَىٰ عِلْمٍۭ ۚ بَلْ هِىَ فِتْنَةٌۭ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ٤٩
৫০ ) তাদের পূর্ববর্তী লোকেরাও একথাই বলেছিলো। কিন্তু তারা নিজেদের কর্ম দ্বারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের কোন কাজে আসেনি। ৬৮ অতঃপর নিজেদের উপার্জনের মন্দ ফলাফল তারা ভোগ করেছে।
قَدْ قَالَهَا ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَمَآ أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ ٥٠
৫৯.
অর্থাৎ তাদের সঠিক পথে নিয়ে আসা তোমার দায়িত্ব নয়। তোমার কাজ শুধু এই যে, তাদের সামনে সত্য পথটি পেশ করো। এরপর যদি তারা পথভ্রষ্ট থেকে যায় তাতে তোমার কোন দায়িত্ব নেই।
৬০.
ঘুমন্ত অবস্থায় রূহ কবজ করার অর্থ অনুভূতি ও বোধ, উপলব্ধি ও অনুধাবন এবং ক্ষমতা ও ইচ্ছা নিষ্ক্রিয় করে দেয়া। এটা এমন এক অবস্থা যে, “ঘুমন্ত মানুষ ও মৃত মানুষ সমান” এ প্রবাদ বাক্যটি এক্ষেত্রে হুবহু খাটে।
৬১.
একথা দ্বারা আল্লাহ‌ তা’আলা প্রত্যেক মানুষকে এ অনুভূতি দিতে চাচ্ছেন যে, জীবন ও মৃত্যু কিভাবে তাঁর অসীম ক্ষমতার করায়ত্ব। রাতে ঘুমালে সকালে অবশ্যই জীবিত উঠবে এবং নিশ্চয়তা কোন মানুষের জন্যই নেই। কেউ-ই জানে না এক মুহূর্তের মধ্যে তার ওপর কি বিপদ আসতে পারে। আবার পরবর্তী মুহূর্তটি তার জন্য জীবনের মুহূর্ত না মৃত্যুর মুহূর্ত তাও কেউ জানে না। শয়নে, জাগরনে, ঘরে অবস্থানের সময় কিংবা কোথাও চলাফেরা করার সময় মানব দেহের আভ্যন্তরীণ কোন ত্রুটি অথবা বাইরের অজানা কোন বিপদ অকস্মাত এমন মোড় নিতে পারে যা তার মৃত্যু ঘটাতে পারে। যে মানুষ আল্লাহর হাতে এতটা অসহায় সে যদি সেই আল্লাহ‌ সম্পর্কে এতটা অমনোযোগী ও বিদ্রোহী হয় তাহলে সে কত অজ্ঞ।
৬২.
অর্থাৎ এসব লোক নিজের পক্ষ থেকেই ধরে নিয়েছে যে, কিছু সত্তা এমন আছে যারা আল্লাহর দরবারে অত্যন্ত ক্ষমতাধর। তাদের সুপারিশ কখনো বিফলে যায় না। অথচ তারা যে সুপারিশকারী এ ব্যাপারে না আছে কোন প্রমাণ, না আল্লাহ‌ তা’আলা কখনো বলেছেন যে, আমার দরবারে তাদের এ ধরনের মর্যাদা রয়েছে, না ঐ সব সত্তা ও ব্যক্তিবর্গ দাবী করেছেন যে আমরা নিজেদের ক্ষমতায় তোমাদের সকল প্রয়োজন পূরণ করে দেবো। তাদের আরো নির্বুদ্ধিতা এই যে, তারা প্রকৃত মালিককে বাদ দিয়ে সব অনুমানকৃত সুপারিশকারীদেরই সবকিছু মেনে নিয়েছে এবং এদের সকল সবিনয় প্রার্থনা ও আকুতি তাদের জন্যই নিবেদিত।
৬৩.
অর্থাৎ সুপারিশ গ্রহণ করানোর ক্ষমতা তো দূরের কথা নিজে নিজেই আল্লাহর দরবারে সুপারিশকারী হিসেবে যাবে সে শক্তিও কারো নেই। যাকে ইচ্ছা সুপারিশের অনুমতি দেয়া ও যাকে ইচ্ছা না দেয়া এবং যার জন্য ইচ্ছা সুপারিশ করতে দেয়া আর যার জন্য ইচ্ছা করতে না দেয়া সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইখাতিয়ারে। (শাফা’আত সম্পর্কে ইসলামী আকীদা ও শিরকমূলক আকীদার পার্থক্য বুঝার জন্য নিম্নোদ্বৃত স্থানসমূহে দেখুন। তাফহীমুল কুরআন, আল বাকারাহ, টীকা ২৮১ ; আল আন’আম, টীকা ৩৩ ; ইউনুস টীকা ৫ ও ২৪ ; হূদ, টীকা ৮৪ ও ১০৬ ; আর রা’দ, টীকা ১৯ ; আন নাহল, টীকা ৬৪, ৬৫, ৭৯ ; ত্বা-হা, টীকা ৮৫ ও ৮৬ ; আল আম্বিয়া, টীকা ২৭ ; আল হাজ্জ, টীকা ১২৫ আস সাবা, টীকা ৪০)
৬৪.
গোটা পৃথিবীর মুশরেকী রুচি ও ধ্যান-ধারণার অধিকারী প্রায় সব মানুষের মধ্যেই এটি বিদ্যমান। এমনকি মুসলমানদের মধ্যেও যে দুর্ভাগাদের এ রোগ পেয়ে বসেছে তারাও এ দোষ থেকে মুক্ত নয়। মুখে বলে আমরা আল্লাহকে মানি। কিন্তু অবস্থা এই যে, শুধু আল্লাহর কথা বলুন, দেখবেন তাদের চেহারা বিকৃত হতে শুরু হয়েছে। এরা বলে বসবে, এ ব্যক্তি নিশ্চয়ই বুযুর্গ ও আওলিয়াদের মানে না। সেজন্য শুধু আল্লাহর কথাই আওড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যদি আল্লাহ‌ ছাড়া অন্যদের কথাও বলা হয় তাহলে আনন্দে ও প্রফুল্লতায় তাদের চেহারা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। প্রকৃতপক্ষে তাদের আগ্রহ ও ভালবাসা কার প্রতি তা এ কর্মপন্থার মাধ্যমেই পরিষ্কার প্রকাশ পায়। আল্লামা আলুসী তাফসীরে রূহুল মা’আনীতে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাঁর নিজের একটি অভিজ্ঞতার বিষয় বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ একদিন আমি দেখলাম, কোন বিপদে পড়ে এক ব্যক্তি সাহায্যের জন্য এক মৃত বুযুর্গকে ডাকছে। আমি বললাম হে আল্লাহর বান্দা, আল্লাহকে ডাকো। আল্লাহ‌ বলেছেনঃ

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ

----আমার একথা শুনে সে ভীষণ চটে গেল। পরে লোকজন আমাকে বলেছে, সে বলছিলোঃ এ ব্যক্তি আওলিয়াদের মানে না। তাছাড়া কিছু সংখ্যক লোক তাকে একথাও বলতে শুনেছে যে, অলীরা আল্লাহর চাইতে দ্রুত শুনে থাকেন।

৬৫.
অর্থাৎ যার আল্লাহর নাম অপছন্দনীয় এবং একমাত্র আল্লাহর নামে যার চেহারা বিকৃত হতে শুরু করে।
৬৬.
এ আয়তাংশটির দু’টি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হচ্ছে, আমি যে, এ নিয়ামতের উপযুক্ত তা আল্লাহ‌ জানেন। তাই তিনি আমাকে এসব দিয়েছেন। আমি যদি তার কাছে একজন দুষ্ট ভ্রষ্ট আকীদা এবং দুষ্কর্মশীল মানুষ হতাম তাহলে আমাকে তিনি এসব নিয়ামত কেন দিতেন? এর আরেকটি অর্থ এও হতে পারে যে, এসব তো আমি আমার যোগ্যতার ভিত্তিতে লাভ করেছি।
৬৭.
কেউ যদি নিয়ামত লাভ করতে থাকে তখন মানুষ তার মূর্খতা ও অজ্ঞতার কারণে মনে করে, সে অনিবার্যরূপে তার যোগ্যতার ভিত্তিতেই তা লাভ করছে আর তা লাভ করাটা আল্লাহর দরবারে তার প্রিয়পাত্র হওয়ার লক্ষণ বা প্রমাণ। অথচ এখানে যাকেই যা কিছু দেয়া হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হিসেবেই দেয়া হচ্ছে। এটা পরীক্ষার উপকরণ, যোগ্যতার পুরস্কার নয়। অন্যথায় কি কারণে বহু যোগ্য লোক দুর্দশাগ্রস্ত এবং বহু অযোগ্য লোক নিয়ামতের প্রাচুর্যে ডুবে আছে? অনুরূপভাবে এসব পার্থিব নিয়ামত আল্লাহর দরবারে প্রিয়পাত্র হওয়ারও লক্ষণ নয়। যেকোন ব্যক্তি দেখবেন, পৃথিবীতে বহু সৎকর্মশীল ব্যক্তি বিপদাপদে ডুবে আছে, অথচ তাদের সৎকর্মশীল হওয়া অস্বীকার করা যায় না। আবার বহু দুশ্চরিত্র লোক আরাম-আয়েশে জীবন কাটাচ্ছে যাদের কুৎসিত আচরণ ও তৎপরতা সম্পর্কে সবাই অবহিত। এখন কোন জ্ঞানবান ব্যক্তি কি একজনের বিপদাপদ এবং আরেকজনের আরাম-আয়েশকে একথার প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে যে, আল্লাহ‌ সৎকর্মশীল মানুষদের পছন্দ করেন না, দুশ্চরিত্র ও দুষ্কর্মশীল মানুষদের পছন্দ করেন?
৬৮.
অর্থাৎ যখন দুর্ভাগ্যের দিন আসলো তখন তাদের যোগ্যতার দাবী কোন কাজে লাগলো না। তাছাড়া একথাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে, তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলো না। একথা স্পষ্ট যে তাদের এসব উপার্জন যদি যোগ্যতা ও প্রিয়পাত্র হওয়ার কারণে হতো তাহলে দুর্দিন কি করে আসলো?
অনুবাদ: