قُلِ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ وَسَلَـٰمٌ عَلَىٰ عِبَادِهِ ٱلَّذِينَ ٱصْطَفَىٰٓ ۗ ءَآللَّهُ خَيْرٌ أَمَّا يُشْرِكُونَ
(হে নবী!) ৭১ বলো, প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং সালাম তার এমন সব বান্দাদের প্রতি যাদেরকে তিনি নির্বাচিত করেছেন। (তাদেরকে জিজ্ঞাস কর) আল্লাহ ভাল অথবা সেই সব মাবুদরা ভাল যাদেরকে তারা তার শরিক করেছে? ৭২
৭১
এখান থেকে দ্বিতীয় ভাষণ শুরু হচ্ছে। এ বাক্যটি হচ্ছে তার ভূমিকা। এ ভূমিকার মাধ্যমে মুসলমানরা কিভাবে তাদের বক্তৃতা শুরু করবে তা শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এরই ভিত্তিতে সঠিক ইসলামী চিন্তা ও মানসিকতা সম্পন্ন লোকেরা সব সময় আল্লাহর প্রশংসা এবং তাঁর সৎ বান্দাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার দোয়া করে তাদের বক্তৃতা শুরু করে থাকেন। কিন্তু আজকাল একে মোল্লাকী মনে করা হয়ে থাকে এবং এ যুগের মুসলিম বক্তারা তো এর মাধ্যমে বক্তৃতা শুরু করার কথা কল্পনাই করতে পারেন না অথবা এভাবে বক্তৃতা শুরু করতে তারা লজ্জা অনুভব করেন।
৭২
আল্লাহ ভালো, না এসব মিথ্যা মাবুদ ভালো, এ প্রশ্নটি আপাতত দৃষ্টিতে বড়ই অদ্ভূত মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা উপাস্যদের মধ্যে তো আদৌ কোন ভালাই নেই যে, আল্লাহর সাথে তাদের তুলনা করা যেতে পারে। মুশরিকরাও আল্লাহর সাথে এ উপাস্যদের তুলনা করা যেতে পারে এমন কথা ভাবতো না। কিন্তু তারা যাতে নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়, সেজন্য এ প্রশ্ন তাদের সামনে রাখা হয়েছে। একথা সুস্পষ্ট,কোন ব্যক্তি দুনিয়ায় ততক্ষণ পর্যন্ত কোন কাজ করে না যতক্ষণ না সে তার নিজের দৃষ্টিতে তার মধ্যে কোন কল্যাণ বা লাভের সন্ধান পায়। এখন এ মুশরিকরা আল্লাহর পরিবর্তে তাদের কাছে নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য দোয়া করতো এবং তাদের সামনে নজরানা পেশ করতো। অথচ ঐ উপাস্যদের মধ্যে যখন কোন কল্যাণ নেই তখন তাদের এসব করার কোন অর্থই ছিল না। তাই তাদের সামনে পরিষ্কার ভাষায় এ প্রশ্ন রাখা হয়েছে যে, বলো আল্লাহ ভালো না তোমাদের ঐসব উপাস্যরা? কারণ এ দ্ব্যর্থহীন প্রশ্নের সম্মুখীন হবার হিম্মত তাদের ছিল না। তাদের মধ্য থেকে সবচেয়ে কট্টর মুশরিকও একথা বলার সাহস করতে পারতো না যে, আমাদের উপাস্যরা ভালো। আর আল্লাহ ভালো একথা মেনে নেবার পর তাদের ধর্মের পুরো ভিত্তিটাই ধ্বসে পড়তো, কারণ এরপর ভালোকে বাদ দিয়ে মন্দকে গ্রহণ করা পুরোপুরি অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়াতো।
এভাবে কুরআন তার ভাষণের প্রথম বাক্যেই বিরোধীদেরকে লা জবাব ও অসহায় করে দিয়েছে। এরপর এখন আল্লাহর শক্তিমত্তা এবং তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি বৈচিত্রের প্রতি অংগুলি নির্দেশ করে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, এটা কার কাজ বলো? আল্লাহর সাথে বৈচিত্রের প্রতি কোন ইলাহও কি এ কাজে শরীক আছে? যদি না থেকে থাকে তাহলে তোমরা এই যাদেরকে উপাস্য করে রেখেছো এদের কি সার্থকতা আছে।
হাদীসে বলা হয়েছে নবী ﷺ যখন আয়াতটি তেলাওয়াত করতেন তখন সঙ্গে সঙ্গেই এর জবাবে বলতেনঃ
بَلِ اللهُ خَيْرٌ وَّاَبْقى وَاَجَلُّ وَّاَكْرَمُ-
“বরং আল্লাহই ভালো এবং তিনিই চিরস্থায়ী, মর্যাদা সম্পন্ন ও শ্রেষ্ঠ।”