ত্বাহা

১৩৫ আয়াত

بِسْمِ ٱللّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
আয়াত
-
১৩১ ) আর চোখ তুলেও তাকাবে না দুনিয়াবী জীবনের শান-শওকতের দিকে, যা আমি এদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকদেরকে দিয়ে রেখেছি। এসব তো আমি এদেরকে পরীক্ষার মুখোমুখি করার জন্য দিয়েছি এবং তোমার রবের দেয়া হালাল রিযিকই ১১৩ উত্তম ও অধিকতর স্থায়ী।
وَلَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعْنَا بِهِۦٓ أَزْوَٰجًا مِّنْهُمْ زَهْرَةَ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ ١٣١
১৩২ ) নিজের পরিবার পরিজনকে নামায পড়ার হুকুম দাও ১১৪ এবং নিজেও তা নিয়মিত পালন করতে থাকো। আমি তোমার কাছে কোন রিযিক চাই না, রিযিক তো আমিই তোমাকে দিচ্ছি এবং শুভ পরিণাম তাকওয়ার জন্যই। ১১৫
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْـَٔلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَٱلْعَٰقِبَةُ لِلتَّقْوَىٰ ١٣٢
১৩৩ ) তারা বলে, এ ব্যক্তি নিজের রবের পক্ষ থেকে কোন নিশানী (মুজিযা) আনে না কেন? আর এদের কাছে কি আগের সহীফাগুলোর সমস্ত শিক্ষার সুস্পষ্ট বর্ণনা এসে যায়নি? ১১৬
وَقَالُوا۟ لَوْلَا يَأْتِينَا بِـَٔايَةٍ مِّن رَّبِّهِۦٓ أَوَلَمْ تَأْتِهِم بَيِّنَةُ مَا فِى ٱلصُّحُفِ ٱلْأُولَىٰ ١٣٣
১৩৪ ) যদি আমি তার আসার আগে এদেরকে কোন আযাব দিয়ে ধ্বংস করে দিতাম তাহলে আবার এরাই বলতো, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের কাছে কোন রসূল পাঠাওনি কেন, যাতে আমরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবার আগেই তোমার আয়াত মেনে চলতাম?
وَلَوْ أَنَّآ أَهْلَكْنَٰهُم بِعَذَابٍ مِّن قَبْلِهِۦ لَقَالُوا۟ رَبَّنَا لَوْلَآ أَرْسَلْتَ إِلَيْنَا رَسُولًا فَنَتَّبِعَ ءَايَٰتِكَ مِن قَبْلِ أَن نَّذِلَّ وَنَخْزَىٰ ١٣٤
১৩৫ ) হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, সবাই কাজের পরিণামের প্রতীক্ষায় রয়েছে। ১১৭ কাজেই এখন প্রতীক্ষারত থাকো। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে, কারো সোজা-সঠিক পথ অবলম্বনকারী এবং কারা সৎপথ পেয়ে গেছে।
قُلْ كُلٌّ مُّتَرَبِّصٌ فَتَرَبَّصُوا۟ فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ أَصْحَٰبُ ٱلصِّرَٰطِ ٱلسَّوِىِّ وَمَنِ ٱهْتَدَىٰ ١٣٥
১১৩.
“রিযক” শব্দের অনুবাদ আমি করেছি “হালাল রিযিক।” এর কারণ মহান আল্লাহ‌ কোথাও হারাম সম্পদকে “রবের রিযিক” হিসেবে পেশ করেননি। এর অর্থ হচ্ছে, এ ফাসেক ও দুশ্চরিত্র লোকেরা অবৈধ পথে টাকা-পয়সা সংগ্রহ করে নিজেদের জীবনে যে বাহ্যিক চমক সৃষ্টি করে নেয় তোমার ও তোমার মু’মিন সাথীদের তাকে ঈর্ষার দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়। এ ধন-দৌলত ও শান শওকত তোমাদের জন্য মোটেও ঈর্ষনীয় নয়। তোমরা নিজেরা পরিশ্রম করে যে পাক-পবিত্র রিযিক উপার্জন করো তা যতই সামান্য হোক না কেন সত্যনিষ্ঠ ও ঈমানদার লোকদের জন্য তাই ভালো এবং তার মধ্যে এমন কল্যাণ রয়েছে যা দুনিয়া থেকে আখেরাত পর্যন্ত বজায় থাকবে।
১১৪.
অর্থাৎ তোমাদের সন্তানরা যেন নিজেদের অভাব অনটন ও দুরবস্থায় মোকাবিলায় এ হারামখোরদের ভোগ বিলাসিতা দেখে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে। তাদেরকে নামায পড়ার আদেশ দাও। এ জিনিসটি তাদের দৃষ্টিভংগীতে পরিবর্তন ঘটাবে তাদের মূল্যবোধ বদলে দেবে। তাদের আগ্রহ ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন করে দেবে। তারা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রিযিকের ওপর সবর করবে এবং তাতে পরিতুষ্ট হবে ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে যে কল্যাণ অর্জিত হয় তাকে তারা এমন ভোগের ওপর অগ্রাধিকার দিতে থাকবে, যা ফাসেকী, দুশ্চরিত্রতা ও পার্থিব লোভ লালসা থেকে অর্জিত হয়।
১১৫.
আমার কোন লাভের জন্য আমি তোমাদের নামায পড়তে বলছি না। বরং এতে লাভ তোমাদের নিজেদেরই। সেটি হচ্ছে এই যে, তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হবে। আর এটিই দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে স্থায়ী ও শেষ সাফল্যের মাধ্যম।
১১৬.
অর্থাৎ এটা কি কোন ছোটখাটো মু’জিযা যে, তাদের মধ্য থেকে এক নিরক্ষর ব্যক্তি এমন একটি কিতাব পেশ করেছেন, যাতে শুরু থেকে নিয়ে এ পর্যন্তকার সমস্ত আসমানী কিতাবের বিষয়বস্তু ও শিক্ষাবলীর নির্যাস বের করে রেখে দেয়া হয়েছে? মানুষের পথ নির্দেশনার জন্য ঐ সমস্ত কিতাবের মধ্যে যা কিছু ছিল তা কেবলমাত্র তার মধ্যে একত্রই করা হয়নি বরং তা এমন উন্মুক্ত করে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে যে, একজন মরুচারী বেদুইনও তা অনুধাবন করে লাভবান হতে পারে।
১১৭.
অর্থাৎ যখন থেকে এ দাওয়াতটি তোমাদের শহরে পেশ করা হয়েছে তখন থেকে শুধুমাত্র এ শহরের নয় বরং আশেপাশে এলাকারও প্রতিটি লোক এর শেষ পরিণতি দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।
অনুবাদ: