وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍۢ وَلَا نَبِىٍّ إِلَّآ إِذَا تَمَنَّىٰٓ أَلْقَى ٱلشَّيْطَـٰنُ فِىٓ أُمْنِيَّتِهِۦ فَيَنسَخُ ٱللَّهُ مَا يُلْقِى ٱلشَّيْطَـٰنُ ثُمَّ يُحْكِمُ ٱللَّهُ ءَايَـٰتِهِۦ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌۭ
আর হে মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বে আমি এমন কোন রসূল ও নবী পাঠাইনি ৯৬ (যার সাথে এমন ঘটনা ঘটেনি যে) যখন সে তামান্না করেছে। ৯৭ শয়তান তার তামান্নায় বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। ৯৮ এভাবে শয়তান যা কিছু বিঘ্ন সৃষ্টি করে আল্লাহ তা দূর করে দেন এবং নিজের আয়াতসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন, ৯৯ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। ১০০
৯৬
রসূল ও নবীর মধ্যে পার্থক্যের ব্যাপারটির ব্যাখ্যা সূরা মারয়ামের ৩০ টীকায় আলোচিত হয়েছে।
৯৭
মূল শব্দটি হচ্ছে, تَمَنَّى (তামান্না)। আরবী ভাষায় এ শব্দটি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়। একটি অর্থ হচ্ছে কোন জিনিসের আশা-আকাংখা করা। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে তেলাওয়াত অর্থাৎ কিছু পাঠ করা।
৯৮
“তামান্না” শব্দটি যদি প্রথম অর্থ গ্রহণ করা হয় তাহলে এর অর্থ হবে, শয়তানও তার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবার পথে বাধার সৃষ্টি করে। আর দ্বিতীয় অর্থে গ্রহণ করলে এর অর্থ হবে, যখনই তিনি লোকদেরকে আল্লাহর বাণী শুনিয়েছেন তখনই শয়তান সে সম্পর্কে লোকদের মনে নানা সন্দেহ-সংশয় ও আপত্তি সৃষ্টি করে দিয়েছে, সেগুলোর অদ্ভূত অদ্ভূত অর্থ তাদের সামনে তুলে ধরেছে এবং একমাত্র সঠিক অর্থটি ছাড়া বাকি সব ধরনের উল্টা-পাল্টা অর্থ লোকদেরকে বুঝিয়েছে।
৯৯
প্রথম অর্থটির দৃষ্টিতে এর তাৎপর্য হবে এই যে, আল্লাহ শয়তানের বিঘ্ন সৃষ্টি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত নবীর তামান্না তথা আশা-আকাঙ্ক্ষা (আর নবীর আশা-আকাংখা এছাড়া আর কি হতে পারে যে, তাঁর প্রচেষ্টা ফলবতী এবং মিশন বাস্তবায়িত হবে) পূর্ণ করেন এবং নিজের আয়াতকে (অর্থাৎ নবীর সাথে অঙ্গীকার করেছিলেন) পাকাপোক্ত ও মজবুত অঙ্গীকারে পরিণত করেন। দ্বিতীয় অর্থটির দৃষ্টিতে এর তৎপর্য হবে, শয়তানের ঢুকানো সন্দেহ-সংশয় ও আপত্তি আল্লাহ দূর করে দেন এবং এক একটি আয়াত সম্পর্কে সে লোকদের মনে যেসব জটিলতা সৃষ্টি করে পরবর্তী কোন অধিকতর সুস্পষ্ট আয়াতের মাধ্যমে সেগুলো পরিষ্কার করে দেয়া হয়।
১০০
অর্থাৎ তিনি জানেন শয়তান কোথায় কি বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এবং তার কি প্রভাব পড়েছে। তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শয়তানী ফিতনার প্রতিবিধান করে।