আয়াত
৫১ ) সেসময় যখন তারা ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে ঘুরে বেড়াবে এবং কোথাও নিরাপদে বের হয়ে যেতে পারবে না বরং নিকট থেকেই পাকড়াও হয়ে যাবে। ৭২
وَلَوْ تَرَىٰٓ إِذْ فَزِعُوا۟ فَلَا فَوْتَ وَأُخِذُوا۟ مِن مَّكَانٍ قَرِيبٍ ٥١
৫২ ) সেসময় তারা বলবে, আমরা তার প্রতি ঈমান আনলাম, ৭৩ অথচ দূরে চলে যাওয়া জিনিস নাগালের মধ্যে আসতে পারে কেমন করে? ৭৪
وَقَالُوٓا۟ ءَامَنَّا بِهِۦ وَأَنَّىٰ لَهُمُ ٱلتَّنَاوُشُ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ ٥٢
৫৩ ) ইতিপূর্বে তারা কুফরী করেছিল এবং আন্দাজে বহুদূর থেকে কথা নিয়ে আসতো। ৭৫
وَقَدْ كَفَرُوا۟ بِهِۦ مِن قَبْلُ وَيَقْذِفُونَ بِٱلْغَيْبِ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ ٥٣
৫৪ ) সেসময় তারা যে জিনিসের আকাংখা করতে থাকবে তা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করে দেয়া হবে যেমনটি তাদের পূর্বসূরী সমপস্থীরা বঞ্চিত হয়েছিল। তারা বড়ই বিভ্রান্তিকর সন্দেহের মধ্যে পতিত ছিল। ৭৬
وَحِيلَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُونَ كَمَا فُعِلَ بِأَشْيَاعِهِم مِّن قَبْلُ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ فِى شَكٍّ مُّرِيبٍۭ ٥٤
৭২.
অর্থাৎ কিয়ামতের দিন অপরাধী এমনভাবে পাকড়াও হবে যেন মনে হবে পাকড়াওকারী কাছেই কোথাও লুকিয়ে ছিল। অপরাধী সামান্য একটু পালাবার চেষ্টা করার সাথে সাথেই যেন তাকে ধরে ফেলেছে।
৭৩.
অর্থ হচ্ছে, এমন শিক্ষার প্রতি ঈমান আনলাম যা রসূল দুনিয়ায় পেশ করেছিলেন।
৭৪.
অর্থাৎ ঈমান আনার জায়গা ছিল দুনিয়া। সেখান থেকে এখন তারা বহুদূরে চলে এসেছে। আখেরাতের জগতে পৌঁছে যাবার পর এখন আর তাওবা করা ও ঈমান আনার সুযোগ কোথায় পাওয়া যেতে পারে।
৭৫.
অর্থাৎ রসূল, রসূলের শিক্ষা এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপবাদ দিতো, বিদ্রূপাত্মক শব্দ উচ্চারণ করতো ও ধ্বনি দিতো। কখনো বলতো, এ ব্যক্তি যাদুকর, কখনো বলতো পাগল। কখনো তাওহীদ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো আবার কখনো আখেরাতের ধারণাকে উপহাস করতো। কখনো এই মর্মে গল্প তৈরী করতো যে, রসূলকে অন্য কেউ পড়িয়ে ও শিখিয়ে দেয় আবার কখন মু’মিনদের ব্যাপারে বলতো, এরা শুধুমাত্র নিজেদের অজ্ঞতার কারণে রসূলের অনুসারী হয়েছে।
৭৬.
আসলে শিরক, নাস্তিক্যবাদ ও আখেরাত অস্বীকার করার বিশ্বাস কোন ব্যক্তি নিশ্চয়তার ভিত্তিতে গ্রহণ করে না এবং করতে পারে না। কারণ নিশ্চয়তা একমাত্র সঠিক জ্ঞান জানার ভিত্তিতেই অর্জিত হতে পারে। আর আল্লাহ নেই অথবা বহু আল্লাহ আছে কিংবা বহু সত্তা আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী অথবা পরকাল হওয়া উচিত নয় ইত্যাকার বিষয়গুলো সম্পর্কে কোন ব্যক্তিরই সঠিক জ্ঞান নেই। কাজেই যে ব্যক্তিই দুনিয়ায় এ আকীদা বিশ্বাস অবলম্বন করেছে সে নিছক আন্দাজ অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে একটি ইমারত নির্মাণ করেছে। এ ইমারতের মুল ভিত্তি সন্দেহ-সংশয় ছাড়া আর কিছু নয়। আর এ সন্দেহ তাকে নিয়ে গেছে ঘোরতর বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতার দিকে। আল্লাহর অস্তিত্বে সে সন্দিহান হয়েছে। তাওহীদের অস্তিত্বে সন্দিহান হয়েছে। আখেরাতের আগমনে সন্দেহ পোষণ করেছে। এমনকি এ সন্দেহকে সে নিশ্চিত বিশ্বাসের মতো মনের মধ্যে বদ্ধমূল করে নবীদের কোন কথা মানেনি এবং নিজের জীবনের সমগ্র কর্মকালকে একটি ভুল পথে ব্যয় করে দিয়েছে।