- সূরা
- বিষয়
আল ফাতিহা
আল বাকারাহ
আলে ইমরান
আন্ নিসা
আল মায়েদাহ
আল আন'আম
আল আরাফ
আল আনফাল
আত তওবা
ইউনুস
হুদ
ইউসুফ
আদ দুহা
আর্ রাদ
ইবরাহীম
আল হিজর
আন্ নাহল
বনী ইসরাঈল
আল কাহফ
মারয়াম
ত্বাহা
আল আম্বিয়া
আল হাজ্জ
আল মুমিনূন
আন্ নূর
আল-ফুরকান
আশ্-শু’আরা
আন নামল
আল কাসাস
আল আনকাবূত
আর রূম
লুকমান
আস সাজদাহ
আল আহযাব
আস সাবা
ফাতের
ইয়া-সীন
আস্ সা-ফফা-ত
সা-দ
আয যুমার
আল মুমিন
হা-মীম আস সাজদাহ
আশ শূরা
আয্ যুখরুফ
আদ দুখান
আল জাসিয়াহ
আল আহক্বাফ
মুহাম্মদ
আল ফাতহ
আল হুজুরাত
ক্বাফ
আয যারিয়াত
আত তূর
আন নাজম
আল ক্বামার
আর রহমান
আল ওয়াকি’আ
আল হাদীদ
আল মুজাদালাহ
আল হাশর
আল মুমতাহিনা
আস সফ
আল জুমআ
আল মুনাফিকুন
আত তাগাবুন
আত তালাক
আত তাহরীম
আল মুলক
আল কলম
আল হাককাহ
আল মাআরিজ
নূহ
আল জিন
আল মুযযাম্মিল
আল মুদ্দাস্সির
আল কিয়ামাহ
আদ্ দাহর
আল মুরসালাত
আন নাবা
আন নাযি’আত
আবাসা
আত তাকবীর
আল ইনফিতার
আল মুতাফফিফীন
আল ইনশিকাক
আল বুরূজ
আত তারিক
আল আ’লা
আল গাশিয়াহ
আল ফজর
আল বালাদ
আশ শামস
আল লাইল
আল ইখলাস
আল ফালাক
আন নাস
আলাম নাশরাহ
আত তীন
আল আলাক
আল কাদ্র
আল বাইয়েনাহ
আল যিলযাল
আল আদিয়াত
আল কারি’আহ
আত তাকাসুর
আল আসর
আল হুমাযা
আল ফীল
কুরাইশ
আল মাউন
আল কাউসার
আল কাফিরূন
আন নসর
আল লাহাব
৭২
وَأَلَنَّا لَهُ الْحَدِيدَ - أَنِ اعْمَلْ سَابِغَاتٍ وَقَدِّرْ فِي السَّرْدِ
“আর আমি তার জন্য লোহা নরম করে দিয়েছি (এবং তাকে নির্দেশ দিয়েছি) যে, পূর্ণমাপের বর্ম তৈরী করো এবং বুনন করার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিমাণ রক্ষা করো।”
এ থেকে জানা যায়, আল্লাহ হযরত দাউদকে লোহা ব্যবহার করার ক্ষমতা দান করেছিলেন। বিশেষ করে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য বর্ম নির্মাণের কায়দা-কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমান যুগের ঐতিহাসিক ও প্রত্মতাত্বিক গবেষণা ও অনুসন্ধান থেকে এ আয়াতের অর্থের ওপর যে আলোকপাত হয় তা হচ্ছে এই যে, পৃথিবীতে লৌহ যুগ (Iron age) শুরু হয় খৃস্টপূর্ব ১২০০ ও ১০০০ অব্দের মাঝামাঝি সময়ে। আর এটিই ছিল হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের যুগ। প্রথম দিকে সিরিয়া ও এশিয়া মাইনরের হিত্তী (Hittites) জাতি লোহা ব্যবহার করে। ২০০০ থেকে ১২০০ খৃস্ট পূবাব্দ পর্যন্ত এ জাতির উত্থান দেখা যায়। তারা লোহা গলাবার ও নির্মাণের একটা জটিল পদ্ধতি জানতো। সারা দুনিয়ার দৃষ্টি থেকে তারা একে কঠোরভাবে গোপন রাখে। কিন্তু এ পদ্ধতিতে যে লোহা তৈরী করা হতো তা সোনা রূপার মতো এত বেশী মূল্যবান হতো যে, তা সাধারণ কাজে ব্যবহার করা যেতো না। পরে ফিলিস্তিনীরা এ পদ্ধতি জেনে নেয় এবং তারাও আকে গোপন রাখে। তালূতের রাজত্বের পূর্বে হিত্তী ও ফিলিস্তিনীরা বনী ইসরাঈলকে যেভাবে উপর্যুপরি পরাজিত করে ফিলিস্তীন থেকে প্রায় বেদখল করে দিয়েছিল বাইবেলের বর্ণনা মতে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল এই যে, তারা লোহার রথ ব্যবহার করতো এবং তাদের কাছে লোহার তৈরী অন্যান্য অস্ত্রও থাকতো। (যিহোশূয় ১৭: ১৬ বিচারকর্তৃগণ ১: ১৯, ৪: ২-৩) খৃস্টপূর্ব ১০২০ অব্দে তালূত যখন আল্লাহর হুকুমে বনী ইসরাঈলদের শাসক পদে অধিষ্ঠিত হন তখন তিনি তাদেরকে পরপর কয়েকবার পরাজিত করে ফিলিস্তীনের বেশীর ভাগ অংশ তাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেন। তারপর হযরত দাউদ (১০০৪-৯৬৫ খৃঃ পূঃ) শুধুমাত্র ফিলিস্তীন ও ট্রান্স জর্দানই নয় বরং সিরিয়ারও বড় অংশে ইসরাঈলী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় লৌহ নির্মাণ শিল্পের যে গোপন কলাকৌশল হিত্তী ও ফিলিস্তীনদের নিয়ন্ত্রণে ছিল তা উন্মোচিত হয়ে যায় এবং কেবলমাত্র উন্মোচিত হয়েই থেমে যায়নি বরং লৌহ নির্মাণের এমন পদ্ধতিও উদ্ভাবিত হয় যার ফলে সাধারণ ব্যবহারের জন্য লোহার কম দামের জিনিসপত্রও তৈরী হতে থাকে। ফিলিস্তীনের দক্ষিণে আদূম এলাকা আকরিক লোহায় (Iron Ore) সমৃদ্ধ ছিল। সম্প্রতি এ এলাকায় যে প্রত্মতাত্বিক খননকার্য চালানো হয় তার ফলে এমন অনেক জায়গার প্রত্মতাত্বিক নিদর্শনসমূহ পাওয়া গেছে যেখানে লোহা গলাবার চুল্লী বসানো ছিল। আকাবা ও আইলার সাথে সংযুক্ত হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালামের জামানার বন্দর ইসয়ুন জাবেরের প্রাচীন নিদর্শনগুলোর মধ্যে যে চুল্লী পাওয়া গেছে তা পর্যবেক্ষণের পরে অনুমান করা হয়েছে যে, তার মধ্যে এমনসব পদ্ধতি প্রয়োগ করা হতো যা আজকের অত্যাধুনিক যুগের Blast Furnace এ প্রয়োগ করা হয়। এখন স্বাভাবিকভাবেই হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম সবার আগে ও সবচেয়ে বেশী করে এ নতুন আবিষ্কারকে যুদ্ধের প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকবেন। কারণ কিছুকাল আগেই আশপাশের শত্রু জাতিরা এ লোহার অস্ত্র ব্যবহার করে তাঁর জাতির জীবন ধারণ কঠিন করে দিয়েছিল।