১১ ) তাদের কাছে কোন রসূল এসেছে এবং তারা তাঁকে বিদ্রূপ করেনি, এমনটি কখনো হয়নি।
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ ١١
১২ ) এ বাণীকে অপরাধীদের অন্তরে আমি এভাবেই (লৌহ শলাকার মতো) প্রবেশ করাই।
كَذَٰلِكَ نَسْلُكُهُۥ فِى قُلُوبِ ٱلْمُجْرِمِينَ ١٢
১৩ ) তারা এর প্রতি ঈমান আনে না। ৭ এ ধরনের লোকদের এ রীতি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।
لَا يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۖ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ ٱلْأَوَّلِينَ ١٣
১৪ ) যদি আমি তাদের সামনে আকাশের কোন দরজা খুলে দিতাম এবং তারা দিন দুপুরে তাতে আরোহণও করতে থাকতো
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًۭا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فَظَلُّوا۟ فِيهِ يَعْرُجُونَ ١٤
১৫ ) তবুও তারা একথাই বলতো, আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম হচ্ছে বরং আমাদের ওপর যাদু করা হয়েছে।
لَقَالُوٓا۟ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَـٰرُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌۭ مَّسْحُورُونَ ١٥
১৬ ) আকাশে আমি অনেক মজবুত দূর্গ নির্মাণ করেছি, ৮ দর্শকদের জন্য সেগুলো সুসজ্জিত করেছি, ৯
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًۭا وَزَيَّنَّـٰهَا لِلنَّـٰظِرِينَ ١٦
১৭ ) এবং প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান থেকে সেগুলোকে সংরক্ষণ করেছি। ১০ কোন শয়তান সেখানে অনুপ্রবেশ করতে পারে না,
وَحَفِظْنَـٰهَا مِن كُلِّ شَيْطَـٰنٍۢ رَّجِيمٍ ١٧
১৮ ) তবে আড়ি পেতে বা চুরি করে কিছু শুনতে পারে। ১১ আর যখন সে চুরি করে শোনার চেষ্টা করে তখন একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তাকে ধাওয়া করে। ১২
إِلَّا مَنِ ٱسْتَرَقَ ٱلسَّمْعَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌۭ مُّبِينٌۭ ١٨
১৯ ) পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি, তার মধ্যে পাহাড় স্থাপন করেছি, সকল প্রজাতির উদ্ভিদ তার মধ্যে সুনির্দিষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন করেছি ১৩
وَٱلْأَرْضَ مَدَدْنَـٰهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَىْءٍۢ مَّوْزُونٍۢ ١٩
২০ ) এবং তার মধ্যে জীবিকার উপকরণাদি সরবরাহ করেছি তোমাদের জন্যও এবং এমন বহু সৃষ্টির জন্যও যাদের আহারদাতা তোমরা নও।
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَـٰيِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُۥ بِرَٰزِقِينَ ٢٠
৭.
সাধারণত অনুবাদক ও তাফসীরকারগণ
نَسْلُكُهُ (আমি তাকে প্রবেশ করাই বা চালাই) এর মধ্যকার সর্বনামটিকে
يَسْتَهْزِئُونَ (বিদ্রূপ) এর সাথে এবং
لَا يُؤْمِنُونَ بِهِ (তারা এর প্রতি ঈমান আনে না) এর মধ্যকার সর্বনামটিকে
ذكر এর সাথে সংযুক্ত করেছেন। তারা এর অর্থ এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ “আমি এভাবে এ বিদ্রূপকে অপরাধীদের অন্তরে প্রবেশ করিয়ে দেই এবং তারা এ বাণীর প্রতি ঈমান আনে না।” যদিও ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী এতে কোন ত্রুটি নেই, তবুও ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী উভয় সর্বনামই “যিকির” বা বাণীর সাথে সংযুক্ত হওয়াই আমার কাছে বেশী নির্ভুল বলে মনে হয়।
আরবী ভাষায় سَلَكَ শব্দের অর্থ হচ্ছে কোন জিনিসকে অন্য জিনিসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া, অনুপ্রবেশ করানো, চালিয়ে দেয়া বা গলিয়ে দেয়া। যেমন সুঁইয়ের ছিদ্রে সূতো গলিয়ে দেয়া হয়। কাজেই এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে, ঈমানদারদের মধ্যে তো এই “বাণী” হৃদয়ের শীতলতা ও আত্মার খাদ্য হয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু অপরাধীদের অন্তরে তা বারুদের মত আঘাত করে এবং তা শুনে তাদের মনে এমন আগুন জ্বলে ওঠে যেন মনে হয় একটি গরম শলাকা তাদের বুকে বিদ্ধ হয়ে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে।
৮.
আরবী ভাষায় দূর্গ, প্রাসাদ ও মজবুত ইমারতকে বুরুজ বলা হয়। প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যের পরিভ্রমণ পথকে যে বারটি স্তরে বা রাশিচক্রে বিভক্ত করা হয়েছিল ‘বুরুজ’ শব্দটিকে পারিভাষিক অর্থে সেই বারটি স্তরের জন্য ব্যবহার করা হতো। এ কারণে কুরআন ঐ বুরুজগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেছে বলে কোন কোন মুফাস্সির মনে করেছেন। আবার কোন কোন মুফাস্সির এটিকে গ্রহ অর্থে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু পরবর্তী বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে মনে হবে, এর অর্থ সম্ভবত উর্ধ্বজগতের এমন সব অংশ যার মধ্যকার প্রত্যেকটি অংশকে অত্যন্ত শক্তিশালী সীমান্ত অন্যান্য অংশ থেকে আলাদা করে রেখেছে। যদিও এ সীমান্তরেখা মহাশূন্যে অদৃশ্যভাবে অঙ্কিত হয়ে আছে তবুও সেগুলো অতিক্রম করে কোন জিনিসের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাওয়া খুবই কঠিন। এ অর্থের প্রেক্ষিতে আমি বুরুজ শব্দটিকে সংরক্ষিত অঞ্চলসমূহ (Fortified spheres) অর্থে গ্রহণ করা অধিকতর নির্ভুল বলে মনে করি।
৯.
অর্থাৎ প্রত্যেক অঞ্চলে কোন না কোন উজ্জ্বল গ্রহ বা তারকা রেখে দিয়েছেন এবং এভাবে সমগ্র জগত ঝলমলিয়ে উঠেছে। অন্যকথায়, আমি দৃশ্যত কুলকিনারাহীন এ বিশ্ব জগতকে একটি বিশাল পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি বানিয়ে রেখে দেইনি। বরং তাকে এমন একটি সুন্দর সুসজ্জিত জগৎ বানিয়ে রেখেছি যার মধ্যে সর্বত্র সবদিকে নয়নাভিরাম দীপ্তি ছাড়িয়ে রয়েছে। এ শিল্পকর্মে শুধুমাত্র একজন মহান কারিগরের অতুলনীয় শিল্প নৈপুণ্য এবং একজন মহাবিজ্ঞানীর অনুপম বৈজ্ঞানিক কুশলতাই দৃষ্টিগোচর হয় না বরং এই সঙ্গে একজন অতীব পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রুচির অধিকারী শিল্পীর শিল্পও সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ বিষয়বস্তুটিই অন্য এক স্থানে এভাবে বলা হয়েছেঃ الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ (আল্লাহ, যে জিনিসই বানিয়েছেন, চমৎকার বানিয়েছেন।) আস-সাজদাহঃ ৭
১০.
অর্থাৎ পৃথিবীর অন্যান্য সৃষ্টি যেমন পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বন্দী হয়ে রয়েছে, ঠিক তেমনি জিন বংশোদ্ভূত শয়তানরাও এ অঞ্চলে বন্দী হয়ে রয়েছে। উর্ধ্বজগতে পৌঁছবার ক্ষমতা তাদের নেই। এর মাধ্যমে মূলত লোকদের একটি বহুল প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করাই উদ্দেশ্য। সাধারণ মানুষ এ বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিল এবং আজও আছে। তারা মনে করে, শয়তান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের জন্য সারা বিশ্ব-জাহানের দরজা খোলা আছে, যত দূর ইচ্ছা তারা যেতে পারে। কুরআন এর জবাবে বলছে, শয়তানরা একটি বিশেষ সীমানা পর্যন্তই যেতে পারে, তার ওপরে আর যেতে পারে না। তাদেরকে কখনোই সীমাহীন উড্ডয়নের ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
১১.
অর্থাৎ যেসব শয়তান তাদের বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষকদেরকে গায়েবের খবর এনে দেবার চেষ্টা করে থাকে, যাদের সাহায্যে অনেক জ্যোতিষী, গণক ও ফকির--- বেশী বহুরূপী অদৃশ্য জ্ঞানের ভড়ং দেখিয়ে থাকে, গায়েবের খবর জানার কোন একটি উপায়-উপকরণও আসলে তাদের আয়ত্বে নেই। তারা চুরি-চামারি করে কিছু শুনে নেবার চেষ্টা অবশ্যি করে থাকে। কারণ তাদের গঠনাকৃতি মানুষের তুলনায় ফেরেশতাদের কিছুটা কাছাকাছি কিন্তু আসলে তাদের কপালে শিকে ছেঁড়ে না।
১২.
شِهَابٌ مُبِينٌ এর আভিধানিক অর্থ উজ্জ্বল আগুনের শিখা। কুরআনের অন্য জায়গায় এজন্য
شِهَابٌ ثَاقِبٌ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, অন্ধকার বিদীর্ণকারী অগ্নি-স্ফুলিংগ। এর মানে যে, আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত জ্বলন্ত নক্ষত্র হতে হবে, যাকে আমাদের পরিভাষায় “উল্কাপিণ্ড” বলা হয়, তেমন কোন কথা নেই। এটা হয়তো অন্য কোন ধরনের রশ্মি হতে পারে। যেমন মহাজাগতিক রশ্মি (Cosmic Rays) অথবা এর চেয়েও তীব্র ধরনের অন্য কিছু, যা এখনো আমাদের জ্ঞানের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। আবার এ উল্কাপিণ্ডও হতে পারে, যাকে আমরা মাঝে মধ্যে আকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে দেখি। বর্তমানকালের পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়, দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর দিকে যেসব উল্কা ছুটে আসতে দেখা যায় তার সংখ্যা হবে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি। এর মধ্যে থেকে প্রায় ২ কোটি প্রতিদিন পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ এলাকার মধ্যে প্রবেশ করে পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয়। তার মধ্য থেকে কোন রকমে একটা ভু-পৃষ্ঠে পৌঁছে। মহাশূন্যে এদের গতি হয় কমবেশী প্রতি সেকেণ্ডে ২৬ মাইল এবং কখনো তা প্রতি সেকেণ্ডে ৫০ মাইলেও পৌঁছে যায়। অনেক সময় খালি চোখেও অস্বাভাবিক উল্কা বৃষ্টি দেখা যায়। পুরাতন রেকর্ড থেকে জানা যায়, ১৮৩৩ খৃস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর উত্তর আমেরিকার পূর্ব এলাকায় শুধুমাত্র একটি স্থানে মধ্য রাত্র থেকে প্রভাত পর্যন্ত ২ লক্ষ উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হতে দেখা গিয়েছিল। (ইনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ১৯৪৬, ১৫ খণ্ড, ৩৩৭-৩৯ পৃঃ) হয়তো এই উল্কা বৃষ্টিই উর্ধ্বজগতের দিকে শয়তানদের উড্ডয়নের পথে বাধার সৃষ্টি করে। কারণ পৃথিবীর উর্ধ্ব সীমানা পার হয়ে মহাশূন্যে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি উল্কাপাত তাদের জন্য মহাশূন্যের ঐ এলাকাকে সম্পূর্ণরূপে অনতিক্রম্য বানিয়ে দিয়ে থাকবে।
এখানে উপরে যে সংরক্ষিত দূর্গগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলোর ধরন সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে মহাশূন্য একেবারে পরিষ্কার। এর মধ্যে কোথাও কোন দেয়াল বা ছাদ দেখা যায় না। কিন্তু আল্লাহ এ মহাশূন্যের বিভিন্ন অংশকে এমন কিছু অদৃশ্য দেয়াল দিয়ে ঘিরে রেখেছেন যা এক অংশের বিপদ ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অন্য অংশকে সংরক্ষিত করে রাখে। এ দেয়ালগুলোর বদৌলতেই প্রতিদিন গড়ে যে এক লক্ষ কোটি উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তা সব পথেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং মাত্র একটি এসে পৃথিবী পৃষ্ঠে পড়তে সক্ষম হয়। পৃথিবীতে উল্কা পিণ্ডের যেসব নমুনা দুনিয়ার বিভিন্ন যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওজন ৬৪৫ পাউণ্ড। এ পাথরটি ওপর থেকে পড়ে মাটির মধ্যে ১১ ফুট গভীরে প্রোথিত হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও এক জায়গায় ৩৬.৫ টনের একটি লোহার স্তূপ পাওয়া গেছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে আকাশ থেকে এ লোহা নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এছাড়া সেখানে এর স্তূপাকার অস্তিত্বের কোন কারণই তারা খুঁজে পাননি। চিন্তা করুন, পৃথিবীর উর্ধ্ব সীমানাকে যদি মজবুত দেয়ালের মাধ্যমে সংরক্ষিত না করা হতো তাহলে এসব উল্কাপাতে পৃথিবীর কী অবস্থা হতো! এ দেয়ালগুলোকেই কুরআনে বুরুজ (সংরক্ষিত দূর্গ) বলা হয়েছে।
১৩.
এর মাধ্যমে আল্লাহর কুদরত, শক্তিমত্তা ও জ্ঞানের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। উদ্ভিদের প্রতিটি প্রজাতির মধ্যে বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা এত বেশী যে, তার যদি শুধু একটি মাত্র চারাকে দুনিয়ায় বংশবৃদ্ধির সুযোগ দেয়া হয় তাহলে কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবীর চতুর্দিকে শুধু তারই চারা দেখা যাবে, অন্য কোন উদ্ভিদের জন্য আর কোন জায়গা খালি থাকবে না। কিন্তু একজন মহাজ্ঞানী ও অসীম শক্তিধরের সুচিন্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ এ বিশ্ব চরাচরে উৎপন্ন হচ্ছে। প্রত্যেক প্রজাতির উৎপাদন একটি বিশেষ সীমায় পৌঁছে যাওয়ার পর থেমে যায়। এ প্রক্রিয়ার আর একটি দিক হচ্ছে, প্রত্যেক প্রজাতির উদ্ভিদের আয়তন, বিস্তৃতি, উচ্চতা ও বিকাশের একটি সীমা নির্ধারিত আছে। কোন উদ্ভিদ এ সীমা অতিক্রম করতে পারে না। পরিষ্কার জানা যায়, প্রতিটি বৃক্ষ, চারা ও লতাপাতার জন্য কেউ শরীর, উচ্চতা, আকৃতি, পাতা, ফুল, ফল ও উৎপাদনের একটি মাপাজোকা পরিমাণ পুরোপুরি হিসেব ও গণনা করে নির্ধারিত করে দিয়েছে।