أَوْ كَظُلُمَـٰتٍۢ فِى بَحْرٍۢ لُّجِّىٍّۢ يَغْشَىٰهُ مَوْجٌۭ مِّن فَوْقِهِۦ مَوْجٌۭ مِّن فَوْقِهِۦ سَحَابٌۭ ۚ ظُلُمَـٰتٌۢ بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ إِذَآ أَخْرَجَ يَدَهُۥ لَمْ يَكَدْ يَرَىٰهَا ۗ وَمَن لَّمْ يَجْعَلِ ٱللَّهُ لَهُۥ نُورًۭا فَمَا لَهُۥ مِن نُّورٍ
অথবা তার উপমা যেমন একটি গভীর সাগর বুকে অন্ধকার। ওপরে ছেয়ে আছে একটি তরংগ, তার ওপরে আর একটি তরংগ আর তার ওপরে মেঘমালা অন্ধকারের ওপর অন্ধকার আচ্ছন্ন। মানুষ নিজের হাত বের করলে তাও দেখতে পায় না। ৭২ যাকে আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই। ৭৩
৭২
এ উপমায় সকল কাফের মুনাফিকদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। লোক দেখানো সৎকাজকারীরাও এর অন্তর্ভুক্ত। এদের সবার সম্পর্কে বলা হচ্ছে, জাগতিক পরিভাষায় তারা মহাপণ্ডিত ও জ্ঞান সাগরের মহান দিশারী হলেও হতে পারে কিন্তু নিজেদের সমগ্র জীবন যাপন করছে তারা চরম ও পূর্ণ মূর্খতার মধ্যে। তারা হচ্ছে এমন ব্যক্তির মতো যে এমন কোন জায়গায় আবদ্ধ হয়ে আছে যেখানে পুরোপুরি অন্ধকারের রাজত্ব, আলোর সামান্যতম শিখাও যেখানে পৌঁছতে পারে না। তারা মনে করে আণবিক বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, শব্দের চেয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন বিমান এবং চাঁদে ও গ্রহান্তরে পাড়ি দেবার জন্য মহাশূন্য যান তৈরী করার নাম জ্ঞান। তাদের মতে, খাদ্য নীতি, অর্থনীতি, আইন শাস্ত্র ও দর্শনে পারদর্শিতা অর্জন করার নাম জ্ঞান। কিন্তু আসল জ্ঞান এর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিসের নাম। তার স্পর্শ থেকে তারা অনেক দূর রয়ে গেছে। সেই জ্ঞানের দৃষ্টিতে তারা নিছক মূর্খ ও অজ্ঞ ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত গেঁয়ো যদি সত্যকে চেনে ও উপলব্ধি করে তাহলে সে জ্ঞানবান।
৭৩
এখানে পৌঁছে আসল কথা পরিষ্কার করে বলে দেয়া হয়েছে। এর সূচনা করা হয়েছিল اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ এর বিষয়বস্তু থেকে। বিশ্ব-জাহানে যখন মূলত আল্লাহর আলো ছাড়া আর কোন আলো নেই এবং সে আলো থেকেই হচ্ছে যাবতীয় সত্যের প্রকাশ তখন যে ব্যক্তি আল্লাহর আলো পাবে না সে পূর্ণ ও নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ডুবে থাকবে না তো আর কি হবে? আর কোথাও তো আলো নেই। কাজেই অন্য কোথাও থেকে আলোর একটি শিখাও লাভ করার সম্ভাবনা করো নেই।