ত্বাহা

১৩৫ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৪১ ) আমি তোমার নিজের জন্য তৈরী করে নিয়েছি।
وَٱصْطَنَعْتُكَ لِنَفْسِى ٤١
৪২ ) যাও, তুমি ও তোমার ভাই আমার নিদর্শনগুলোসহ এবং দেখো আমার স্মরণে ভুল করো না।
ٱذْهَبْ أَنتَ وَأَخُوكَ بِـَٔايَٰتِى وَلَا تَنِيَا فِى ذِكْرِى ٤٢
৪৩ ) যাও, তোমরা দু’জন ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে।
ٱذْهَبَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُۥ طَغَىٰ ٤٣
৪৪ ) তার সাথে কোমলভাবে কথা বলো, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভীত হবে।” ১৮
فَقُولَا لَهُۥ قَوْلًا لَّيِّنًا لَّعَلَّهُۥ يَتَذَكَّرُ أَوْ يَخْشَىٰ ٤٤
৪৫ ) উভয়েই ১৮(ক) বললো, “হে আমাদের রব! আমাদের ভয় হয়, সে আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে অথবা আমাদের ওপর চড়াও হবে।”
قَالَا رَبَّنَآ إِنَّنَا نَخَافُ أَن يَفْرُطَ عَلَيْنَآ أَوْ أَن يَطْغَىٰ ٤٥
৪৬ ) বললেন, “ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, সবকিছু শুনছি ও দেখছি।
قَالَ لَا تَخَافَآ إِنَّنِى مَعَكُمَآ أَسْمَعُ وَأَرَىٰ ٤٦
৪৭ ) যাও তার কাছে এবং বলো, আমরা তোমার রবের প্রেরিত, বনী ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য ছেড়ে দাও এবং তাদেরকে কষ্ট দিয়ো না। আমরা তোমার কাছে নিয়ে এসেছি তোমার রবের নিদর্শন এবং শান্তি তার জন্য যে সঠিক পথ অনুসরণ করে।
فَأْتِيَاهُ فَقُولَآ إِنَّا رَسُولَا رَبِّكَ فَأَرْسِلْ مَعَنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ وَلَا تُعَذِّبْهُمْ قَدْ جِئْنَٰكَ بِـَٔايَةٍ مِّن رَّبِّكَ وَٱلسَّلَٰمُ عَلَىٰ مَنِ ٱتَّبَعَ ٱلْهُدَىٰٓ ٤٧
৪৮ ) আমাদের অহীর সাহায্যে জানানো হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য যে মিথ্যা আরোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।” ১৯
إِنَّا قَدْ أُوحِىَ إِلَيْنَآ أَنَّ ٱلْعَذَابَ عَلَىٰ مَن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ ٤٨
৪৯ ) ফেরাউন ২০ বললো, “আচ্ছা, তাহলে তোমাদের দু’জনের রব কে হে মূসা?” ২১
قَالَ فَمَن رَّبُّكُمَا يَٰمُوسَىٰ ٤٩
৫০ ) মূসা জবাব দিল, “আমাদের রব তিনি ২২ যিনি প্রত্যেক জিনিসকে তার আকৃতি দান করেছেন তারপর তাকে পথ নির্দেশ দিয়েছেন। ২৩
قَالَ رَبُّنَا ٱلَّذِىٓ أَعْطَىٰ كُلَّ شَىْءٍ خَلْقَهُۥ ثُمَّ هَدَىٰ ٥٠
১৮.
মানুষ দু’ভাবে সঠিক পথে আসে। সে নিজে বিচার-বিশ্লেষণ করে বুঝে-শুনে ও উপদেশ বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সঠিক পথ অবলম্বন করে অথবা অশুভ পরিণামের ভয়ে সোজা হয়ে যায়।
১৮(ক).
মনে হচ্ছে এটা এমন সময়ের কথা যখন হযরত মূসা (আ) মিসরে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং হযরত হারুন কার্যত তাঁর সাথে শরীক হয়ে গিয়েছিলেন। সে সময় ফেরাউনের কাছে যাওয়ার আগে উভয়েই আল্লাহর কাছে এ নিবেদন পেশ করে থাকবেন।
১৯.
এ ঘটনাটি বাইবেল ও তালমূদে যেভাবে পেশ করা হয়েছে তার ওপরও একবার নজর বুলানো দরকার। এর ফলে কুরআন মজীদ আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের কথা কেমন মর্যাদা সহকারে বর্ণনা করেছে এবং বনী ইসরাঈলের বর্ণনসমূহে এর কি চিত্র অংকন করা হয়েছে তা আন্দাজ করা যাবে। বাইবেলের বর্ণনা হচ্ছে, প্রথমবার আল্লাহ‌ যখন মূসাকে বললেন, “এখন আমি তোমাকে ফেরাউনের কাছে পাঠাচ্ছি এ উদ্দেশ্যে যে, তুমি আমার জাতি বনী ইসরাঈলকে মিসর থেকে বের করে আনবে” তখন হযরত মূসা জবাব দিলেন, “ফেরাউনের কাছে যাবার এবং বনী ইসরাঈলকে মিসর থেকে বের করে আনার আমি কে? ” তারপর আল্লাহ‌ হযরত মূসাকে অনেক বুঝালেন, তাঁর মনে শক্তি সঞ্চার করলেন, মুজিযা দান করলেন কিন্তু মূসা আবার এ কথাই বললেন, “হে আমার প্রভু বিনয় করি, অন্য যাহার হাতে পাঠাইতে চাও এ বার্তা পাঠাও।” (যাত্রা-পুস্তক ৩-১৩) তালমূদের বর্ণনা আবার এর চাইতে কয়েক কদম এগিয়ে গেছে। সেখানে বলা হয়েছেঃ এ ব্যাপারটি নিয়ে আল্লাহ‌ ও হযরত মূসার সাথে সাতদিন পর্যন্ত বাদানুবাদ হতে থাকে। আল্লাহ‌ বলতে থাকেন, নবী হও। কিন্তু মূসা বলতে থাকেন, আমার কণ্ঠই খুলছে না, কাজেই আমি নবী হই কেমন করে। শেষে আল্লাহ‌ বললেন, তুমি নবী হয়ে যাও এতেই আমি খুশী। একথায় হযরত মূসা বলেন, লূতকে বাঁচাবার জন্য আপনি ফেরেশতা পাঠিয়েছিলেন, হাজেরা যখন সারার গৃহ থেকে বের হলেন তখন তার জন্য পাঁচজন ফেরেশতা পাঠিয়েছিলেন, আর এখন নিজের বিশেষ সন্তান (বনী ইসরাঈল)-দেরকে মিসর থেকে বেরকরে আনার জন্য আপনি আমাকে পাঠাচ্ছেন? একথায় আল্লাহ‌ অসন্তুষ্ট হলেন এবং তিনি রিসালাতের কাজে তাঁর সাথে হারুনকে শরীক করে দিলেন। আর মূসার সন্তানদের বঞ্চিত করে পৌরোহিত্যের দায়িত্ব সন্তানদের দিয়ে দিলেন-এগুলোই হচ্ছে প্রাচীন কিতাব এবং নির্লজ্জ লোকেরা এগুলো সম্পর্কে বলে থাকে যে, কুরআনের এ কাহিনীগুলো নাকি এসব কিতাব থেকে নকল করা হয়েছে।
২০.
হযরত মুসা কিভাবে ফেরাউনের কাছে পৌঁছলেন এবং কিভাবে তার সামনে নিজের দাওয়াত পেশ করলেন এসব বিস্তারিত বিবরণ এখানে পরিহার করা হয়েছে। সূরা আ'রাফের ১৩ রুকূ’তে) এক আলোচনা এসেছে। আর সামনের দিকে সূরা শু’আরার ২-৩, সূরা কাসাসের ১৪ এবং সূরা নাযিআতের ১ রুকূ’তে) এ আলোচনা করা হয়েছে।

ফেরাউন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যাদির জন্য তাফহীমুল কুরআন, সূরা আ’রাফের ৮৫ টীকা দেখুন।

২১.
দুই ভাইয়ের মধ্যে যেহেতু মূল নবী ছিলেন হযরত মূসা (আ) এবং দাওয়াত দানের তিনিই ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব তাই ফেরাউন তাঁকেই সম্বোধন করে। আর হতে পারে তাঁকে সম্বোধন করার তার আর একটি কারণও থাকতে পারে। অর্থাৎ তার উদ্দেশ্য এও হতে পারে যে, সে হযরত হারুনের বাকপটুতা ও উন্নত বাগ্মীতার মুখোমুখি হতে চাচ্ছিল না এবং বাগ্মীতার ক্ষেত্রে হযরত মূসার দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করতে চাচ্ছিল। ইতিপূর্বে এ আলোচনা করা হয়েছে।

ফেরাউনের এ প্রশ্নের উদ্দেশ্য ছিল, তোমরা দু’জন আবার কাকে রব বানিয়ে নিয়েছো, মিসর ও মিসরবাসীদের রব তো আমিই। সূরা নাযিআতে তার এ উক্তি উদ্ধৃত করা হয়েছে যে, أَنَا رَبُّكُمُ الْأَعْلَى হে মিসর বাসীরা! আমি তোমাদের প্রধানতম রব। সূরা যুখরুফে সে দরবারের সমস্ত লোকদের সম্বোধন করে বলেঃ

يَا قَوْمِ أَلَيْسَ لِي مُلْكُ مِصْرَ وَهَذِهِ الْأَنْهَارُ تَجْرِي مِنْ تَحْتِي

“হে আমার জাতি! মিসরের রাজত্বের মালিক কি আমি নই? আর এ নদীগুলো কি আমার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে না? ” (৫১ আয়াত) সূরা কাসাসে সে নিজের সভাসদদের সামনে এভাবে হুংকার দিয়ে বলেঃ

يَا أَيُّهَا الْمَلَأُ مَا عَلِمْتُ لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرِي فَأَوْقِدْ لِي يَا هَامَانُ عَلَى الطِّينِ فَاجْعَلْ لِي صَرْحًا لَعَلِّي أَطَّلِعُ إِلَى إِلَهِ مُوسَى

“হে জাতির সরদারগণ! আমি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না। হে হামান! কিছু ইট পোড়াও এবং আমার জন্য এটি উঁচু ইমারত নির্মাণ করো। আমি উপরে উঠে একবার দেখি তো এই মূসা কাকে আল্লাহ‌ বানাচ্ছে।” (৩৮ আয়াত)

সূরা শূ’আরায় সে হযরত মূসাকে ধমক দিয়ে বলেঃ

لَئِنِ اتَّخَذْتَ إِلَهًا غَيْرِي لَأَجْعَلَنَّكَ مِنَ الْمَسْجُونِينَ

“যদি আমাকে ছাড়া আর কাউকে ইলাহ বানিয়েছো তাহলে মনে রেখো, তোমাকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেবো।” (২৯ আয়াত)

এর অর্থ এ নয় যে, ফেরাউন তার জাতির একমাত্র মাবুদ ছিল এবং সেখানে তার ছাড়া আর করো পূজা হতো না। এ কথা আগেই বলা হয়েছে যে, ফেরাউন নিজেকে সূর্য দেবতার (র’ বা রা’) আতার হিসেবে বাদশাহের দাবীদার বলতো। তাছাড়া মিসরের ইতিহাস থেকে একথা প্রমাণিত যে, বহু দেবী ও দেবতার পূজা_উপাসনা করা ছিল এ জাতির ধর্ম। তাই “একমাত্র পূজনীয়” হবার দাবী ফেরাউনের ছিল না। বরং সে কার্যত মিসরের এবং আদর্শগতভাবে সমগ্র মানব জাতির রাজনৈতিক প্রভুত্ব ও সার্বভৌমত্বের দাবীদার ছিল। সে একথা মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না যে, অন্য কোন সত্তা তার ওপর কর্তৃত্ব করবে, তার প্রতিনিধি এসে তাকে হুকুম দেবে এবং তার কাছে এ হুকুমের আনুগত্য করার দাবী জানাবে। তার আত্মগর্ব ও ঔদ্ধত্যের কারণে কোন কোন লোকের ধারণা হয়েছে, সে আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করতো এবং নিজে ইলাহ ও উপাস্য হবার দাবীদার ছিল। কিন্তু একথা কুরআন থেকে প্রমাণিত যে, সে উর্ধ্ব জগতে অন্য কারো শাসন কর্তৃত্ব স্বীকার করতো। সূরা আল মু’মিন ২৮-৩৪ এবং সূরা যুখরুফ ৫৩ আয়াত গভীর মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এ আয়াতগুলো একতা প্রমাণ করছে যে, আল্লাহ‌ ও ফেরেশতাদের অস্তিত্ব সে অস্বীকার করতো না। তবে তার রাজনৈতিক প্রভুত্বে কেউ হস্তক্ষেপ করবে এবং আল্লাহর কোন রসূল এসে তার ওপর হুকুম চালাবে, এটা মেনে নিতে সে প্রস্তুত ছিল না। (অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল কাসাস, ৫৩ টীকা)

২২.
অর্থাৎ আমরা সকল অর্থে একমাত্র তাঁকেই রব মানি। প্রতিপালক, প্রভু, মালিক, শাসক ইত্যাকার সকল অর্থেই আমরা তাঁকে ছাড়া আর কাউকেও রব বলে স্বীকার করি না।
২৩.
অর্থাৎ দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিস তাঁরই নির্মাণ কৌশলে নির্মিত হয়েছে। প্রত্যেকটি জিনিসকে তিনিই আকার-আকৃতি, পঠনশৈলী, শক্তি, যোগ্যতা, গুণ ও বিশেষত্ব দান করেছেন। দুনিয়ায় কাজ করার জন্য হাতের যে গঠনাকৃতির প্রয়োজন ছিল তা তিনি তাকে দিয়েছেন। পায়ের জন্য যে সর্বাধিক উপযুক্ত গঠনাকৃতির দরকার তা তাকে দিয়েছেন। মানুষ, পশু, উদ্ভিদ, জড় পদার্থ, বাতাস, পানি, আলো, প্রত্যেককে তিনি এমন বিশেষ আকৃতি দান করেছেন যা এ বিশ্ব-জাহানে তার নিজের অংশের কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন ছিল।

তারপর তিনি প্রত্যেক জিনিসকে কেবল তার বিশেষ আকৃতি দান করেই এমনিভাবে ছেড়ে দেননি। বরং তিনিই সবাইকে পথও দেখিয়েছেন। দুনিয়ায় এমন কোন জিনিস নেই যাকে তিনি নিজের গঠনাকৃতিকে কাজে লাগাবার এবং নিজের সৃষ্টির উদ্দেশ্য পূর্ণ করার পদ্ধতি শেখাননি। কানকে শুনা ও চোখকে দেখা তিনিই শিখিয়েছেন। মাছকে সাঁতার কাটার ও পাখিকে উড়ার শিক্ষা তিনিই দিয়েছেন। গাছকে ফুল ও ফল দেবার ও মাটিকে উদ্ভিদ উৎপাদন করার নির্দেশ তিনিই দিয়েছেন। মোট কথা তিনি সারা বিশ্ব-জাহান এবং তার সমস্ত জিনিসের শুধুমাত্র স্রষ্টাই নন বরং তাদের শিক্ষক ও পথ প্রদর্শকও।

এ অতুলনীয় ব্যাপক অর্থ বহুল ও সংক্ষিপ্ত বাক্যে হযরত মুসা আলাইহিস সালাম শুধু একথাই বলেননি যে, তাঁর রব কে? বরং একথাও বলে দিয়েছেন যে, তিনি রব কেন এবং কেন তাঁকে ছাড়া আর কাউকে রব বলে মেনে নেয়া যেতে পারে না। দাবীর সাথে সাথে তার যুক্তি-প্রমাণও এই ছোট্ট বাক্যটির মধ্যে এসে গেছে। একথা সুস্পষ্ট যে, যখন ফেরাউন ও তার প্রত্যেকটি প্রজা তার নিজের বিশেষ অস্তিত্বের জন্য আল্লাহর অনুগৃহীত এবং যখন তাদের এক জনেরও শ্বাসযন্ত্র, পাকস্থলী ও হৃদযন্ত্র আল্লাহ‌ প্রদত্ত নির্দেশ অনুসারে নিজের কাজ করে না যাওয়া পর্যন্ত সে এক মুহূর্তের জন্যও জীবিত থাকতে পারে না তখন ফেরাউনের নিজেকে লোকদের রব বলে দাবী করা এবং লোকদের কার্যত তাকে নিজেদের রব বলে মেনে নেয়া একটা নির্বুদ্ধিতা ও বিদ্রূপ ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।

আবার এ ছোট্ট বাক্যে হযরত মূসা (আ) ইশারায় রিসালাতের যুক্তিও পেশ করে দিয়েছেন। ফেরাউন এই রিসালাত মেনে নিতে অস্বীকার করছিল। হযরত মূসার যুক্তির মধ্য এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আল্লাহ‌ যিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহানের পথনির্দেশক এবং যিনি প্রত্যেকটি বস্তুকে তার অবস্থা ও প্রয়োজন অনুসারে পথ নির্দেশনা দিচ্ছেন, তাঁর পথ নির্দেশনা দেবার বিশ্বজনীন দায়িত্বের অপরিহার্য দাবী হচ্ছে এই যে, তিনি মানুষের সচেতন জীবনের জন্যও পথ নির্দেশনা দেবার ব্যবস্থা করবেন। আর মাছ ও মুরগীর জন্য যে ধরনের পথ নির্দেশনা উপযোগী, মানুষের সচেতন জীবনের জন্য সে ধরনের পথ নির্দেশনা উপযোগী হতে পারে না। এর সবচেয়ে মানানসই পদ্ধতি হচ্ছে এই যে, একজন সচেতন মানুষ তাঁর পক্ষ থেকে মানুষদের পথ দেখাবার জন্য নিযুক্ত হবেন এবং তিনি মানুষদের বুদ্ধি ও চেতনার প্রতি আবেদন জানিয়ে তাদেরকে সঠিক-সোজা পথ দেখাবেন।

অনুবাদ: